টিকার আওতায় আসেনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে

- আপডেট সময় : ০১:১৮:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ২০২১ ৩২৩ বার পড়া হয়েছে
‘টিকাদান শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ঘোষণা রয়েছে শিক্ষা বিভাগের’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, কলেজের কাছে তথ্য চেয়ে পাওয়া যায়নি, সাত কলেজের দায়িত্ব নিচ্ছে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৯ লাখ। যার মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন পৌনে ৪ লাখ। বাকীরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি ও বেসরকারি কলেজগুলোতে। যার মধ্যে শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বেসরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজের শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রমের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত ঢাকার সাতটি কলেজের টিকা কার্যক্রম নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এই বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সংশয়ে রয়েছে।
দেশে ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে ৪৬টিতে। ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২০টি আবাসিক হলের ১ লাখ ৩১ হাজার শিক্ষার্থীর টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হবে। টিকাদান শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ঘোষণা রয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমপর্যায়ের শিক্ষা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ লাখ ২৫ হাজার শিক্ষার্থী টিকাদানের আওতায় আসেননি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সচিব ড. ফেরদৌস জামান সংবাদমাধ্যমকে জানান, ইউজিসি থেকে আবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সে আলোকেই এখন টিকা কার্যক্রম চলছে। কলেজগুলোর বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোগ নেবে।
সরকার শিক্ষার্থীদের টিকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। টিকাদান কার্যক্রম শেষ হলেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত রয়েছে আড়াই হাজার সরকারি-বেসরকারি কলেজ। এসব কলেজের মধ্যে কতগুলোতে আবাসিক হল রয়েছে এবং এসব হলে কতজন শিক্ষার্থী রয়েছে, তার নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের।
স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী এখন ৩৫ বছর বয়সের বেশি ব্যক্তির টিকা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যারা অনার্স পর্যায়ে পড়াশানা করছেন তাদের বয়স ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ বছর। তাই কলেজের এসব শিক্ষার্থীর টিকা নিতে হলে
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতো আলাদা নামের তালিকা পাঠাতে হবে। কিন্তু এই কলেজগুলো থেকে এমন কোনো তথ্যসংবলিত তালিকা তৈরি হয়নি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানান, একটি নির্ধারিত ফরমে কলেজগুলোর তথ্য চাওয়া হলেও অধিকাংশ কলেজ থেকে তথ্য পাওয়া মেলেনি। একারণে কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত সাতটি কলেজের মধ্যে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। সাতটি কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ।
এসব কলেজে রয়েছে ২০টি আবাসিক হল। সেখানে ২০ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী। টিকা কার্যক্রমে এসব কলেজের নাম যুক্ত না হওয়ায় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব কলেজের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদ ও সেভেন কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার বলেন, ‘আমরা কলেজের আবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করে রেখেছি। জানা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের টিকার দায়িত্ব নেবে না। এই শিক্ষক নেতা বলেন, সাত কলেজ যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
অধিভুক্ত, সেহেতু টিকা নিশ্চিতের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেশন ফি থেকে শুরু করে অন্যান্য আর্থিক বিষয় নিয়ন্ত্রণ করে। এসব ফি বিশ্ববিদ্যালয়েই জমা হয়। তারা শুধু পরীক্ষা নেবে, অন্য দায়িত্ব নেবে না এটা হতে পারে না।