বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতে মাঠে র্যাব চলছে সচেতনতার পাশাপাশি জরিমানাও
- আপডেট সময় : ০৩:০৭:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর ২০২০ ৪৬৮ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক, ঢাকা
বাংলাদেশে ফের করোনা গ্রাফ উর্ধমুখী হবে এব্যাপারে আগেভাগেই থেকেই দেশবাসীকে সচেতনতার ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের সকল হাসপাতালগুলো তৈরী রাখার নির্দেশনাও দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে প্রশাসনসহ সকল স্তরের মানুষদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে করোনার প্রাদুর্ভাব রুখতে করণীয় বিষয়ে নির্দেশনাও ছিল তার বার্তায়। এরই মধ্যে জনসমাগমস্থানে দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কিন্তু নানা বাহানায় মাস্ক না পরে বাইয়ে বেড়িয়ে পড়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। সাধারণের উদাসিনতা এতই চোখে পড়ে যা প্রতিরোধে উদ্যোগ নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা। জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে রাজধানীতে অভিযান শুরু করেছে বাহিনীটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার বিভিন্ন স্পটে প্রতিদিন চালানো হচ্ছে অভিযান। শুক্রবার ঢাকার জিগাতলা, শাহবাগ, কামরাঙ্গিরচর, মিরপুর রোড, ফার্মগেইটসহ বিভিন্ন এলাকায় চালানো হচ্ছে ধারাবাহিক অভিযান। এসময় মাস্ক ব্যবহার না করায় প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষকে জরিমানা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করেছে র্যাব।
রাজধানীর জিগাতলায় ঢাকা জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এ সময় রেজওয়ান নামে একব্যক্তিকে হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই আদালতের সামনে পড়েন গৃহিণী রাজিয়া বেগম। এক মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে তিনি রিকশায় যাচ্ছিলেন। মাস্ক কেন পরেননি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভুলে গেছেন। তাঁর বাসায় এক বক্স মাস্ক মজুত রয়েছে। সব সময়ই তিনি মাস্ক পরেন। তাঁর মেয়ে আদালতকে বলেন, তাড়াহুড়া করে বেরিয়েছেন বলে মাস্ক পরতে মনে নেই। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে বলেন, আপনি যেহেতু সেজেগুজে বের হয়েছেন, সেহেতু আপনি তাড়াহুড়া করে বের হয়েছেন, এটা ঠিক নয়। আদালত রাজিয়াকে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয় এবং দুই সন্তানসহ তাঁকে বিনা মূল্যে মাস্ক দেওয়া হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও লালবাগ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা রহমান বলেন, মাস্ক পরার বিষয়ে মানুষের যেন অজুহাতের শেষ নেই। তাঁরা যেসব যুক্তি দেন, এসব কোনোভাবেই মানা যায় না। মাস্ক না পরার পেছনে মানুষের উদাসীনতাই মূল কারণ। সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাইরে চলাচল করতে জোর দিচ্ছে। গত ২৫ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা পেতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। ১৮ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহানগরী ও জেলার পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাস্ক পরার বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানে নেমেছেন। এ ছাড়া র্যাবের পক্ষ থেকেও অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তবু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মানুষের উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে।
বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মাস্ক না পরলে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা, করোনা বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও মাস্ক বিতরণ করা হবে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সবার মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়। এ সময় জনসাধারণের মাঝে বিনা মূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হয়।
পলাশ কুমার বসু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে সরকারি নির্দেশনা অনুসারে মাস্ক পরা নিশ্চিত করা ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অভিযান মাঠে নেমেছে র্যাব। প্রায় ৯ মাস অতিক্রম করেছে এই করোনা মহামারি। এখন মানুষ অনেকটা সচেতন। তার পরও যারা সচেতন হচ্ছেন না তাদের জরিমানা করা হচ্ছে।