ঢাকা ১২:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাঈদ সুফি’র এক গুচ্ছ কবিতা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:২৮:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুন ২০২১ ২১১ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এই আমি

পান করেছি অমিয় শুধা
জীবন নদীর অতলে ক্ষুদা!
শুধুই কি অপেক্ষা;
বাদল দিনে- একা একা।
ঝটিকা বাতাস বয়ে যায়
আমার একান্ত আঙ্গিনায়।
ইচ্ছেরা কস্টের দহনে মরে,
জলের প্রতিটি ফোটায় লেখা,
ক্ষতচিহ্ন – ওতো হৃদয় খাতা,
লিখতে লিখতে যায় বেলা,
তবু মিটেনা অভিনব জীব খেলা।
সেই যে বাঁশি বেজেছিল মনে,
এ প্রান্তের সুর ওপ্রান্তের কানে!
মুসল বৃস্টি কি তার বহনে জ্বলে,
মনের মধ্যে শুধুই মন মিলে!
নিসুথির বুকে ওঠেনি তারা,
চাঁদ গেছে কোন স্বর্গে তাই বা কে জানে!
তবু হৃদয়ঙ্গমে শুধু তোমারি অনুভব জাগে,
মনের প্রতিটি ভাঁজে- ভাঁজে সাজিয়ে রাখি!
সেই তুমিতেই- এই আমি…

 

বির্মোহ বেদনা

তোমার ছন্দে আমি
কবিতা হারাই!
তোমার গল্পে আমি
মুগ্ধ হই!
তোমার ডাকে
আমার আষাঢ় নামে!
তোমার মুরুলিতে
আমার হিয়া জাগে!
হৃদয় আমার গল্প রচে
ছন্দ এসে বিকেল হাসে
তারই মাঝে অনুরণন রসে
ঘরে আমার মুকুল ফুটে!
সুবাস আসে ছন্দে ছন্দে
বাজে হৃদয়ের তানপুরাটা
দীর্ঘদিনের দির্ঘশ্বাসে!
খুঁজি আমি একটি গল্প
একটি ছন্দে তাল- লয়
চিন্তনে চিত্ত আঁকে
মনের নিরিবিলিতে!
তবু বিমোর্হ বেদনা জাগে…

 

শরৎ-হেমন্ত

গ্রীস্মের দাবদাহে চৌচির
শ্যামল কোমল মৃত্তিকা
বন-তৃষায় কান্নাজুড়ে
কদম-কেয়া-পিকপাপিয়া
শারক- শালিক, প্রকৃতির ব্যাকুলতা
আরাধনায় নামে বারিধারা
প্রানদায়ী বর্ষার আনন্দ-
জোয়ারে জীর্ন- শীর্ন-বৃক্ষ শাখে!
নতুন স্বপ্নের ফোয়ারা ঝরে
শরতের শিউলী সুবাস ছড়ায়
কামিনী কাঞ্চান-মাধবীলতার
বাউড়ি- বাহার বনকাড়া ছন্দে
শীষ দিয়ে যায় বাবুই-দোয়েল!
হিন্দলে শতাব্দির আকাশে মেঘের ভ্যালা
সহিষ্ণ বাতাস নিরবে বয়ে চলা
দিপ্ত উজ্জল প্রত্যয়ী কাশবন
নয়নাভিরাম সমর্পন প্রাণে
জেগে ওঠে সুষম বাতাসের বাউরি উদ্দিপনা
আলো আঁধারের হঠাৎ বদলে যাওয়া
উজ্জল নক্ষত্র ধ্বনি- বিদগ্ধ -জ্ঞানি মানুষী
বুজুর্গ বর্শীয়ান- ধ্রুবতারা
জ্যোর্তিময় রচিত হয় সুখ- দু:খের গল্প।

(সাঈদ সুফি মূলত প্রকৃতিপ্রেমী এক চারণ বাউল কবি। চলার পথেও তিনি কবিতার সৃষ্টি করেন। এটিকে তিনি মনে করেন, প্রকৃতিরই অংশ। প্রকৃতির দয়া যদি না থাকতো তাহলে মানুষ সচল থাকতে পারতো না। প্রকৃতির কাছে ঋণ স্বীকার করেই সাঈদ সুফি তার মনের দরজা-জানালা খুলে দেন। নিজেকে সমর্পন করেন অনুচ্চ সুরে-কান পেতে শোনেন বাউলের একতার সুর। প্রকৃতি-মানুষ, সমাজ ভাবনা, প্রেম স্বাভাবিক ভাবেই সঙ্গী হয় তার কবিতার শরীরে। আমাদের অভিনন্দন প্রকৃতিপ্রেমী কবি সাঈদ সুফিকে।) 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সাঈদ সুফি’র এক গুচ্ছ কবিতা

আপডেট সময় : ০৯:২৮:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুন ২০২১

এই আমি

পান করেছি অমিয় শুধা
জীবন নদীর অতলে ক্ষুদা!
শুধুই কি অপেক্ষা;
বাদল দিনে- একা একা।
ঝটিকা বাতাস বয়ে যায়
আমার একান্ত আঙ্গিনায়।
ইচ্ছেরা কস্টের দহনে মরে,
জলের প্রতিটি ফোটায় লেখা,
ক্ষতচিহ্ন – ওতো হৃদয় খাতা,
লিখতে লিখতে যায় বেলা,
তবু মিটেনা অভিনব জীব খেলা।
সেই যে বাঁশি বেজেছিল মনে,
এ প্রান্তের সুর ওপ্রান্তের কানে!
মুসল বৃস্টি কি তার বহনে জ্বলে,
মনের মধ্যে শুধুই মন মিলে!
নিসুথির বুকে ওঠেনি তারা,
চাঁদ গেছে কোন স্বর্গে তাই বা কে জানে!
তবু হৃদয়ঙ্গমে শুধু তোমারি অনুভব জাগে,
মনের প্রতিটি ভাঁজে- ভাঁজে সাজিয়ে রাখি!
সেই তুমিতেই- এই আমি…

 

বির্মোহ বেদনা

তোমার ছন্দে আমি
কবিতা হারাই!
তোমার গল্পে আমি
মুগ্ধ হই!
তোমার ডাকে
আমার আষাঢ় নামে!
তোমার মুরুলিতে
আমার হিয়া জাগে!
হৃদয় আমার গল্প রচে
ছন্দ এসে বিকেল হাসে
তারই মাঝে অনুরণন রসে
ঘরে আমার মুকুল ফুটে!
সুবাস আসে ছন্দে ছন্দে
বাজে হৃদয়ের তানপুরাটা
দীর্ঘদিনের দির্ঘশ্বাসে!
খুঁজি আমি একটি গল্প
একটি ছন্দে তাল- লয়
চিন্তনে চিত্ত আঁকে
মনের নিরিবিলিতে!
তবু বিমোর্হ বেদনা জাগে…

 

শরৎ-হেমন্ত

গ্রীস্মের দাবদাহে চৌচির
শ্যামল কোমল মৃত্তিকা
বন-তৃষায় কান্নাজুড়ে
কদম-কেয়া-পিকপাপিয়া
শারক- শালিক, প্রকৃতির ব্যাকুলতা
আরাধনায় নামে বারিধারা
প্রানদায়ী বর্ষার আনন্দ-
জোয়ারে জীর্ন- শীর্ন-বৃক্ষ শাখে!
নতুন স্বপ্নের ফোয়ারা ঝরে
শরতের শিউলী সুবাস ছড়ায়
কামিনী কাঞ্চান-মাধবীলতার
বাউড়ি- বাহার বনকাড়া ছন্দে
শীষ দিয়ে যায় বাবুই-দোয়েল!
হিন্দলে শতাব্দির আকাশে মেঘের ভ্যালা
সহিষ্ণ বাতাস নিরবে বয়ে চলা
দিপ্ত উজ্জল প্রত্যয়ী কাশবন
নয়নাভিরাম সমর্পন প্রাণে
জেগে ওঠে সুষম বাতাসের বাউরি উদ্দিপনা
আলো আঁধারের হঠাৎ বদলে যাওয়া
উজ্জল নক্ষত্র ধ্বনি- বিদগ্ধ -জ্ঞানি মানুষী
বুজুর্গ বর্শীয়ান- ধ্রুবতারা
জ্যোর্তিময় রচিত হয় সুখ- দু:খের গল্প।

(সাঈদ সুফি মূলত প্রকৃতিপ্রেমী এক চারণ বাউল কবি। চলার পথেও তিনি কবিতার সৃষ্টি করেন। এটিকে তিনি মনে করেন, প্রকৃতিরই অংশ। প্রকৃতির দয়া যদি না থাকতো তাহলে মানুষ সচল থাকতে পারতো না। প্রকৃতির কাছে ঋণ স্বীকার করেই সাঈদ সুফি তার মনের দরজা-জানালা খুলে দেন। নিজেকে সমর্পন করেন অনুচ্চ সুরে-কান পেতে শোনেন বাউলের একতার সুর। প্রকৃতি-মানুষ, সমাজ ভাবনা, প্রেম স্বাভাবিক ভাবেই সঙ্গী হয় তার কবিতার শরীরে। আমাদের অভিনন্দন প্রকৃতিপ্রেমী কবি সাঈদ সুফিকে।)