প্রিয় অনির্বান
তোমাকে আমি ফিরে পেয়েছিলাম
সেই করোনা কালের ভয়াবহ সময়ে।
ছাড়াছাড়ির পালা শেষ করেও
তোমার অনুরাগ তখন কেন এতটাই বেড়েছিল জানো?
বলি সেই রূপকথা-
করোনার সেই ভয়াবহ পৃথিবীকে
মনে আছে কি তোমার?
প্রকৃতি কি ভাবে
তার ভারসাম্য হারিয়ে ছিল সেই রুষ্টতার রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করেছিলাম পলে পলে মর্মে মর্মে।
আমরা দেখেছিলাম যখন গোটা পৃথিবীর মানুষ বাধ্য হয়েছিল একযোগে গৃহবন্দি হতে
তখন মনে হয় জন্মের পরে সেই প্রথম অনুভব করেছিলাম
প্রকৃতির ব্যাথা।
কালো ধোঁয়া থেকে মুক্ত পৃথিবীর গাছপালা হয়েছিল আরো নবীন আরো সতেজ,
গাছেরা তাদের ফুল ফল আরো বেশী অনেক বেশী উপহার দিতে শুরু করেছিল তখন।
বন্য প্রানীরা তাদের খোলা পৃথিবীর মুক্ত নিঃশ্বাস নিয়ে আনন্দে ছুটে বেরিয়ে ছিল মুক্ত রাস্তার উপরেও।
সমুদ্রে খেলা করতে দেখা গিয়েছিল উচ্ছ্বসিত রাশি রাশি ডলফিনকে।
নিঃশ্বাসের বাতাসে কেমন একটা আরামের ভাব এসেছিল
মনে হতো আঃ কি চমৎকার বাতাস!
অনেক দিন পরে ফিরে এসেছিল কালবৈশাখী তার ঝড় বৃষ্টিকে নিয়ে।
মন্দির মসজিদ গীর্জার কপাট তখন একযোগ ছিল স্তব্ধ। ধর্ষন, খুন, চুরি ডাকাতি তখন যেন মানুষ ভুলে যেতে বসেছিল,
তুমিও বুঝি মোহময় হয়েছিলে সেই প্রেমের আবেশে।
আজ দুবছরে অনেকটাই কেটে গেছে সেই মৃত্যু ভয়
আবার তুমি আসহিষ্ণু হয়ে উঠেছো আগের মতো,
আর আমরা আবারও আস্তে আস্তে আরো অমানবিক হয়ে উঠছি,
যত্রতত্র ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বর্জ কালো ধোঁয়ায়
পৃথিবীর আকাশ বাতাস এখন এতটাই বিষাক্ত যে পৃথিবীর অব্যক্ত কান্না বোধহয় কান পাতলেই শোনা যায়।
গরম এতটা বুঝি আগে কখনোই দেখা যায়নি।
অসহায় নরনারী মনের মাধুর্য্য হারিয়ে
বৃদ্ধাশ্রম ডিভোর্স আরো কতো রক্তাক্ত নামে এখন পৃথিবীর মানুষ পরিচয়ের তকমা খুঁজে বেড়াচ্ছে।
অনির্বান তোমাকে আর হারাতে চাই না।
এসো অনির্বান আমরা শপথ করি আমাদের সুখ মিলনের উৎসবে আমরা একে অপরকে উপহার দিই কাটা ফুল পাতা নয় আস্ত একটা চারাগাছ।
গাছের সংখ্যা যত বাড়বে আমরা ততই নিজেদেরকে খুঁজে পাব নিজেদের মাঝে।
আর কোন রাগ অনুরাগ নয়
এসো অনির্বান আমরা পৃথিবীকে ভালবাসি নিজেদের আনন্দে বেঁচে থাকার জন্য।
ইতি
তোমার অনামিকা