ঢাকা ০১:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গবেষণা : মাটি দূষণে বিপন্ন প্রাণ-প্রকৃতি

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:০৭:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ জুন ২০২১ ২১২ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বরগুনার আমতলী উপজেলার আঙ্গুলকাটা গ্রামে হঠাৎ ১৫টি গরু মারা যায়। অসুস্থ হয়ে পড়ে আরও ২৫টি। আমনের ফলনও তেমন হয়নি। এ অবস্থায় গ্রামের মাটি ও কৃষিপণ্যের সাতটি নমুনা পরীক্ষা করে মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউট। তারা গ্রামের মাটিতে প্রয়োজনের তুলনায় ১৩৮ গুণ সিসার উপস্থিতি দেখতে পায়। ফলে এলাকার পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র মারাত্মক হুমকিতে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

সেখানে উৎপাদিত কৃষিপণ্য খাদ্য তালিকা থেকে সরিয়ে নেওয়া উচিত এমন মন্তব্যও তাদের। মাটি দূষণের জন্য গ্রামের একটি সিসা কারখানাকে দায়ী করে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও আগের চেহারায় ফেরেনি আঙ্গুলকাটা গ্রামের কৃষি ও প্রাণ-প্রকৃতি। শুধু আঙ্গুলকাটা গ্রামই নয়, বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলের মাটিই এখন দূষণে নিষ্প্রাণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১৭ জেলার ৫৭ উপজেলা থেকে এক হাজার ৪৪৪টি নমুনা সংগ্রহ করে। সেগুলো বিশ্নেষণের পর ২০১৬ সালে মাটিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি চিহ্নিত করা হয়।

ঢাকার অদূরে সাভারের ইপিজেড এলাকার আশপাশে ফসলি জমির মাটি নিয়ে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাটি প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালে। তারা কৃষিজমিতে সহনীয় মাত্রার চেয়ে সর্বনিম্ন সাড়ে আট গুণ ও সর্বোচ্চ ৩৮ গুণ বেশি মাত্রার কোবাল্ট পেয়েছে। ক্রোমিয়ামের সর্বোচ্চ মাত্রা পাওয়া যায় সহনীয় মাত্রার তুলনায় ১১২ গুণ বেশি। পাওয়া যায় উচ্চমাত্রার টিটেনিয়াম, ভেনাডিয়ামসহ ১১টি ভারী ধাতু।

মাটির কান্না না শুনলে সামনে বড় বিপদ : বিজ্ঞানীরা বলছেন, এক গ্রাম ওজনের মাটিতে ৫০ হাজার প্রজাতির মাইক্রো-অর্গানিজম বা অণুজীব থাকতে পারে। মাত্র পাঁচ বর্গমিলিমিটার মাটি সৃষ্টি হতে ১০০ বছরেরও বেশি সময় লাগে।

ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম ও সিসার মতো ভারী ধাতু অতিরিক্ত মাত্রায় পাওয়া যাচ্ছে মাটিতে। খাদ্যচক্রের মাধ্যমে সেসব ক্ষতিকর উপাদান মানবদেহে প্রবেশের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিত চাষাবাদ, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার, ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ইটভাটার জন্য মাটির উপরিভাগের অংশ তুলে নেওয়া, শিল্পায়ন, দূষণ, ব্যাপক হারে বনভূমি ধ্বংস, পেট্রোলিয়াম চালিত গাড়ি এবং ইলেকট্রনিক ও মেডিকেল বর্জ্যের কারণে মাটির স্বাস্থ্য দিন দিন খারাপ হচ্ছে।

মাটির সুরক্ষা নিয়ে গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটিসের অর্থায়নে পরিবেশ অধিদপ্তর একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটির পরিচালক ড. মুহাম্মদ সোহরাব আলি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের বাস্তবায়িত প্রকল্পের মাধ্যমে জুন ২০২১ পর্যন্ত ভূমি ব্যবহার মানচিত্র হালনাগাদকরণ, ভূমি অবক্ষয়ের কারণ ও সূচক চিহ্নিতকরণ, অবক্ষয় রোধ, প্রশমন বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করণের লক্ষ্যে টেকসই ভূমি ব্যবহারের তথ্যভান্ডার তৈরির কাজ চলছে। ২০৩০ সালের মধ্যে অবক্ষয়মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে যোগ্য পথনকশা প্রণয়ন করা হবে।

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. বিধান কুমার ভাণ্ডার বলেন, শিল্পকারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো না হলে তা থেকে মাটি দূষণ ঘটবেই। মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এসব বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। কারণ মাটি সুস্থ না থাকলে কৃষিজাত খাদ্যচক্র নিরাপদ থাকবে না, যার ক্ষতিকর প্রভাব জনস্বাস্থ্যে পড়তেই পারে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস বলেন, মাটিতে বসবাসকারী অগণিত প্রজাতির অণুজীব শনাক্ত করার মতো বিশেষজ্ঞ ও অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। নীতিগতভাবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিলে কয়েক বছরে এ ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব।

গত বছর মাটির উর্বরা শক্তি ও জৈব পদার্থের উপস্থিতি নিয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই)। সমীক্ষায় মাটির উর্বরতা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে মাটিতে জৈব পদার্থের ঘাটতি ও নানা পুষ্টিকণা কমে যাওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। দেশে সব ধরনের বিশেষ করে আবাদি, বনভূমি, নদী, লেক, সংরক্ষিত বনাঞ্চল, সুন্দরবন ইত্যাদি এলাকা মিলিয়ে জমির পরিমাণ এক কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর।

এর মধ্যে ফসফরাস ঘাটতিযুক্ত এলাকার পরিমাণ ৬৬ লাখ হেক্টর, যা মোট জমির প্রায় ৪৫ শতাংশ। অন্যদিকে পটাশিয়ামের ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৫২ লাখ ৭০ হাজার বা ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশে। সালফারের ঘাটতি রয়েছে ৬৫ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর বা ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ এলাকায়। এর বাইরে বোরনের ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৫১ লাখ ১০ হাজার হেক্টরে (মোট জমির ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ)। জৈব পদার্থের ঘাটতি রয়েছে এক কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর বা মোট জমির প্রায় ৭৮ দশমিক ৯০ শতাংশে।

মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ ৫ শতাংশ হলে সে মাটিকে সবচেয়ে ভালো বলা হয়। ন্যূনতম ২ শতাংশ থাকলে সেটিকে ধরা হয় মোটামুটি মানের। কিন্তু দেশের মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ এখন গড়ে ২ শতাংশেরও নিচে নেমে এসেছে। এ ছাড়া জৈব পদার্থের ঘাটতি রয়েছে প্রায় এক কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে, যা দেশের মোট জমির প্রায় ৭৯ শতাংশ।

ইন্টার গভর্নমেন্টাল সায়েন্স-পলিসি প্ল্যাটফর্ম অন বায়োডাইভারসিটি অ্যান্ড ইকোসিস্টেমের (আইপিবিইএস) এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩২০ কোটি মানুষ মাটি দূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পরিবেশ দিবস আজ: আজ শনিবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস। দিবসটির এবারের মূল প্রতিপাদ্য ‘বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার’। সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ‘সোনালু’, ‘জাম’, ‘আমড়া’ ও ‘ডুমুর’ বৃক্ষের চারটি চারা রোপণ করে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ২০২১-এর উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। ‘মুজিববর্ষে অঙ্গীকার করি, সোনার বাংলা সবুজ করি’ প্রতিপাদ্যে এবারের জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান উদযাপন হবে। এ ছাড়া আজ বিভিন্ন সংগঠন দিবসটি ঘিরে নানা কর্মসূচি পালন করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

গবেষণা : মাটি দূষণে বিপন্ন প্রাণ-প্রকৃতি

আপডেট সময় : ০৭:০৭:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ জুন ২০২১

বরগুনার আমতলী উপজেলার আঙ্গুলকাটা গ্রামে হঠাৎ ১৫টি গরু মারা যায়। অসুস্থ হয়ে পড়ে আরও ২৫টি। আমনের ফলনও তেমন হয়নি। এ অবস্থায় গ্রামের মাটি ও কৃষিপণ্যের সাতটি নমুনা পরীক্ষা করে মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউট। তারা গ্রামের মাটিতে প্রয়োজনের তুলনায় ১৩৮ গুণ সিসার উপস্থিতি দেখতে পায়। ফলে এলাকার পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র মারাত্মক হুমকিতে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

সেখানে উৎপাদিত কৃষিপণ্য খাদ্য তালিকা থেকে সরিয়ে নেওয়া উচিত এমন মন্তব্যও তাদের। মাটি দূষণের জন্য গ্রামের একটি সিসা কারখানাকে দায়ী করে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও আগের চেহারায় ফেরেনি আঙ্গুলকাটা গ্রামের কৃষি ও প্রাণ-প্রকৃতি। শুধু আঙ্গুলকাটা গ্রামই নয়, বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলের মাটিই এখন দূষণে নিষ্প্রাণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১৭ জেলার ৫৭ উপজেলা থেকে এক হাজার ৪৪৪টি নমুনা সংগ্রহ করে। সেগুলো বিশ্নেষণের পর ২০১৬ সালে মাটিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি চিহ্নিত করা হয়।

ঢাকার অদূরে সাভারের ইপিজেড এলাকার আশপাশে ফসলি জমির মাটি নিয়ে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাটি প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালে। তারা কৃষিজমিতে সহনীয় মাত্রার চেয়ে সর্বনিম্ন সাড়ে আট গুণ ও সর্বোচ্চ ৩৮ গুণ বেশি মাত্রার কোবাল্ট পেয়েছে। ক্রোমিয়ামের সর্বোচ্চ মাত্রা পাওয়া যায় সহনীয় মাত্রার তুলনায় ১১২ গুণ বেশি। পাওয়া যায় উচ্চমাত্রার টিটেনিয়াম, ভেনাডিয়ামসহ ১১টি ভারী ধাতু।

মাটির কান্না না শুনলে সামনে বড় বিপদ : বিজ্ঞানীরা বলছেন, এক গ্রাম ওজনের মাটিতে ৫০ হাজার প্রজাতির মাইক্রো-অর্গানিজম বা অণুজীব থাকতে পারে। মাত্র পাঁচ বর্গমিলিমিটার মাটি সৃষ্টি হতে ১০০ বছরেরও বেশি সময় লাগে।

ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম ও সিসার মতো ভারী ধাতু অতিরিক্ত মাত্রায় পাওয়া যাচ্ছে মাটিতে। খাদ্যচক্রের মাধ্যমে সেসব ক্ষতিকর উপাদান মানবদেহে প্রবেশের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিত চাষাবাদ, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার, ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ইটভাটার জন্য মাটির উপরিভাগের অংশ তুলে নেওয়া, শিল্পায়ন, দূষণ, ব্যাপক হারে বনভূমি ধ্বংস, পেট্রোলিয়াম চালিত গাড়ি এবং ইলেকট্রনিক ও মেডিকেল বর্জ্যের কারণে মাটির স্বাস্থ্য দিন দিন খারাপ হচ্ছে।

মাটির সুরক্ষা নিয়ে গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটিসের অর্থায়নে পরিবেশ অধিদপ্তর একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটির পরিচালক ড. মুহাম্মদ সোহরাব আলি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের বাস্তবায়িত প্রকল্পের মাধ্যমে জুন ২০২১ পর্যন্ত ভূমি ব্যবহার মানচিত্র হালনাগাদকরণ, ভূমি অবক্ষয়ের কারণ ও সূচক চিহ্নিতকরণ, অবক্ষয় রোধ, প্রশমন বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করণের লক্ষ্যে টেকসই ভূমি ব্যবহারের তথ্যভান্ডার তৈরির কাজ চলছে। ২০৩০ সালের মধ্যে অবক্ষয়মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে যোগ্য পথনকশা প্রণয়ন করা হবে।

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. বিধান কুমার ভাণ্ডার বলেন, শিল্পকারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো না হলে তা থেকে মাটি দূষণ ঘটবেই। মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এসব বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। কারণ মাটি সুস্থ না থাকলে কৃষিজাত খাদ্যচক্র নিরাপদ থাকবে না, যার ক্ষতিকর প্রভাব জনস্বাস্থ্যে পড়তেই পারে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস বলেন, মাটিতে বসবাসকারী অগণিত প্রজাতির অণুজীব শনাক্ত করার মতো বিশেষজ্ঞ ও অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। নীতিগতভাবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিলে কয়েক বছরে এ ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব।

গত বছর মাটির উর্বরা শক্তি ও জৈব পদার্থের উপস্থিতি নিয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই)। সমীক্ষায় মাটির উর্বরতা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে মাটিতে জৈব পদার্থের ঘাটতি ও নানা পুষ্টিকণা কমে যাওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। দেশে সব ধরনের বিশেষ করে আবাদি, বনভূমি, নদী, লেক, সংরক্ষিত বনাঞ্চল, সুন্দরবন ইত্যাদি এলাকা মিলিয়ে জমির পরিমাণ এক কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর।

এর মধ্যে ফসফরাস ঘাটতিযুক্ত এলাকার পরিমাণ ৬৬ লাখ হেক্টর, যা মোট জমির প্রায় ৪৫ শতাংশ। অন্যদিকে পটাশিয়ামের ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৫২ লাখ ৭০ হাজার বা ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশে। সালফারের ঘাটতি রয়েছে ৬৫ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর বা ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ এলাকায়। এর বাইরে বোরনের ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৫১ লাখ ১০ হাজার হেক্টরে (মোট জমির ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ)। জৈব পদার্থের ঘাটতি রয়েছে এক কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর বা মোট জমির প্রায় ৭৮ দশমিক ৯০ শতাংশে।

মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ ৫ শতাংশ হলে সে মাটিকে সবচেয়ে ভালো বলা হয়। ন্যূনতম ২ শতাংশ থাকলে সেটিকে ধরা হয় মোটামুটি মানের। কিন্তু দেশের মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ এখন গড়ে ২ শতাংশেরও নিচে নেমে এসেছে। এ ছাড়া জৈব পদার্থের ঘাটতি রয়েছে প্রায় এক কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে, যা দেশের মোট জমির প্রায় ৭৯ শতাংশ।

ইন্টার গভর্নমেন্টাল সায়েন্স-পলিসি প্ল্যাটফর্ম অন বায়োডাইভারসিটি অ্যান্ড ইকোসিস্টেমের (আইপিবিইএস) এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩২০ কোটি মানুষ মাটি দূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পরিবেশ দিবস আজ: আজ শনিবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস। দিবসটির এবারের মূল প্রতিপাদ্য ‘বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার’। সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ‘সোনালু’, ‘জাম’, ‘আমড়া’ ও ‘ডুমুর’ বৃক্ষের চারটি চারা রোপণ করে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ২০২১-এর উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। ‘মুজিববর্ষে অঙ্গীকার করি, সোনার বাংলা সবুজ করি’ প্রতিপাদ্যে এবারের জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান উদযাপন হবে। এ ছাড়া আজ বিভিন্ন সংগঠন দিবসটি ঘিরে নানা কর্মসূচি পালন করছে।