ছবি সংগ্রহ
করোনার দ্রুত সংক্রামক ঘটানো ভ্যারিয়েন্ট ডেলটা। যা বাংলাদেশে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন দ্রুত বাড়ছে। সীমান্তবর্তী জেলাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক জেলায় সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সক্ষমতা কম। অনেক জেলায় আইসিইউ নেই। ডাক্তার-নার্স সংকট। সীমান্তবর্তী জেলাগুলো থেকে রোগীরা রাজধানীতে আসছে। এ কারণে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ঢাকায় দ্রুত বাড়ছে।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর এপর্যন্ত গবেষণায় ভাইরাসটির বিভিন্ন ধরণ শনাক্ত হয়েছে। যেগুলো দ্রুত সংক্রামক। এর মধ্যে ভারতে গত বছরের শেষ দিকে যে ধরনটি শনাক্ত হয়, যা দেশটিতে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে রেকর্ড সংক্রমণ ও মৃত্যু জন্য দায়ী করা হচ্ছে। বিশ্ব জুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করা ভাইরাসটিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বি.১.৬১৭ তথা ‘ডেলটা’ ভ্যারিয়েন্ট। সম্প্রতি ভারতে ‘ডেলটা প্লাস’ নামের শক্তিশালী ধরন শনাক্ত হয়েছে।
করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুঃখজনক উদাসীনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মাস্ক বিহীন চলাচল, শারীরীক দূরত্বের তোয়াক্কা না করে গাদাগাদি চলাচল বেড়েছে। ফলে করোনার সংক্রমণও দ্রুত ছড়াচ্ছে। যে হারে করোনার সংক্রমণ ঘটছে, সেই হারে চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল নানা দেশে। হফাৎ একটা অপরিচিত ভাইরাসের এমনি অপ্রস্তুত অবস্থায় মানুষকে আক্রান্ত করে চলেছে, যা গবেষকদেরও ভাবিয়ে তুলছে। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধির মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ সংবাদমাধ্যমে বার বার মানুষকে সচেতনতার কথাটি জোর গলায় উচ্চারণ করে চলেছেন। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ঢাকায় সংক্রমণ বাড়ার কথা জানিয়ে এই চিকিৎষক জানালেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কিছু করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি পালনে প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। এখন সকলের দায়িত্ব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, ঢাকায় রোগী বাড়ছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে দুইটি পথ, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে আর টিকা দিতে হবে। বর্তমানে যে অবস্থা তাতে স্বাস্থ্যবিধি মানাতেই হবে। নইলে সামনে ভয়াবহ অবস্থা পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে।
করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ বাড়ছে। তারপরও সীমান্তবর্তী জেলায় লকডাউন কার্যকর হয় না। মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানে না। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানালেন, গত ১০ দিন ধরে হাসপাতালে করোনা রোগী বাড়ছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট ও ডিএনসিসি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালেও প্রতিদিন করোনা রোগী বেড়ে চলেছে।