ঢাকা ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফের ৭দিনের লকডাউনের সুপারিশ জাতীয় কমিটির

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৪৮:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১ ৬৬৫ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাম্প্রতিককালে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। নমুনা সংগ্রহ সহজ রোগীদের হাতের নাগালের মধ্যে আনতে  শহর অঞ্চলে প্রতি ওয়ার্ডে নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট দ্রুত  প্রদান এবং নমুনা সংগ্রহের বুথে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। সরকারীভাবে বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পিসিআর টেস্ট কিটের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে হওয়ায় বেসরকারী পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষার মূল্য পূণনির্ধারণের পরামর্শ দেয়া হয়।  এতে সাশ্রয়ীমূল্যে পরীক্ষার সুযোগ পাবে সাধারণ মানুষ। চাপ কমবে সরকারী ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা রিপোর্ট দ্রুত প্রদান করে আইসোলেশন নিশ্চিত করা যাবে। যা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চলমান লকডাউন আরও ৭দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে, কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। শনিবার রাতে ৩১তম বৈঠক শেষে এই সুপারিশ আসলো। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লার সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ালি বৈঠকে কমিটির সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে বিস্তারিত আলোচনার পর লকডাউন আরও একসপ্তাহ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।

দেশজুড়ে কোভিড’র উচ্চ সংক্রমণ ও ক্রমবর্ধমান মৃত্যুতে বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন সুপারিশের প্রেক্ষিতে ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লকডাউনের পথে হাটে বাংলাদেশ। যদিও বৈজ্ঞানিক ভাবে দুই সপ্তাহের কম লকডাউনে কার্যকর ফলাফল আশা করা যায়না।

এ অবস্থায় ফের সাতদিনের লকডাউন শেষ হওয়ার আগে সংক্রমণের হার বিবেচনা করে আবার সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। ধীরে ধীরে লকডাউন শেষ করার পূর্ব পরিকল্পনা (exit plan) প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। রোগী ভর্তির বাড়তি চাপ থাকায় অতি দ্রুত সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থা গ্রহণের উপরও জোর দেয় কমিটি।

 

দেশের অর্থনীতি সচল রাখার স্বার্থে শিল্প-কলকারখানা খোলা রাখার বিষয়টি কমিটি উপলব্ধি করে। তবে, বেসরকারী দপ্তর, ব্যাংক খোলা রাখা, ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যক্তিগত গাড়ী চলাচল, ইফতার বাজারে অনাকাঙ্খিত ও অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ভিড় লকডাউনের সাফল্যকে অনিশ্চিত করে। পাশাপাশি সভা সামাজিক সমতার বিষয়েও নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তকমিটি।

স্বাস্থ্য, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য জরুরী সেবা ছাড়া সব কিছু বন্ধ রাখার পরামর্শ আসে কমিটির তরফে। চলমান লক ডাউন এ চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ডিউটির জন্য চলাচলে বাধা ও অনাকাঙ্খিত ঘটনার কথা উল্লেখ এবং উন্মুক্ত স্থানে কাঁচা বাজার বসানোর প্রস্তাব করা হয়।

করোনা রোগী দ্রুত সনাক্ত ও সংক্রমণ প্রতিরোধ গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারী ল্যাবরেটরীর সক্ষমতা বাড়াতে হবে।  নমুনা সংগ্রহ সহজ ও রোগীদের হাতের নাগালে  আনাতে  শহরের প্রতি ওয়ার্ডে নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট দ্রুত  প্রদান এবং নমুনা সংগ্রহের বুথে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।

সরকারীভাবে বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দিয়ে কমিটি বলছে,  পিসিআর টেস্ট কিটের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে হওয়ায় বেসরকারী পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষার মূল্য পূণঃনির্ধারণ প্রয়োজন।   এতে  পরীক্ষার সংখ্যা বাড়বে।  সাশ্রয়ীমূল্যে পরীক্ষার সুযোগ পাবে সাধারণ মানুষ।  সরকারী ল্যাবরেটরীতে চাপ কমবে। পরীক্ষা ও রিপোর্ট দ্রুত প্রদান করে আইসোলেশন নিশ্চিত করা যাবে। যা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারী/বেসরকারী সকল হাসপাতাল, ক্লিনিকে গর্ভবতী করোনা/নন করোনা মা’দের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিন্তে করার পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় কমিটি। করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে অবশ্যই গর্ভবতী মা’দের সেবার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। নতুন ডিএনসিসি হাসপাতালে গর্ভবতী মা’দের একটা কর্ণার ও বিশেষায়িত (আইসিইউ) ব্যবস্থা নিশ্চিত করারও পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।

প্রতিটি হাসপাতাল তার নিজস্ব সক্ষমতা অনুযায়ী চেইন অফ রেফারেন্স সিস্টেম মেনে চলা এবং মৃদু করোনা রোগীদের বাড়ীতে রেখে চিকিৎসা নিশ্চিতে মানসম্মত টেলিমেডিসিন সেবা নিশ্চিত করতে মনিটরিং জোরদারের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় কমিটি।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লার স্বক্ষরিক সংবাদ বার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ফের ৭দিনের লকডাউনের সুপারিশ জাতীয় কমিটির

আপডেট সময় : ১২:৪৮:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১

সাম্প্রতিককালে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। নমুনা সংগ্রহ সহজ রোগীদের হাতের নাগালের মধ্যে আনতে  শহর অঞ্চলে প্রতি ওয়ার্ডে নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট দ্রুত  প্রদান এবং নমুনা সংগ্রহের বুথে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। সরকারীভাবে বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পিসিআর টেস্ট কিটের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে হওয়ায় বেসরকারী পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষার মূল্য পূণনির্ধারণের পরামর্শ দেয়া হয়।  এতে সাশ্রয়ীমূল্যে পরীক্ষার সুযোগ পাবে সাধারণ মানুষ। চাপ কমবে সরকারী ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা রিপোর্ট দ্রুত প্রদান করে আইসোলেশন নিশ্চিত করা যাবে। যা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চলমান লকডাউন আরও ৭দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে, কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। শনিবার রাতে ৩১তম বৈঠক শেষে এই সুপারিশ আসলো। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লার সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ালি বৈঠকে কমিটির সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে বিস্তারিত আলোচনার পর লকডাউন আরও একসপ্তাহ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।

দেশজুড়ে কোভিড’র উচ্চ সংক্রমণ ও ক্রমবর্ধমান মৃত্যুতে বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন সুপারিশের প্রেক্ষিতে ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লকডাউনের পথে হাটে বাংলাদেশ। যদিও বৈজ্ঞানিক ভাবে দুই সপ্তাহের কম লকডাউনে কার্যকর ফলাফল আশা করা যায়না।

এ অবস্থায় ফের সাতদিনের লকডাউন শেষ হওয়ার আগে সংক্রমণের হার বিবেচনা করে আবার সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। ধীরে ধীরে লকডাউন শেষ করার পূর্ব পরিকল্পনা (exit plan) প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। রোগী ভর্তির বাড়তি চাপ থাকায় অতি দ্রুত সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থা গ্রহণের উপরও জোর দেয় কমিটি।

 

দেশের অর্থনীতি সচল রাখার স্বার্থে শিল্প-কলকারখানা খোলা রাখার বিষয়টি কমিটি উপলব্ধি করে। তবে, বেসরকারী দপ্তর, ব্যাংক খোলা রাখা, ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যক্তিগত গাড়ী চলাচল, ইফতার বাজারে অনাকাঙ্খিত ও অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ভিড় লকডাউনের সাফল্যকে অনিশ্চিত করে। পাশাপাশি সভা সামাজিক সমতার বিষয়েও নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তকমিটি।

স্বাস্থ্য, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য জরুরী সেবা ছাড়া সব কিছু বন্ধ রাখার পরামর্শ আসে কমিটির তরফে। চলমান লক ডাউন এ চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ডিউটির জন্য চলাচলে বাধা ও অনাকাঙ্খিত ঘটনার কথা উল্লেখ এবং উন্মুক্ত স্থানে কাঁচা বাজার বসানোর প্রস্তাব করা হয়।

করোনা রোগী দ্রুত সনাক্ত ও সংক্রমণ প্রতিরোধ গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারী ল্যাবরেটরীর সক্ষমতা বাড়াতে হবে।  নমুনা সংগ্রহ সহজ ও রোগীদের হাতের নাগালে  আনাতে  শহরের প্রতি ওয়ার্ডে নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট দ্রুত  প্রদান এবং নমুনা সংগ্রহের বুথে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।

সরকারীভাবে বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দিয়ে কমিটি বলছে,  পিসিআর টেস্ট কিটের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে হওয়ায় বেসরকারী পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষার মূল্য পূণঃনির্ধারণ প্রয়োজন।   এতে  পরীক্ষার সংখ্যা বাড়বে।  সাশ্রয়ীমূল্যে পরীক্ষার সুযোগ পাবে সাধারণ মানুষ।  সরকারী ল্যাবরেটরীতে চাপ কমবে। পরীক্ষা ও রিপোর্ট দ্রুত প্রদান করে আইসোলেশন নিশ্চিত করা যাবে। যা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারী/বেসরকারী সকল হাসপাতাল, ক্লিনিকে গর্ভবতী করোনা/নন করোনা মা’দের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিন্তে করার পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় কমিটি। করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে অবশ্যই গর্ভবতী মা’দের সেবার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। নতুন ডিএনসিসি হাসপাতালে গর্ভবতী মা’দের একটা কর্ণার ও বিশেষায়িত (আইসিইউ) ব্যবস্থা নিশ্চিত করারও পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।

প্রতিটি হাসপাতাল তার নিজস্ব সক্ষমতা অনুযায়ী চেইন অফ রেফারেন্স সিস্টেম মেনে চলা এবং মৃদু করোনা রোগীদের বাড়ীতে রেখে চিকিৎসা নিশ্চিতে মানসম্মত টেলিমেডিসিন সেবা নিশ্চিত করতে মনিটরিং জোরদারের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় কমিটি।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লার স্বক্ষরিক সংবাদ বার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।