ছবি সংগ্রহ
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
চীনের জিনজিয়াংয়ের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী উইঘুর সংস্কৃতি গবেষণা এবং বিদেশি ভাষা শিক্ষায় নিয়োজিত ১৬০টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে চীনা প্রশাসন। রেডিও ফ্রি এশিয়ার বরাতে এই খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএনআই।
অপর এক সংবাদে অভিযোগ আনা হয়েছে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির একটি গোপন সংগঠন দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) নজরদারি চালিয়ে যাবার একটি গোপন রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। প্রতিবেদনটির মধ্য দিয়ে জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীন সরকারের দমন-পীড়নের চিত্র আরও স্পষ্ট হয়েছে এমন তথ্য জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।
এছাড়াও গণহত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে চীনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে দেশটির সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর ১৯ ব্যক্তি। মঙ্গলবার তুরস্কের প্রসিকিউটরের কাছে ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেন তারা।
পরপর এমনি বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক ঘটনার পর ফের চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ৪৭টি দেশ। নির্যাতন নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশে জাতিসংঘ ঢিলেমি করছে বলেও জানায় তারা।
মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে চীনের ওপর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি আরও গভীরভাবে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার আহ্বান জানানো হয়। তবে ৪৭ দেশের এমন বিবৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়ে চীনকে অস্থিতিশীল করতে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে বেইজিং।
দীর্ঘদিন ধরেই চীনের বিরুদ্ধে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করে আসছে বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার সংস্থা। এমনকি বিভিন্ন সময় নিপীড়নের নানা তথ্যপ্রমাণও সামনে উঠে আসে। সংখ্যালঘু এই সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে এবার একযোগে উদ্বেগ জানাল বিশ্বের ৪৭টি দেশ।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে এক যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলোর প্রতিনিধিরা জানান, চীন শিনজিয়াংয়ে অন্তত ১০ লাখ উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুকে অবৈধভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে তাদের ওপর অমানবিক আচরণ, শাস্তি প্রদান, জোরপূর্বক বন্ধ্যত্বকরণ এবং শিশুদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে আলাদা করার তথ্যপ্রমাণও রয়েছে। চীন প্রদেশটিতে বিভিন্ন ক্যাম্প থাকার কথা স্বীকার করলেও সেগুলোতে উইঘুর সম্প্রদায়ের মানুষকে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় বলে বারবার দাবি করে আসছে।
নির্যাতন-নিপীড়নের বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশে জাতিসংঘ অনেক দেরি করায় এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়াসহ ৪৭ দেশ। বিবৃতিতে, চীনের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ শিনজিয়াংয়ের পুরো পরিস্থিতি আরও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করা হয়। সে ক্ষেত্রে জাতিসংঘের তদন্তকারী ও বিশেষজ্ঞদের সেখানে অবাধে প্রবেশের সুযোগ দেয়ার পাশাপাশি তাদের সহায়তায় চীনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে, ৪৭ দেশের নানা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বেইজিং। তাদের বিবৃতিকে উদ্ভট উল্লেখ করে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, তাদের দেশকে রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল করতেই এ ধরনের মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে।