দক্ষিণ এশিয়ার ৫ শীর্ষ নেতাকে যে বার্তা দিলো বাংলাদেশ
- আপডেট সময় : ১১:২৮:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ মার্চ ২০২১ ২৫২ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক, ঢাকা
বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। অভূতপূর্ব এই সাফল্যের নায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বকে তাক লাগানো অর্জন তার নামের সঙ্গে মিশে থাকবে। যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা একবাক্যে স্বীকার করেছেন। ‘তলাবিহীন ঝুঁড়ি’ দেশ আজ মহাকাশ জয় করেছে।
জলের তলায় সাবমেরিন। বাংলাদেশ অনেকের ধারণা ভুল প্রমাণ করে বর্তমানে বিশ্বের ৩৫তম অর্থনীতির দেশ। মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলারের বেশি, দারিদ্র্যের হার ক্রমশ নিম্নগামী। মাথা উঁচু করা প্রবৃদ্ধির হার গোটা বিশ্বের মধ্যে তৃতীয়।
এই বাস্তবতায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে যোগদানের জন্য অনেককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এরমধ্যে গত ১৭ থেকে ২৬ মার্চ দক্ষিণ এশিয়ার পাঁচটি দেশের শীর্ষ নেতারা ঢাকা সফর করেন। যার মধ্যে মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও ভারতের রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীরা শুধু উৎসবেই যোগ দেননি, সবার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ।
প্রতিটি দেশের জন্য আলাদা আলোচনার বিষয়বস্তু থাকলেও পাঁচটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কয়েকটি বার্তা দিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে অন্যান্য দেশকে অংশীদারিত্বসহ গোটা অঞ্চলকে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার।
এ বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্মকর্তা বলেন, উৎসবের পাশাপাশি সব দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে গোটা অঞ্চলের উন্নতির জন্য আমরা একটি রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছি। কারণ, বাংলাদেশ মনে করে, নিজের উন্নতি ধরে রাখতে হলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
এর জন্য বাংলাদেশ জোর দিচ্ছে আন্ত-অঞ্চল বাণিজ্য বৃদ্ধি, কানেক্টিভিটি ও বিনিয়োগ সম্ভাবনার প্রতি। এই অঞ্চলের প্রতিটি দেশের নাগরিক বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে কর্মরত আছেন। ভারত ও শ্রীলঙ্কার একটি বড় জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে কর্মরত রয়েছেন। নেপালের প্রায় চার হাজার ছাত্র বাংলাদেশে পড়াশোনা করছে।
এছাড়া শুধু পর্যটন খাত বিবেচনা করলে ওই দেশগুলোতে প্রচুর বাংলাদেশি পর্যটক ভ্রমণ করে থাকেন। পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার স্টাডি অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার আন্ত-অঞ্চল বাণিজ্য পৃথিবীর অন্য যেকোনও অঞ্চল থেকে অনেক কম। অর্থাৎ, এই দেশগুলো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য কম করে এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে বেশি বাণিজ্য করে।
পরিবহন খরচ মোট বাণিজ্য খরচের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটিকে বিবেচনায় নিলে প্রতিবেশীর সঙ্গে বাণিজ্য করলে উভয়েরই লাভ কিন্তু, এখানে সেটি হয় না। আমরা এটিকে বাড়াতে চাই। বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য কানেক্টিভিটি প্রয়োজন এবং প্রতিটি দেশকে এ বিষয়ে পৃথক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বিমান ও জাহাজ চলাচল স্থাপন, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সড়ক ও রেল সংযোগ বৃদ্ধি, ভারতের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দর ব্যবহার, সৈয়দপুরে আঞ্চলিক বিমানবন্দর করার প্রস্তাবসহ অনেক কানেক্টিভিটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। শুধু তাই নয়, ভারতকে পাট খাতে ও মিরেরসরাইতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ বা শ্রীলঙ্কাকে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ।
বিদেশমমন্ত্রকের কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি দেশের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, যা উভয় দেশের শীর্ষ নেতার সিদ্ধান্তের প্রতিফলন। এই বিবৃতিগুলো ধরে আগামী কয়েক বছর কাজ করলে এ অঞ্চলে আন্ত-অর্থনৈতিক সম্পর্ক অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে।