ঢাকা ০৯:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুরু হলো মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ০৮:৫১:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৫৮ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বাংলাদেশে ভাষামাসে মাসব্যাপী আয়োজন করা হয় অমর একুশে বইমেলা। এবারের বইমেলায় স্টল সংখ্যা বেড়েছে। একদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী চত্বরে শুরু হলো দু’ব্যাপী জাতীয় কবিতা উৎসব। বাংলা একাডেমী মঞ্চে বইমেলার উদ্বোধন করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, একুশের টান বয়সের ঊর্ধ্বে, প্রজন্মের ঊর্ধ্বে। একুশের টান প্রজন্মের পর প্রজন্ম বিস্তৃত হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই টান গভীরতর হয়েছে, আমাদের দুঃসাহসী করেছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান তারই জ্বলন্ত প্রমাণ। দুঃস্বপ্নের বাংলাদেশকে ছাত্র-জনতা নতুন বাংলাদেশে রূপান্তরিত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তারা অসম্ভবকে সম্ভব করে দিয়েছে। শনিবার বিকেলে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এবারের বইমেলার মূল প্রতিপাদ্য, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ। অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতির ঘাড়ে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চেপে থাকা স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটেছে।

আমাদের সাহসী তরুণদের এই অভূতপূর্ব আত্মত্যাগ বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। এই বিজয়ের মাধ্যমে এসেছে নতুন বাংলাদেশ গড়ার ইস্পাতকঠোর প্রতিজ্ঞা। জুলাইয়ের ছাত্রদের নেতৃত্বে গণ-অভ্যুত্থানে যেসব দুঃসাহসিক ছাত্র-জনতা-শ্রমিক প্রাণ দিয়েছেন এবং গুরুতর আহত হয়েছেন, তাঁদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন অধ্যাপক ইউনূস। এবারের বইমেলায় থাকছে জুলাই চত্বরও। মেলায় বাড়ানো হয়েছে স্টলের সংখ্যা। মেলায় অংশ নিচ্ছে ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৬৩৫। এবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে ৬০৯টি প্রতিষ্ঠান। মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়নের ৩৬টিই থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকবে ১টি।

মেলা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলাপ্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। জুলাই অভ্যুত্থান এবারের বইমেলায় নতুন তাৎপর্য নিয়ে এসেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান এবং তার মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের বিনির্মাণ। বরাবরই একুশে মানে জেগে ওঠা। একুশ মানে আত্মপরিচয়ের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া। একুশ মানে অবিরাম সংগ্রাম।

নিজের পরিধিকে আরও অনেক বাড়িয়ে নেওয়া। এবারের একুশের পটভূমিতে আমাদের নতুন দিগন্তে প্রতিস্থাপন করেছে। বরকত, সালাম, রফিক, জব্বারের বুকের রক্তে যে অঙ্গীকার মাখা ছিল, তাতে ছিল জুলাই অভ্যুত্থানকে নিশ্চিত করার মহাবিস্ফোরক শক্তি। বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. মফিদুর রহমান বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রকাশক প্রতিনিধি মো. রেজাউল করিম বাদশা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

শুরু হলো মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা

আপডেট সময় : ০৮:৫১:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

বাংলাদেশে ভাষামাসে মাসব্যাপী আয়োজন করা হয় অমর একুশে বইমেলা। এবারের বইমেলায় স্টল সংখ্যা বেড়েছে। একদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী চত্বরে শুরু হলো দু’ব্যাপী জাতীয় কবিতা উৎসব। বাংলা একাডেমী মঞ্চে বইমেলার উদ্বোধন করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, একুশের টান বয়সের ঊর্ধ্বে, প্রজন্মের ঊর্ধ্বে। একুশের টান প্রজন্মের পর প্রজন্ম বিস্তৃত হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই টান গভীরতর হয়েছে, আমাদের দুঃসাহসী করেছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান তারই জ্বলন্ত প্রমাণ। দুঃস্বপ্নের বাংলাদেশকে ছাত্র-জনতা নতুন বাংলাদেশে রূপান্তরিত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তারা অসম্ভবকে সম্ভব করে দিয়েছে। শনিবার বিকেলে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এবারের বইমেলার মূল প্রতিপাদ্য, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ। অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতির ঘাড়ে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চেপে থাকা স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটেছে।

আমাদের সাহসী তরুণদের এই অভূতপূর্ব আত্মত্যাগ বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। এই বিজয়ের মাধ্যমে এসেছে নতুন বাংলাদেশ গড়ার ইস্পাতকঠোর প্রতিজ্ঞা। জুলাইয়ের ছাত্রদের নেতৃত্বে গণ-অভ্যুত্থানে যেসব দুঃসাহসিক ছাত্র-জনতা-শ্রমিক প্রাণ দিয়েছেন এবং গুরুতর আহত হয়েছেন, তাঁদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন অধ্যাপক ইউনূস। এবারের বইমেলায় থাকছে জুলাই চত্বরও। মেলায় বাড়ানো হয়েছে স্টলের সংখ্যা। মেলায় অংশ নিচ্ছে ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৬৩৫। এবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে ৬০৯টি প্রতিষ্ঠান। মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়নের ৩৬টিই থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকবে ১টি।

মেলা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলাপ্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। জুলাই অভ্যুত্থান এবারের বইমেলায় নতুন তাৎপর্য নিয়ে এসেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান এবং তার মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের বিনির্মাণ। বরাবরই একুশে মানে জেগে ওঠা। একুশ মানে আত্মপরিচয়ের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া। একুশ মানে অবিরাম সংগ্রাম।

নিজের পরিধিকে আরও অনেক বাড়িয়ে নেওয়া। এবারের একুশের পটভূমিতে আমাদের নতুন দিগন্তে প্রতিস্থাপন করেছে। বরকত, সালাম, রফিক, জব্বারের বুকের রক্তে যে অঙ্গীকার মাখা ছিল, তাতে ছিল জুলাই অভ্যুত্থানকে নিশ্চিত করার মহাবিস্ফোরক শক্তি। বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. মফিদুর রহমান বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রকাশক প্রতিনিধি মো. রেজাউল করিম বাদশা।