সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জুলাই মাসেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে কাঙ্খিত সেতুটি। দক্ষিণাঞ্চলের পায়রা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৭০ মিটার (প্রায় দেড় কিলোমিটার) দীর্ঘ লেবুখালী সেতুর নির্মাণ কাজে পড়ছে শেষ আঁচড়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে জুলাই মাসেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে সেতু।
কর্তৃপক্ষ জানালেন, ওপেক এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে দেশে দ্বিতীয়বারের মতো নির্মিত হচ্ছে ‘এক্সট্রা ডোজ প্রি-স্ট্রেসড বক্স গার্ডার’ টাইপের এ সেতুটি। যার ব্যয় ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
কুয়াকাটার পথে আরও কয়েকটি ফেরি পারাপার ছিলো। তাতে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পৌছাতে ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা সময় লেগে যেতো। অপর সেতুগুলো নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে আড়গেই। বাকী ছিল এই লেবুখালী সেতুটি। অবশেষে তারও দ্বার উদঘাটন হতে যাচ্ছে আসছে জুলাই। তাতে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পৌঁছাতে সময় লাগবে ৬ থেকে সর্বোচ্চ ৭ঘন্টা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি করোনার কারণে নির্ধারত সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। জুলাই মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হওয়ার আশ্বাসের কথা শুনিয়েছেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুস সবুর।
প্রকল্প পরিচালক আবদুল হালিম সংবাদমাধ্যমকে জানান, লেবুখালি সেতুটি কর্ণফুলী দ্বিতীয় সেতুর আদলেই নির্মাণ করা হয়েছে। এটি ফোরলেনের সেতু। পায়রা নদীর মূল অংশের ৬৩০ মিটার ‘বক্স গার্ডার’ চারটি স্প্যানের ওপর নির্মিত হয়েছে। যার মূল অংশ ২০০ মিটার করে দুটি স্প্যান ১৮.৩০ মিটার ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স রাখা হয়েছে, পায়রা সমুদ্র বন্দরে উপকূলীয় পণ্য ও জ্বালানীবাহী নৌযান চলাচলের জন্য।
পাশাপাশি সেতুর মূল অংশের দু’প্রান্তে ৮৪০ মিটার ভায়াডাক্ট-এ ৩০ মিটার করে ২৮টি স্প্যানে বর্ধিত অংশের ভার বহন করছে। লেবুখালী সেতুর ৩২টি স্প্যান এখন দাঁড়িয়ে আছে ৩১টি পিয়ারের ওপর। সেতুটির ২৮টি স্প্যানের ১২টি বরিশাল প্রান্তে এবং ১৬টি পটুয়াখালী প্রান্তে।
মূল সেতুটি বিভিন্ন মাপের ৫৫টি টেস্ট পাইলসহ ১০টি পিয়ার, পাইল ও পিয়ার ক্যাপের ওপর নির্মিত হয়েছে। এছাড়া ১৬৭টি বক্স গার্ডার সেগমেন্ট রয়েছে সেতুতে। যার ফলে দূর থেকে সেতুটিকে মনে হবে ঝুলে আছে।
এছাড়া পায়রা নদীতে জোয়ারের সময় নদী থেকে সেতুর মধ্যে ১৮.৩০ মিটার উঁচু থাকবে। এতে করে নদী থেকে বড় বড় জাহাজ চলাচলে কোনও রকমের সমস্যা হবে না।
খরস্রোতা পায়রা নদীর ভাঙন থেকে লেবুখালী সেতু রক্ষায় পটুয়াখালী প্রান্তে এক হাজার ৪৭৫ মিটার নদী শাসন কাজ চলছে। সেতুর ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অপর প্রান্তেও নদী শাসনের প্রয়োজন। প্রকল্পের আওতায় বরিশালে একটি প্রশাসনিক ভবনও নির্মাণ করা হচ্ছে। সৌর বিদ্যুতের আলোতে আলোকিত হবে লেবুখালী সেতু।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী বলেন, আর মাত্র ৫ ভাগ কাজ বাকি রয়েছে। যা শেষ করতে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। এতে করে আগামী মাসের মধ্যে সেতুর সব ধরনের কাজ সম্পন্ন হবে।