টিকা নিয়ে চুক্তি: ইংরেজির স্থলে চীনা ভাষার অংশে স্বাক্ষর, ভাষাবিদ নিয়োগ

- আপডেট সময় : ০৬:৪০:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মে ২০২১ ১৮৯ বার পড়া হয়েছে
চীনা টিকা আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের দেরি করাটাই নাকী টিকা প্রাপ্তির দৌড়ে পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ। এমন বক্তব্যই উপস্থাপন করেছিলেন, ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত মি. লি জিমিং। ভাষাগত বিষয় বুঝতে না পারার ঘটনাও ঘটে। যা কিনা কূটনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এই কূটনীতিকের বক্তব্যে সপ্তাহ দুই আগের করা মন্তব্যের শেষে বুধবার বাংলাদেশ চুক্তির জন্য যে নথিতে সই করেছে, তা ইংরেজি ভাষার অংশের বদলে চীনা ভাষার অংশেই সই করে ফেলেছে বলে জানা যায়।
চুক্তিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চীনা ভাষায় দক্ষ একজন অধ্যাপককে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, বিদেশমন্ত্রক শুধু যোগাযোগের কাজটি করছে। চুক্তি, টিকা কেনা ও আনার সব দায়িত্ব পালন করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। চীনের সঙ্গে টিকা কেনার চুক্তি ও প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রক কালনক্ষেপণ করছে, তাতে হতাশা প্রকাশ করেছেন বেইজিংয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। একই ধরনের ঘটনা ঘটছে রাশিয়ার কাছ থেকে টিকা কেনার ক্ষেত্রেও।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে এ মাসের শুরুর দিকে ড. মোমেন বলেছিলেন, বিশ্বে টিকার সংকট রয়েছে। এটি সাপ্লাইয়ার্স মার্কেট (সরবরাহকারীর বাজার)। সিদ্ধান্ত নিতে বেশি দেরি করা ঠিক হবে না।
জানা যায়, টাকা দেওয়ার পরও চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে টিকা সরবরাহ করতে না পারায় স্বাস্থ্য মন্ত্রক চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তিগুলোতে সতর্কতা অবলম্বন করছে। বিশেষ করে টিকা পৌঁছানোর নিশ্চয়তার বিষয়টি চুক্তিতে রাখতে চাচ্ছে।
ড. মোমেন সাংবাদিকদের বলেছন, চীনের সঙ্গে চুক্তি মোটামুটি চূড়ান্ত পর্যায়ে। আছে। চীন তিনটি ডকুমেন্ট পাঠিয়েছিল। এর মধ্যে আমরা দু’টি পাঠিয়েছি পূরণ করে। দু’টির মধ্যে একটি, যেটি বুধবার গেছে সেটির কিছু অংশ ছিল ইংরেজিতে, বাকি অংশ ছিল চীনা ভাষায়। আমরা পূরণ করে পাঠানোর সময় চীনা জায়গায় সই করে দিয়েছি। কাল আবার চীনা ভাষার একজন প্রফেসর নিয়োগ করে সেটি আবার…।
বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘দিজ আর লাউজি (এগুলো খারাপ) কাজ হয়েছে। আমরা বিদেশমন্ত্রক এটি করিনি। আমরা শুধু কানেকশনটি করে দিই। এগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাজ। কখন, কীভাবে আনবেন তারা ঠিক করেন। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। সেখানে একটু দেরি হচ্ছে।
আমাদের রাষ্ট্রদূত খুবই হতাশ। ডকুমেন্টগুলো না হলে প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা যাবে না। তিনি বেইজিংয়ে চূড়ান্ত করছেন। তিনি খুবই হতাশ। তিনি আমাকে ফোন করেছেন। টেক্সট দিয়েছেন। ফোন করার পর বলেছি, আমাকে টেক্সট দেন। তিনি টেক্সট পাঠালে আমি সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব সাহেবকে পাঠিয়েছি। এই অবস্থায় রয়েছে।
রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, রাশিয়ার সঙ্গেও আমাদের ডকুমেন্টগুলোর কিছু হয়েছে, কিছু হয়নি। এক সময় টিকার পরিমাণ বলা হয়েছে। পরে আবার পরিবর্তন করা হয়েছে।
রাশিয়ানরা এগুলো পছন্দ করে না। আপনি বললেন, আমি এত আনবো। পরে বললেন যে আরো কমিয়ে আনবো। এগুলো নিয়ে আমরা এখন ব্যস্ততায় আছি। আশা করছি, এ সপ্তাহের মধ্যেই সব কিছুই ঠিক হবে।
ভারত থেকে টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ভারতের মন্ত্রী ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করকে তিনি ফোন করেছিলেন। ভারত কখনো বলেনি যে টিকা দেবে না, কিন্তু তারা দিতে পারছে না।
ড. মোমেন বলেন, যুক্তরাজ্যের কাছেও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চেয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাজ্য অনেক দিন অপেক্ষার পর জানিয়েছে, বেসরকারি কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে চেষ্টা করা যেতে পারে।