ঢাকা ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্দলীয় ব্যক্তিকে দেখতে চায় ৬৮% মানুষ

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:২৪:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫ ৫৮ বার পড়া হয়েছে

বঙ্গভবন ফাইল ছবি

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্দলীয় ব্যক্তিকে দেখতে চায় দেশটির ৬৮ শতাংশ আর দলীয় ব্যক্তির পক্ষে মতামত প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষ। জনগণের সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার পক্ষে প্রায় ৮৩ শতাংশ মানুষ। আর সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পক্ষে মতামত এসেছে ১৩ শতাংশ।

নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপে এমন মতামত ওঠে এসেছে। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন তাদের সংস্কার প্রস্তাব তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাধ্যমে ওই জরিপ চালায়। গত ২০-২২ ডিসেম্বর পরিচালিত জরিপে ওঠে আসা মতামত ইতিমধ্যে জরিপের খসড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করার বিষয়ে সমর্থন জানিয়েছেন ৬৫ শতাংশ মানুষ। ৬৩ শতাংশ মানুষ রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন সমর্থন করেন না এবং পক্ষে প্রায় ৩১ শতাংশ। প্রায় ৫ শতাংশ বলেছেন, এ বিষয়ে জানেন না।

বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে নমুনায়নের মাধ্যমে ৪৬ হাজার ৮০টি সাধারণ খানা (পরিবার বা যাঁরা এক চুলায় রান্না করেন) থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। প্রতিটি খানা থেকে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী নাগরিকদের মধ্যে কিশ গ্রিড সিলেকশন পদ্ধতিতে একজন নির্বাচিত উত্তরদাতার কাছ থেকে নির্ধারিত প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। জরিপে অংশ নেওয়া মানুষের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৮০ জন।

১৫ জানুয়ারি নিজেদের সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। সুপারিশের সার সংক্ষেপও প্রকাশ করা হয়েছে। সংস্কার কমিশন নির্দলীয় ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করার সুপারিশ করেছে। সাধারণ মানুষের সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সুপারিশ করেনি। সংসদের প্রস্তাবিত দুই কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার সুপারিশ করেছে।

জরিপে রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রত্যাশিত ব্যক্তির ধরন সম্পর্কে জানতে চারটি উত্তর থেকে যেকোনো একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল। সেগুলো হলো দলীয়, নির্দলীয়, জানি না ও উত্তর দিতে ইচ্ছুক নই। উত্তরদাতাদের ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ দলীয় ব্যক্তির পক্ষে, ৬৮ দশমিক ২৮ শতাংশ নির্দলীয় ব্যক্তির পক্ষে মতামত দিয়েছেন। ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ বলেছেন, তারা এ বিষয়ে জানেন না। ১ শতাংশের কিছু কম ব্যক্তি উত্তর দিতে ইচ্ছুক নন।

জরিপে নির্বাচনে মনোনয়ন-বাণিজ্য রোধে প্রধান দায়িত্ব কার এমন চারটি উত্তরের একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল। যার মধ্যে ৪৭ দশমিক ৮২ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, এই দায়িত্ব রাজনৈতিক দল বা তাদের প্রার্থীর। ৪৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ বলেছেন, এই দায়িত্ব জনগণের। এ প্রশ্নের জবাবে জানি না বলেছেন ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ উত্তরদাতা। আর শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ বলেছেন, তারা উত্তর দিতে ইচ্ছুক নন।

নির্বাচনে না ভোট জয়ী হলে পরাজিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। এর বিপক্ষে ছিলেন প্রায় ১৭ শতাংশ। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে এটি রেখেছে।
নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পক্ষে মত দেন প্রায় ৪৭ শতাংশ উত্তরদাতা। আর ৪৪ শতাংশ জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা করার পক্ষে মত দেন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো আসনে প্রদত্ত ভোট ৫০ শতাংশের কম হলে ওই আসনে পুনর্র্নিবাচনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। বিপক্ষে মত দেন ১৭ শতাংশ। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে পুনর্র্নিবাচন আয়োজনের সুপারিশ করেছে।

নির্বাচনে ‘না’ ভোট জয়ী হলে পরাজিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। এর বিপক্ষে ছিলেন প্রায় ১৭ শতাংশ। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে এটি রেখেছে।

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ১০০টিতে উন্নীত করে নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে সরাসরি ভোটে নির্বাচনের পক্ষে মত প্রায় ৭৪ শতাংশ। আর প্রায় ২০ শতাংশ ছিলেন বিপক্ষে।

জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন থাকার বিষয়টি সমর্থন করেন না ৬৩ শতাংশ মানুষ। আর প্রায় ৩১ শতাংশ এটিকে সমর্থন করেন। প্রায় ৫ শতাংশ বলেছেন, এ বিষয়ে জানেন না।

 

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের সব স্তরের নির্বাচন করার পক্ষে মত দেন ৬৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং বিপক্ষে মত দেন প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষ। এই সুপারিশগুলোও কমিশন তাদের প্রতিবেদনে রেখেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্দলীয় ব্যক্তিকে দেখতে চায় ৬৮% মানুষ

আপডেট সময় : ০৫:২৪:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

 

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্দলীয় ব্যক্তিকে দেখতে চায় দেশটির ৬৮ শতাংশ আর দলীয় ব্যক্তির পক্ষে মতামত প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষ। জনগণের সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার পক্ষে প্রায় ৮৩ শতাংশ মানুষ। আর সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পক্ষে মতামত এসেছে ১৩ শতাংশ।

নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপে এমন মতামত ওঠে এসেছে। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন তাদের সংস্কার প্রস্তাব তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাধ্যমে ওই জরিপ চালায়। গত ২০-২২ ডিসেম্বর পরিচালিত জরিপে ওঠে আসা মতামত ইতিমধ্যে জরিপের খসড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন করার বিষয়ে সমর্থন জানিয়েছেন ৬৫ শতাংশ মানুষ। ৬৩ শতাংশ মানুষ রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন সমর্থন করেন না এবং পক্ষে প্রায় ৩১ শতাংশ। প্রায় ৫ শতাংশ বলেছেন, এ বিষয়ে জানেন না।

বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে নমুনায়নের মাধ্যমে ৪৬ হাজার ৮০টি সাধারণ খানা (পরিবার বা যাঁরা এক চুলায় রান্না করেন) থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। প্রতিটি খানা থেকে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী নাগরিকদের মধ্যে কিশ গ্রিড সিলেকশন পদ্ধতিতে একজন নির্বাচিত উত্তরদাতার কাছ থেকে নির্ধারিত প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। জরিপে অংশ নেওয়া মানুষের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৮০ জন।

১৫ জানুয়ারি নিজেদের সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। সুপারিশের সার সংক্ষেপও প্রকাশ করা হয়েছে। সংস্কার কমিশন নির্দলীয় ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করার সুপারিশ করেছে। সাধারণ মানুষের সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সুপারিশ করেনি। সংসদের প্রস্তাবিত দুই কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার সুপারিশ করেছে।

জরিপে রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রত্যাশিত ব্যক্তির ধরন সম্পর্কে জানতে চারটি উত্তর থেকে যেকোনো একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল। সেগুলো হলো দলীয়, নির্দলীয়, জানি না ও উত্তর দিতে ইচ্ছুক নই। উত্তরদাতাদের ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ দলীয় ব্যক্তির পক্ষে, ৬৮ দশমিক ২৮ শতাংশ নির্দলীয় ব্যক্তির পক্ষে মতামত দিয়েছেন। ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ বলেছেন, তারা এ বিষয়ে জানেন না। ১ শতাংশের কিছু কম ব্যক্তি উত্তর দিতে ইচ্ছুক নন।

জরিপে নির্বাচনে মনোনয়ন-বাণিজ্য রোধে প্রধান দায়িত্ব কার এমন চারটি উত্তরের একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল। যার মধ্যে ৪৭ দশমিক ৮২ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, এই দায়িত্ব রাজনৈতিক দল বা তাদের প্রার্থীর। ৪৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ বলেছেন, এই দায়িত্ব জনগণের। এ প্রশ্নের জবাবে জানি না বলেছেন ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ উত্তরদাতা। আর শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ বলেছেন, তারা উত্তর দিতে ইচ্ছুক নন।

নির্বাচনে না ভোট জয়ী হলে পরাজিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। এর বিপক্ষে ছিলেন প্রায় ১৭ শতাংশ। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে এটি রেখেছে।
নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পক্ষে মত দেন প্রায় ৪৭ শতাংশ উত্তরদাতা। আর ৪৪ শতাংশ জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা করার পক্ষে মত দেন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো আসনে প্রদত্ত ভোট ৫০ শতাংশের কম হলে ওই আসনে পুনর্র্নিবাচনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। বিপক্ষে মত দেন ১৭ শতাংশ। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে পুনর্র্নিবাচন আয়োজনের সুপারিশ করেছে।

নির্বাচনে ‘না’ ভোট জয়ী হলে পরাজিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। এর বিপক্ষে ছিলেন প্রায় ১৭ শতাংশ। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে এটি রেখেছে।

জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ১০০টিতে উন্নীত করে নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে সরাসরি ভোটে নির্বাচনের পক্ষে মত প্রায় ৭৪ শতাংশ। আর প্রায় ২০ শতাংশ ছিলেন বিপক্ষে।

জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন থাকার বিষয়টি সমর্থন করেন না ৬৩ শতাংশ মানুষ। আর প্রায় ৩১ শতাংশ এটিকে সমর্থন করেন। প্রায় ৫ শতাংশ বলেছেন, এ বিষয়ে জানেন না।

 

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের সব স্তরের নির্বাচন করার পক্ষে মত দেন ৬৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং বিপক্ষে মত দেন প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষ। এই সুপারিশগুলোও কমিশন তাদের প্রতিবেদনে রেখেছে।