সাতক্ষীরার বোরো ধানের বাম্পার ফলন শ্রমিক সংকট ও ভয় কালবৈশাখী ঝড়
- আপডেট সময় : ০৯:২৭:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১ ১৭৯ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
সাতক্ষীরার তালায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। যেদিকে চোখ যায় শুধু ধান আর ধান। মাঠে মাঠে রং ছড়াচ্ছে সোনালি ধান। সোনালি ধানে দুলছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। উপজেলায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫০০ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে।
তবে লকডাউনে কৃষকের ধান কাটা নিয়েই যত দুশ্চিন্তা।
তবে জেলা প্রশসনের তরফে কৃষকের ধান কাটার শ্রমিক পরিবহনের ব্যবস্থা করা ঘোষাণা দেওয়া হয়েছে। তাতে করে আর শ্রমিক সংকট থাকবে বলে আশা করা যায়। কিন্তু তারপরও ক্ষেতের পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে রীতিমত দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন সাক্ষীরার কৃষকরা।
কপোতাক্ষ নদ খননে জলাবদ্ধতা না থাকায় এ বছর উপজেলার ধানদিয়া, নগরঘাটা, সরুলিয়া, কুমিরা, খলিষখালী, তেঁতুলিয়া তালা, জালালপুর, মাগুরা, খলিলনগর, সরুলিয়া, খেশরাসহ সর্বত্রই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছেন, উপজেলার প্রায় ১৯ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হলেও ধানের মূল্য বেশি হওয়াতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫০০ হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।
তালা উপজেলার ইসলামকাটী ইউনিয়নের সুজনসাহ গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, কপোতাক্ষ নদ খননের সুফল পাচ্ছেন তারা। আবহাওয়া ও প্রকৃতির কারণে এবং কপোতাক্ষ নদ খননে জলাবদ্ধতা না থাকায় এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
বর্তমানে আবহাওয়া ভালো, তবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কাল বৈশাখীর ঝড়ে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ১০/১২ দিনের মধ্যে পাকা ধান কাটা ও মাড়াইয়ে বিলম্ব হলে বৃষ্টি ও কালবৈশাখীতে ফসল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই মাঠ থেকে ধান ঘরে না ওঠা পর্যন্ত চিন্তার শেষ নেই।
তালা সদর ইউনিয়নের বারইহাটী গ্রামের সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও বর্তমানে সফল কৃষক আ. সাত্তার সরদার জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরো ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। তিনি প্রায় ৩ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে।
আগামী সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের শুরু করবেন। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে ঠিকমত ধান ঘরে তুলতে পারব। তবে কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হওয়ার দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।
জালালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটুর মতে গত বছরের তুলনায় এবছর ধান ভালো ও রোগ বালাই কম। তাছাড়া উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শেই কৃষকরা বোরো ধানের বাম্পার ফলন পেয়েছেন। তবে ধান কেটে ঘরে না তোলা পর্যন্ত কৃষকের চিন্তার শেষ নেই।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইলোরা পারভীন বলেন, ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষক যাতে লাভবান হয় সে জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রেখেছি ও পরামর্শ দিয়েছি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির সতর্কতার বিষয়ে আগেই আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। ধানের শীষ ৮০ শতাংশ পাকলেই ধান কেটে ফেলতে বলা হচ্ছে।
তালা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শুভ্রাংশু শেখর দাশ জানান, এ বছর উপজেলায় ব্রি-ধান ২৮ বেশি পরিমাণ জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। ব্রি-ধান ৬৭, বিনা-১০ হাইব্রিড ধানের চাষ ও কিছু এলাকায় লবণ সহিষ্ণু ধান চাষাবাদ হয়েছে।
অধিক ফলনের জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। ফলন হয়েছে বাম্পার। তবে কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পুরো ধান পাকার আগেই কেটে ফেলার পরামর্শ দেন তিনি।