কক্ষের সামনে অপেক্ষামান বেশ কয়েকজন। সবার হাতে কাগপত্রের ফাইল। এগুলো ব্যবস্থাপত্র এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাগজ। যত্নসহকারে সঙ্গে নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন, কখন ডাকবেন ডাক্তার বাবু। পায়ে পায়ে এগিয়ে গিয়ে দেখা গেল দরজায় লেখা ডা. পার্থ কর্মকার (DR PARTHO KARMAKAR ) ।
কলকাতা ফোর্টিস হাসপাতাল | অনেকটা সময় নিয়ে একজন রোগী কক্ষ থেকে বেড়িয়ে আসছেন, ফের অপরজনের ডাক পড়ছে। ডাক্তার বাবুর চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন একজন বলেন, তিনি বেশ কিছুদিন যাবত পার্থ বাবুর পেশেন্ট। ডাক্তার বাবু সময় নিয়ে দেখেন, সুবিধা-অসুবিধা সব শুনেন এবং তারপর চিন্তাভাবনা করে পরামর্শ ও ব্যবস্থাপত্র দিয়ে থাকেন। একারণে অপক্ষো করে ডাক্তার বাবুকে দেখানোর আগ্রহ।

ইমপেথি
পার্থ কর্মকার একজন বিশিষ্ট চিকিৎসক। তিনি কিডনী বিশেষজ্ঞ। দেশ-বিদেশের অনেক রোগী তার চিকিৎসা নিয়ে সন্তুষ্ট। তিনি যে কোন রোগীকে ‘ইমপেথি (Empathy) তথা সমব্যথি বা সমানুভূতির সঙ্গে দেখে থাকেন। তিনি মনে করেন, কোন ব্যক্তির আবেগ-অনুভূতি বোঝার ও তার অংশীদার হবার মানুষিকতা থাকতে হবে। একজন চিকিৎসকের এটি অন্যতম গুণাবলি।
সমাধান খোঁজেন
রোগীর কাছ থেকে মোলায়েম কণ্ঠে নানা দিক জানেন তিনি। বিষয়গুলো সঙ্গে পরিচয় হয়ে মনে হয়েছে, সমস্যা খুঁজতে তিনি অধ্যাত্মিকতায় ডুব দেন। কারণ সমস্যার মূলে প্রবেশ করেই তো সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। তিনিও তার ব্যাতিক্রম নয়। তার সন্তুষ্টি হলেই স্মিত হেসে পরামর্শ দিয়ে ব্যবস্থাপত্র লিখেন। নিজের আত্মসন্তুষ্টি চিকিৎসা পেশার বড় সম্পদ মনে করেন মানবিক চিকিৎসক পার্থ বাবু।
কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট রোগীর সেবায় ডা. পার্থ কর্মকার
হাজারও ব্যস্ততায়ও তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের কাজ করে থাকেন। দায়িত্ব থেকেই করতে হয়। তারপর নানা রকমের সামাজিক কাজকর্মতো রয়েছেই। সেমিনার-সিম্পোজিয়াম ও পেশাগত নানা আয়োজনে উপস্থিত হয়ে কথা বলতে হয় তাকে।
সমাজ সেবা
চিকিৎসকের পরামর্শের পাশাপাশি রোগীদেরও দায়িত্ব রয়েছে। কোন রোগী যদি পরামর্শ মেনে না চলেন, তা হলে চিকিৎসাসেবার ফল পাওয়াটা কষ্টকর। এক্ষেত্রে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। তাছাড়া রোগাক্রান্ত হবার আগেই যদি আমরা ক্ষতিকর দিকগুলো এড়িয়ে চলতে পারি, তাহলে কিন্তু অনেক কঠিন রোগ থেকেও মুক্ত থাকতে পারব, বলেন ডাক্তার পার্থ বাবু।
বর্তমান জলবায়ু সংকটের মুখে পৃথিবী। তথ্য-প্রযুক্তির যুগে মানুষের শারীরিক পরিশ্রম কমে আসার পাশাপাশি লাইফ স্টাইলে বেহিসাবী। তাতে করে সমাজিকভাবে নানা সমস্যার সঙ্গে রোগবালাইয়ের প্রার্দুভাবও বহুলাংশে বেড়েছে। কঠিন রোগ ছড়াচ্ছে আশঙ্কাজনক ভাবে। নানা রকমের রোগের চিকিৎসা নিতে গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মানুষ।
সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন ডা. পার্থ কর্মকার
পরামর্শ
এসব থেকে নিস্তার পেতে লাইফ স্টাইল পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভাসে মানিয়ে নিতে হবে। তারপরও দুনিয়ায় নানা রকমের রোগবালাই ছড়াচ্ছে। এটি কেবল এদেশেই নয়, উন্নত বিশ্বও পিছিয়ে নেই। ফলে স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবন-যাপনে অভ্যস্ত এবং সচেতনতার কোন বিকল্প নেই।
আর যারা আক্রান্ত হয়েছেন এবং ডাক্তারের চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদেরকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মান্যতায় নিতে হবে। মনে রাখবেন সচেতনতাই আগামীর পরিচ্ছন্ন পথের দিশা দেবে। একজন চিকিৎসক প্রবলভাবে তার রোগীর কল্যাণ ও দীর্ঘায়ু কামনা করে থাকেন। একজন রোগীকে সুস্থ করে তোলার বিষয়ে যার পর নাই ভাবতে হয়, চিন্তা করে পরামর্শ ও ব্যবস্থাপত্র দিতে হয়। তাই আসুন ডা. পার্থ বাবুর সঙ্গে আমরাও গলা মেলাই ‘চিকিৎসা নিয়ে সচেতন হবো, পরামর্শ মান্যতায় নিয়ে সুস্থ জীবন কাটাব’।