চলন্ত বাসে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় আদালতে চালকের স্বীকারোক্তি

- আপডেট সময় : ০৭:০৪:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১ ১৯৮ বার পড়া হয়েছে
চলন্ত বাসে তরুণীকে গণধর্ষণ: চালকের স্বীকারোক্তি, বাকিদের ৩ দিনের হেফাজতে : ছবি সংগৃহিত
চলন্ত মিনিবাসে তরুণীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনায় আটক ৬ জনের মধ্যে চালক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকি আসামিদের ৩ দিনের রিমান্ড হেফাজতে দিয়েছেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। ঘটনা সাভারের আশুলিয়ায়।
গ্রেফতারকৃত ৬ ধর্ষককে শনিবার ৫ দিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে ঢাকার আদালতে তোলা হয়। আদালতে মিনিবাস চালক সুমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। শুনানী শেষে বাকি ৫ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতে দিয়েছেন আদালত।
শুক্রবার মাঝরাতে আশুলিয়া-সিঅ্যান্ডবি বাইপাস সড়কের আশুলিয়া গরুর হাট এলাকায় চলন্ত বাসে তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার ভুক্তভোগী আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠিয়েছে।
ধর্ষণের শিকার নারীর গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাট। সে স্বামীর সাথে নারায়নগঞ্জের চাষাড়া এলাকায় থেকে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করতো বলে জানা যায়।
গণধর্ষনের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, ঢাকার তুরাগ থানার গুলবাগ ইন্দ্রপুর ভাসমান গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে আরিয়ান (১৮), কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার তারাগুনা এলাকার মৃত আতিয়ারের ছেলে সাজু (২০), বগুড়া জেলার ধুনট থানার খাটিয়ামারি এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে সুমন (২৪), নারায়নগঞ্জ জেলার বন্দর থানার
ধামঘর এলাকার জহুর উদ্দিনের ছেলে মনোয়ার (২৪) ও বগুড়া জেলার ধুনট থানার খাটিয়ামারি এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে সোহাগ (২৫)। বগুড়া জেলার ধুপচাচিয়া থানার জিয়ানগর গ্রামের সামছুলের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪০)। তারা সবাই তুরাগ থানার কামারপারা ভাসমান এলাকায় ভাড়া থেকে আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল-নবীনগর মহাসড়কে মিনিবাস চালাতো।
পুলিশ জানায়, গণধর্ষনের শিকার নারী নিজ বাসা নারায়নগঞ্জ থেকে শুক্রবার তার বোনের বাসা মানিকগঞ্জে যান। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে মানিকগঞ্জ থেকে নারায়নগঞ্জের বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে বাসে উঠলে রাত ৮ টার দিকে বাসটি আশুলিয়ার নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে তাকে নামিয়ে দেয়।
রাত ৯ টার দিকে নিউ গ্রামবাংলা মিনিবাসের হেলপার মনোয়ার ও সুপারভাইজার সাইফুল ইসলামের সাথে কথা বলে ৩৫ টাকা ভাড়ায় টঙ্গী স্টেশন রোডে যাওয়ার জন্য সঙ্গীয় আরও একজন পরিচিত যাত্রী নিয়ে মিনিবাসে উঠেন। এসময় মিনিবাসটি গন্তব্যে পৌছার আগেই অন্য সকল যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে নারী ও তার সহযাত্রীকে না নামিয়ে জোরপূর্বক বাসে করে আবারও নবীনগরে দিকে আসতে থাকে।
এক পর্যায়ে বাসের চালক, হেলপারসহ ৬ জন মিলে বাসের জানালা-দরজা আটকিয়ে আশুলিয়ার গরুরহাট এলাকায় নিয়ে তাকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। একই সঙ্গে নারীর সঙ্গে থাকা পুরুষ যাত্রীকে মারধর করে বাসের এক কোনায় আটকে রাখে। এসময় নারীর আত্মচিৎকারে সেখানে দায়িত্বে থাকা টহল পুলিশ শুক্রবার রাত ১২ টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিশ মাইল এলাকায় ব্যাড়িকেড দিয়ে গাড়ীটি আটক করে ধর্ষকদের গ্রেফতার করে ।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান জানান, শুক্রবার রাতেই অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। গণধর্ষণের শিকার নারীর দায়েরকৃত মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। এরমধ্যে চালক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।