ঢাকা ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঙালির অসাম্প্রদায়িক উৎসব

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ এপ্রিল ২০২১ ২০০ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সেলিনা হোসেন

বাংলা নববর্ষ বাঙালির জীবনে শুধু একটিমাত্র দিন নয়, একটিমাত্র উৎসবও নয়।

এই দিনকে কেন্দ্র করে উচ্চারিত হয়েছে বহুমাত্রিক অর্থ। জীবনের গভীর অর্থ খোঁজার যে মৌল দর্শন একটি জাতির চিন্তা-চেতনায় বিরাজ করে, সেই অর্থের সবটুকু ধারণ করে আছে বাংলা নববর্ষদিন।

এই উৎসব বাঙালি জাতীয়তাবাদের মৌল অনুপ্রেরণা। অসাম্প্রদায়িক বাঙালির আকর আধার। মনুষ্যত্ব বিকাশের শুভ শক্তি। আত্মপরিচয় বৃদ্ধির মূল ক্ষেত্র। বিশ্বজোড়া মেলবন্ধনে মানবিকতার মৌলিক শর্ত।

বাংলা নববর্ষের উৎসব আছে বলেই বাঙালির পরাজয় নেই। জাগরণের ঘণ্টাধ্বনি বাজায় এই উৎসব। মানুষ জড়ো হয় আপন নিয়মে। এই উৎসব শহরের ইট-কাঠ থেকে গ্রামের মেঠোপথ পর্যন্ত বিস্তৃত। অন্য অর্থে বলা যায়, এই উৎসব বয়ে এনেছে শস্যদানা। জলবতী মেঘ। রুপালি ইলিশ। বিনয় বাঁশির ঢোল। এখন এর সবটুকু শহরে প্রতিটি মানুষের প্রাণের স্পন্দন। নন্দিত হয় পুরো দেশ।

বাংলা নববর্ষ মানুষকে সেই বার্তা দেয়, যখন রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মৌলবাদী জঙ্গিরা বোমা ফাটায়। যখন যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে কিংবা নেত্রকোনার অনুষ্ঠানে বোমা ফাটে। অশুভ শক্তির বার্তায় মানুষ আবার শক্তি সঞ্চয় করে আরেকটি নববর্ষ উৎসব উদযাপন করে।

বাঙালির পথচলায় নববর্ষ বাতিঘর। বিভ্রান্তির জাঁতাকলে পিষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই বাঙালির। অমোঘ শক্তির দীপ্তি তার মাথার ওপর ছায়া হয়ে আছে।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘নববর্ষ’ প্রবন্ধে বলেছেন, ‘এই মহামান্বিত জগতের অদ্যকার নববর্ষদিন আমাদের জীবনের মধ্যে যে গৌরব বহন করিয়া আনিল, এই পৃথিবীতে বাস করিবার গৌরব, আলোকে বিচরণ করিবার গৌরব, এই আকাশতলে আসীন হইবার গৌরব, তাহা যদি পরিপূর্ণভাবে চিত্তের মধ্যে গ্রহণ করি, তবে আর বিষাদ নাই, নৈরাশ্য নাই, ভয় নাই, মৃত্যু নাই।’

বাঙালি এই গৌরবের জায়গাটি তৈরি করেছে। মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দান করে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলা ভাষার স্বাধীন রাষ্ট্র অর্জন করে উপমহাদেশের মানচিত্র বদলে দিয়েছে। তার পরও বলতে হবে দুটি গভীর ও ব্যাপক অর্জন বাঙালির সামনে পাহাড় সমান উচ্চতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এক. যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এবং দণ্ড প্রদান। দুই. হতদরিদ্র মানুষের জীবন থেকে দারিদ্র্যের অবসান ঘটিয়ে তাদের মানসম্মত জীবনযাপনের ব্যবস্থা প্রদান।

বাংলা নববর্ষ বাঙালির আদিমতম উৎসব। এ প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘খৃষ্টাব্দ, হিজরী অব্দ, শতাব্দ, বিক্রমাব্দ, বুদ্ধাব্দ, অথচ বঙ্গাব্দ প্রভৃতি কোনো নির্দিষ্ট বছরের সঙ্গে নববর্ষের কোনো যোগ নেই, অর্থাৎ কোনো প্রকারের বৎসরের গণনার প্রারম্ভ থেকে কোনো দেশের অথবা জাতির নববর্ষ শুরু হয়নি। এ হচ্ছে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে চলে আসা একটা বাৎসরিক উৎসব। কোনো ধর্মের সাথেও নববর্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। বিশিষ্ট বৎসরগুলো যেমন পরে এসে এতে যুক্ত হয়েছে, বিশিষ্ট ধর্মও তেমনি উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। প্রকৃতপক্ষে বয়সের তুলনায় অব্দই বলুন আর ধর্মই বলুন নববর্ষের উৎসবের কাছে নেহাত সেদিনের খোকা। আধুনিক নববর্ষের উৎসবের মধ্যে আদিম নববর্ষের পরিবর্তিত রূপ লুকিয়ে আছে। তাই তার প্রাচীন অনুষ্ঠানাদিকে আধুনিক অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে থেকে খুঁজে বের করতে হবে।’

ড. মুহাম্মদ এনামুল হকের এই বক্তব্য আমাদের গভীরভাবে অনুধাবন করতে হবে। আবহমান বাংলার এই প্রাচীনরূপ থেকেই আমরা বুঝতে পারি যে কৃষিভিত্তিক সমাজের জীবনব্যবস্থায় ফসলকেন্দ্রিক উৎসব বড় আকারের সামাজিক উৎসবের সূচনা করে। নববর্ষ এই অর্থে আমাদের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব, যেখানে মানুষে মানুষের কোনো ভেদ নেই। এই উৎসবে আছে মাটির গন্ধ এবং মানুষে মানুষে মিলিত হয়ে আনন্দ করার সবচেয়ে বড় মেলা। এদিক থেকে নববর্ষ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব। দীর্ঘ সময় আগে আমাদের কবি বলেছিলেন, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।’ নববর্ষ তার মিলনমেলায় মানুষের এই সত্যকে ধারণ করে।

সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি দিল্লির সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন ৯২৩ হিজরি মোতাবেক ১৫৫৬ সালে। ২৯ বছর রাজত্ব করার পর তিনি পঞ্জিকা ও বর্ষপঞ্জি সংস্কারের উদ্যোগ নেন। হিজরি সন ও সম্রাট আকবরের সিংহাসনে আরোহণের বছরকে যুক্ত করে বাংলা সন প্রবর্তিত হয়।

বলা হয়ে থাকে যে ফসল কাটার মৌসুমে খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য এই সন চালু করা হয়েছিল। সম্রাট আকবরের উপদেষ্টা আমীর ফতেউল্লাহ সিরাজী বাংলা মাসের নামগুলো নক্ষত্রের নাম থেকে নিয়ে সৌরমাসের দিন মিলিয়ে বাংলা সন প্রবর্তন করেন। এ ব্যাপারে ১৫৮৫ সালের ১০ মার্চ সম্রাটের নির্দেশনামা জারি হয়। তবে এর কার্যকারিতা দেখানো হয় ১৫৫৬ সালের ১১ মার্চ থেকে। কারণ ওই দিনটি ছিল সম্রাট আকবরের সিংহাসনে বসার তারিখ। সেই থেকে বাংলা বর্ষপঞ্জির সূচনা হয়। এখন বাঙালি সংস্কৃতির একটি বৃহৎ ও মৌল উপাদান বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব ও বৈশাখী মেলা।

২০২১ সালে উদযাপিত হচ্ছে বাঙালির প্রাণের নেতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ। একই সঙ্গে বাঙালির চেতনায় প্রস্ফুটিত হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। এই অসাধারণ দুটি ঘটনার সঙ্গে বাংলা নববর্ষ বাঙালির চেতনার জাগ্রত বোধ।

তবে দুঃখজনক ঘটনা বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি মানুষের উৎসবকে আক্রান্ত করেছে। মানুষের প্রাণের টান থাকবে; কিন্তু আবেগের উচ্ছ্বাস আড়াল হয়ে যাবে মহামারির ভয়াবহতায়।

তার পরও করোনাকালে নববর্ষের সোনালি সূর্যের আলো ভরে দেবে মানুষের উদ্দীপনা। কালের কণ্ঠের সৌজন্যে

লেখক : কথাসাহিত্যিক

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বাঙালির অসাম্প্রদায়িক উৎসব

আপডেট সময় : ১১:৫৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ এপ্রিল ২০২১

সেলিনা হোসেন

বাংলা নববর্ষ বাঙালির জীবনে শুধু একটিমাত্র দিন নয়, একটিমাত্র উৎসবও নয়।

এই দিনকে কেন্দ্র করে উচ্চারিত হয়েছে বহুমাত্রিক অর্থ। জীবনের গভীর অর্থ খোঁজার যে মৌল দর্শন একটি জাতির চিন্তা-চেতনায় বিরাজ করে, সেই অর্থের সবটুকু ধারণ করে আছে বাংলা নববর্ষদিন।

এই উৎসব বাঙালি জাতীয়তাবাদের মৌল অনুপ্রেরণা। অসাম্প্রদায়িক বাঙালির আকর আধার। মনুষ্যত্ব বিকাশের শুভ শক্তি। আত্মপরিচয় বৃদ্ধির মূল ক্ষেত্র। বিশ্বজোড়া মেলবন্ধনে মানবিকতার মৌলিক শর্ত।

বাংলা নববর্ষের উৎসব আছে বলেই বাঙালির পরাজয় নেই। জাগরণের ঘণ্টাধ্বনি বাজায় এই উৎসব। মানুষ জড়ো হয় আপন নিয়মে। এই উৎসব শহরের ইট-কাঠ থেকে গ্রামের মেঠোপথ পর্যন্ত বিস্তৃত। অন্য অর্থে বলা যায়, এই উৎসব বয়ে এনেছে শস্যদানা। জলবতী মেঘ। রুপালি ইলিশ। বিনয় বাঁশির ঢোল। এখন এর সবটুকু শহরে প্রতিটি মানুষের প্রাণের স্পন্দন। নন্দিত হয় পুরো দেশ।

বাংলা নববর্ষ মানুষকে সেই বার্তা দেয়, যখন রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মৌলবাদী জঙ্গিরা বোমা ফাটায়। যখন যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে কিংবা নেত্রকোনার অনুষ্ঠানে বোমা ফাটে। অশুভ শক্তির বার্তায় মানুষ আবার শক্তি সঞ্চয় করে আরেকটি নববর্ষ উৎসব উদযাপন করে।

বাঙালির পথচলায় নববর্ষ বাতিঘর। বিভ্রান্তির জাঁতাকলে পিষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই বাঙালির। অমোঘ শক্তির দীপ্তি তার মাথার ওপর ছায়া হয়ে আছে।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘নববর্ষ’ প্রবন্ধে বলেছেন, ‘এই মহামান্বিত জগতের অদ্যকার নববর্ষদিন আমাদের জীবনের মধ্যে যে গৌরব বহন করিয়া আনিল, এই পৃথিবীতে বাস করিবার গৌরব, আলোকে বিচরণ করিবার গৌরব, এই আকাশতলে আসীন হইবার গৌরব, তাহা যদি পরিপূর্ণভাবে চিত্তের মধ্যে গ্রহণ করি, তবে আর বিষাদ নাই, নৈরাশ্য নাই, ভয় নাই, মৃত্যু নাই।’

বাঙালি এই গৌরবের জায়গাটি তৈরি করেছে। মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দান করে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলা ভাষার স্বাধীন রাষ্ট্র অর্জন করে উপমহাদেশের মানচিত্র বদলে দিয়েছে। তার পরও বলতে হবে দুটি গভীর ও ব্যাপক অর্জন বাঙালির সামনে পাহাড় সমান উচ্চতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এক. যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এবং দণ্ড প্রদান। দুই. হতদরিদ্র মানুষের জীবন থেকে দারিদ্র্যের অবসান ঘটিয়ে তাদের মানসম্মত জীবনযাপনের ব্যবস্থা প্রদান।

বাংলা নববর্ষ বাঙালির আদিমতম উৎসব। এ প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘খৃষ্টাব্দ, হিজরী অব্দ, শতাব্দ, বিক্রমাব্দ, বুদ্ধাব্দ, অথচ বঙ্গাব্দ প্রভৃতি কোনো নির্দিষ্ট বছরের সঙ্গে নববর্ষের কোনো যোগ নেই, অর্থাৎ কোনো প্রকারের বৎসরের গণনার প্রারম্ভ থেকে কোনো দেশের অথবা জাতির নববর্ষ শুরু হয়নি। এ হচ্ছে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে চলে আসা একটা বাৎসরিক উৎসব। কোনো ধর্মের সাথেও নববর্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। বিশিষ্ট বৎসরগুলো যেমন পরে এসে এতে যুক্ত হয়েছে, বিশিষ্ট ধর্মও তেমনি উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। প্রকৃতপক্ষে বয়সের তুলনায় অব্দই বলুন আর ধর্মই বলুন নববর্ষের উৎসবের কাছে নেহাত সেদিনের খোকা। আধুনিক নববর্ষের উৎসবের মধ্যে আদিম নববর্ষের পরিবর্তিত রূপ লুকিয়ে আছে। তাই তার প্রাচীন অনুষ্ঠানাদিকে আধুনিক অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে থেকে খুঁজে বের করতে হবে।’

ড. মুহাম্মদ এনামুল হকের এই বক্তব্য আমাদের গভীরভাবে অনুধাবন করতে হবে। আবহমান বাংলার এই প্রাচীনরূপ থেকেই আমরা বুঝতে পারি যে কৃষিভিত্তিক সমাজের জীবনব্যবস্থায় ফসলকেন্দ্রিক উৎসব বড় আকারের সামাজিক উৎসবের সূচনা করে। নববর্ষ এই অর্থে আমাদের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব, যেখানে মানুষে মানুষের কোনো ভেদ নেই। এই উৎসবে আছে মাটির গন্ধ এবং মানুষে মানুষে মিলিত হয়ে আনন্দ করার সবচেয়ে বড় মেলা। এদিক থেকে নববর্ষ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব। দীর্ঘ সময় আগে আমাদের কবি বলেছিলেন, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।’ নববর্ষ তার মিলনমেলায় মানুষের এই সত্যকে ধারণ করে।

সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি দিল্লির সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন ৯২৩ হিজরি মোতাবেক ১৫৫৬ সালে। ২৯ বছর রাজত্ব করার পর তিনি পঞ্জিকা ও বর্ষপঞ্জি সংস্কারের উদ্যোগ নেন। হিজরি সন ও সম্রাট আকবরের সিংহাসনে আরোহণের বছরকে যুক্ত করে বাংলা সন প্রবর্তিত হয়।

বলা হয়ে থাকে যে ফসল কাটার মৌসুমে খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য এই সন চালু করা হয়েছিল। সম্রাট আকবরের উপদেষ্টা আমীর ফতেউল্লাহ সিরাজী বাংলা মাসের নামগুলো নক্ষত্রের নাম থেকে নিয়ে সৌরমাসের দিন মিলিয়ে বাংলা সন প্রবর্তন করেন। এ ব্যাপারে ১৫৮৫ সালের ১০ মার্চ সম্রাটের নির্দেশনামা জারি হয়। তবে এর কার্যকারিতা দেখানো হয় ১৫৫৬ সালের ১১ মার্চ থেকে। কারণ ওই দিনটি ছিল সম্রাট আকবরের সিংহাসনে বসার তারিখ। সেই থেকে বাংলা বর্ষপঞ্জির সূচনা হয়। এখন বাঙালি সংস্কৃতির একটি বৃহৎ ও মৌল উপাদান বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব ও বৈশাখী মেলা।

২০২১ সালে উদযাপিত হচ্ছে বাঙালির প্রাণের নেতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ। একই সঙ্গে বাঙালির চেতনায় প্রস্ফুটিত হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। এই অসাধারণ দুটি ঘটনার সঙ্গে বাংলা নববর্ষ বাঙালির চেতনার জাগ্রত বোধ।

তবে দুঃখজনক ঘটনা বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি মানুষের উৎসবকে আক্রান্ত করেছে। মানুষের প্রাণের টান থাকবে; কিন্তু আবেগের উচ্ছ্বাস আড়াল হয়ে যাবে মহামারির ভয়াবহতায়।

তার পরও করোনাকালে নববর্ষের সোনালি সূর্যের আলো ভরে দেবে মানুষের উদ্দীপনা। কালের কণ্ঠের সৌজন্যে

লেখক : কথাসাহিত্যিক