ঢাকা ০৮:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিশুকে জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলে বাস শ্রমিকেরা!

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৩১:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১ ২০৪ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছবি সংগৃহিত

সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষিত, অতিরিক্ত যাত্রী তোলার প্রতিবাদ করে স্বপরিবারে মারধরের শিকার

গণপরিবহন শ্রমিকরা কতটা অসভ্য হতে পারে, তার প্রমাণ নিজেরাই বিভিন্ন সময়ে রেখে চলেছেন। সামান্য অযৌক্তিক বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে চলন্ত বাস থেকে যাত্রীকে ফেলে দিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে খুদ রাজধানীতে।

বাসের বেশ কিছু ধর্ষণের ঘটনা আলোড়ন তুলেছে। একাধিক বাস চালক, কন্ডাক্টর, হেলাপারের ফাঁসিও হয়েছে। সেই গণপরিবহন শ্রমিকরা অমানুষের মতো আচরণ করবে, এটাই তো স্বাভাবিক। তাই বর্তমান করোনাকালে সরকারী নির্দেশনা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী তোলার প্রতিবাদ করায় একটি পরিবারের সকল সদস্যকে রীতিমত মারধর করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, তাদের শিশু সন্তানকে বাসের জানালা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়!

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে যাত্রী নেওয়ার প্রতিবাদ করায় একই পরিবারের সবাইকে মারধর করেছে বাস শ্রমিকরা। এমনকি ঐ পরিবারের সঙ্গে থাকা শিশু কন্যাকে জানালা দিয়ে ছুড়ে নিচে ফেলে দেয় শ্রমিকরা।

বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালে শুক্রবার ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির মুহিন ফয়সাল পরিবহনের বাসের সুপারভাইজার মুন্নার নেতৃত্বে মারধর করা হয়।

রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসনে শিপন সাংবাদিকদের জানান, যাত্রীর সঙ্গে স্ট্যান্ডে কথা কাটাকাটি হলেও মারধর করা হয়েছে স্ট্যান্ডের বাইরে সড়কে। এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির বাস শ্রমিকরা। তিনি বলেন বিষয়টি ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির কাছে জানানো ছাড়া তাদের কিছু করার নেই।

ভুক্তভোগী শামীম সিকদার জানান তার মা হাসনুর বেগম, ভাগ্নে বৌ কারিমা ও কারিমার ৭ বছরের শিশু কন্যা মুনিয়াকে নিয়ে মঠবাড়িয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসে উঠেছিলেন। বরিশাল থেকে মঠবাড়িয়া ভাড়া দেড়শ টাকা করে। কিন্তু করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চলাচল করায় সরকার নির্ধারিত ২৪০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হয়।

শিশুসহ আমরা চারজনেই ২৪০ টাকা করে টিকেট নিয়েছে। কিন্তু নিয়ম আসন ফাঁকা না রেখে বাসের সুপারভাইজার অতিরিক্ত যাত্রী তোলায় সিট পরিপূর্ণ করে আমাদেরকে দাঁড়িয়ে যেতে বলা হয়। এতে ঠাসাঠাসি হওয়ায় আমি প্রতিবাদ করলে বাসের সুপারভাইজার, হেলপারসহ স্ট্যান্ডের ১৫/২০ জন শ্রমিক মিলে আমাকে মারধর শুরু করে।

এক পর্যায়ে আমার মা, ভাগ্নে বৌ বাঁচাতে আসলে তাদেরকেও মারধর করে এবং শিশু কন্যাকে জানালা দিয়ে ছুড়ে নিচে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে তাদের চারজনকে না নিয়েই ঠাসাঠাসি করা যাত্রী নিয়ে মুহিন ফয়সাল পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-২৪৪৯৯৮) বাসটি মঠবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতয়ালী মডেল থানার এসআই রেজাউল ইসলাম জানান, ট্রাফিক পুলিশ বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শামীম সিকদার থানায় এ মর্মে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। ওসি নূরুল ইসলাম জানান, অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির দায়িত্বশীল কারোর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে রূপাতলী বাস টার্মিনালের একাধিক যাত্রী জানান, অভ্যন্তরীণ সকল রুটে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বাসগুলো চলাচল করে। প্রশাসনের কোনো নজরদারি না থাকায় বাস মালিক ও শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে এভাবে যাত্রী পরিবহন করছে। এর প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের মারধর করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

শিশুকে জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলে বাস শ্রমিকেরা!

আপডেট সময় : ০৭:৩১:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১

ছবি সংগৃহিত

সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষিত, অতিরিক্ত যাত্রী তোলার প্রতিবাদ করে স্বপরিবারে মারধরের শিকার

গণপরিবহন শ্রমিকরা কতটা অসভ্য হতে পারে, তার প্রমাণ নিজেরাই বিভিন্ন সময়ে রেখে চলেছেন। সামান্য অযৌক্তিক বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে চলন্ত বাস থেকে যাত্রীকে ফেলে দিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে খুদ রাজধানীতে।

বাসের বেশ কিছু ধর্ষণের ঘটনা আলোড়ন তুলেছে। একাধিক বাস চালক, কন্ডাক্টর, হেলাপারের ফাঁসিও হয়েছে। সেই গণপরিবহন শ্রমিকরা অমানুষের মতো আচরণ করবে, এটাই তো স্বাভাবিক। তাই বর্তমান করোনাকালে সরকারী নির্দেশনা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী তোলার প্রতিবাদ করায় একটি পরিবারের সকল সদস্যকে রীতিমত মারধর করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, তাদের শিশু সন্তানকে বাসের জানালা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়!

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে যাত্রী নেওয়ার প্রতিবাদ করায় একই পরিবারের সবাইকে মারধর করেছে বাস শ্রমিকরা। এমনকি ঐ পরিবারের সঙ্গে থাকা শিশু কন্যাকে জানালা দিয়ে ছুড়ে নিচে ফেলে দেয় শ্রমিকরা।

বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালে শুক্রবার ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির মুহিন ফয়সাল পরিবহনের বাসের সুপারভাইজার মুন্নার নেতৃত্বে মারধর করা হয়।

রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসনে শিপন সাংবাদিকদের জানান, যাত্রীর সঙ্গে স্ট্যান্ডে কথা কাটাকাটি হলেও মারধর করা হয়েছে স্ট্যান্ডের বাইরে সড়কে। এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছে ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির বাস শ্রমিকরা। তিনি বলেন বিষয়টি ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির কাছে জানানো ছাড়া তাদের কিছু করার নেই।

ভুক্তভোগী শামীম সিকদার জানান তার মা হাসনুর বেগম, ভাগ্নে বৌ কারিমা ও কারিমার ৭ বছরের শিশু কন্যা মুনিয়াকে নিয়ে মঠবাড়িয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসে উঠেছিলেন। বরিশাল থেকে মঠবাড়িয়া ভাড়া দেড়শ টাকা করে। কিন্তু করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চলাচল করায় সরকার নির্ধারিত ২৪০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হয়।

শিশুসহ আমরা চারজনেই ২৪০ টাকা করে টিকেট নিয়েছে। কিন্তু নিয়ম আসন ফাঁকা না রেখে বাসের সুপারভাইজার অতিরিক্ত যাত্রী তোলায় সিট পরিপূর্ণ করে আমাদেরকে দাঁড়িয়ে যেতে বলা হয়। এতে ঠাসাঠাসি হওয়ায় আমি প্রতিবাদ করলে বাসের সুপারভাইজার, হেলপারসহ স্ট্যান্ডের ১৫/২০ জন শ্রমিক মিলে আমাকে মারধর শুরু করে।

এক পর্যায়ে আমার মা, ভাগ্নে বৌ বাঁচাতে আসলে তাদেরকেও মারধর করে এবং শিশু কন্যাকে জানালা দিয়ে ছুড়ে নিচে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে তাদের চারজনকে না নিয়েই ঠাসাঠাসি করা যাত্রী নিয়ে মুহিন ফয়সাল পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-২৪৪৯৯৮) বাসটি মঠবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতয়ালী মডেল থানার এসআই রেজাউল ইসলাম জানান, ট্রাফিক পুলিশ বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শামীম সিকদার থানায় এ মর্মে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। ওসি নূরুল ইসলাম জানান, অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে ঝালকাঠী বাস মালিক সমিতির দায়িত্বশীল কারোর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে রূপাতলী বাস টার্মিনালের একাধিক যাত্রী জানান, অভ্যন্তরীণ সকল রুটে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বাসগুলো চলাচল করে। প্রশাসনের কোনো নজরদারি না থাকায় বাস মালিক ও শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে এভাবে যাত্রী পরিবহন করছে। এর প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের মারধর করা হয়।