ঢাকা ০১:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্রে জাপানি বিনিয়োগ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৯:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুন ২০২১ ২২১ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বৃটেনে যখন পৃথিবীর সাতটি ধনী দেশের ফোরাম জি-৭ (গ্রুপ অব সেভেন)-এর শীর্ষ সম্মেলনের শুরু হয়েছে, ঠিক সে সময়ে এই আয়োজনকে ঘিরে বাংলাদেশে জাপানী বিনিয়োগের বিরোধীতা করে অভিনব পদ্ধতি অবলম্ব করে রাজপথে নেমে এসেছে একদল তরুণ। তাদের প্রতিবাদের ভাষা ছিলো ভিন্ন।

শুক্রবার সকালে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (বিডাব্লিউজিইডি) ও ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের যৌথ উদ্যোগে ২০ জন তরুণ জলবায়ু কর্মীরা পিকাচু এবং প্লেকার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।

তারা বাংলাদেশের মাতারবাড়ি কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে সব ধরনের জাপানি বিনিয়োগ বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের দাবি, অবিলম্বে মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্র (১ম পর্যায়) নির্মাণ স্থগিত করে যে পর্যন্ত অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে তার উপর তরল হাইড্রোজেনের মতো কম দূষণকারী জ্বালানির বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা।

ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের ঢাকা জেলার সমন্বয়কারী রুহুল আমিস রাব্বি জানান, গত ২১ মে ২০২১ তারিখে পৃথিবীর ধনী দেশের জোট জি-৭-এর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা আর কয়লাখাতে বিনিয়োগ করবে না।

মাতারবাড়ি কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প এখনই বাতিল করে সৌর বা বায়ু-বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেবার পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে সব ধরনের জাপানি বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং ঐতিহাসিক দূষণের দায় স্বীকার করে সব ধরনের ঋণ মওকুফ করা।

এ সাতটি দেশের মধ্যে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান। জি-৭ এর সদস্য রাষ্ট্র জাপান সম্মিলিতভাবে নেয়া এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে কয়লা-বিদ্যুত খাতে বিনিয়োগ করে যাচ্ছে। জাপানসহ জি-৭ ভূক্ত দেশগুলো আমাদের মতো দরিদ্র দেশকে ঋণ দিয়ে আমাদের কাঁধে ঋণের বোঝা চাপিয়েছে। এখন ঋণ শোধ করতে গিয়ে আমাদের মত দেশগুলোর মাথাপিছু ঋণ দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার টাকারও উপরে।

১১ই জুন থেকে আগামী ১৪ জুন যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবছরের জি-৭ সম্মেলন। সম্মেলনে অংশ নেবেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও ড্রাগি, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, জাপান পৃথিবীর সবথেকে ধনী দেশগুলোর অন্যতম। ১৯৯২ সালের জলবায়ু-সনদ অনুসারে জাপান শুধু নিজের দেশে নয় বরং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশেরও গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে নীতিগতভাবে বাধ্য।

কিন্তু জাপান সরকার ও সরকারের প্রতিষ্ঠান জাইকা কয়লা-বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করে আমাদেরকে যেমন বিপদে ফেলছে তেমনি মানবজাতির সমান ক্ষতি করছে। এতে লাভ হচ্ছে জাইকার, কিন্তু ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশের ও পৃথিবীর।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্রে জাপানি বিনিয়োগ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেট সময় : ০৯:৩৯:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুন ২০২১

বৃটেনে যখন পৃথিবীর সাতটি ধনী দেশের ফোরাম জি-৭ (গ্রুপ অব সেভেন)-এর শীর্ষ সম্মেলনের শুরু হয়েছে, ঠিক সে সময়ে এই আয়োজনকে ঘিরে বাংলাদেশে জাপানী বিনিয়োগের বিরোধীতা করে অভিনব পদ্ধতি অবলম্ব করে রাজপথে নেমে এসেছে একদল তরুণ। তাদের প্রতিবাদের ভাষা ছিলো ভিন্ন।

শুক্রবার সকালে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশের বৈদেশিক দেনা বিষয়ক কর্মজোট (বিডাব্লিউজিইডি) ও ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের যৌথ উদ্যোগে ২০ জন তরুণ জলবায়ু কর্মীরা পিকাচু এবং প্লেকার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।

তারা বাংলাদেশের মাতারবাড়ি কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে সব ধরনের জাপানি বিনিয়োগ বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের দাবি, অবিলম্বে মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্র (১ম পর্যায়) নির্মাণ স্থগিত করে যে পর্যন্ত অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে তার উপর তরল হাইড্রোজেনের মতো কম দূষণকারী জ্বালানির বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা।

ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের ঢাকা জেলার সমন্বয়কারী রুহুল আমিস রাব্বি জানান, গত ২১ মে ২০২১ তারিখে পৃথিবীর ধনী দেশের জোট জি-৭-এর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা আর কয়লাখাতে বিনিয়োগ করবে না।

মাতারবাড়ি কয়লা-বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প এখনই বাতিল করে সৌর বা বায়ু-বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেবার পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে সব ধরনের জাপানি বিনিয়োগ বন্ধ করতে হবে। স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং ঐতিহাসিক দূষণের দায় স্বীকার করে সব ধরনের ঋণ মওকুফ করা।

এ সাতটি দেশের মধ্যে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান। জি-৭ এর সদস্য রাষ্ট্র জাপান সম্মিলিতভাবে নেয়া এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে কয়লা-বিদ্যুত খাতে বিনিয়োগ করে যাচ্ছে। জাপানসহ জি-৭ ভূক্ত দেশগুলো আমাদের মতো দরিদ্র দেশকে ঋণ দিয়ে আমাদের কাঁধে ঋণের বোঝা চাপিয়েছে। এখন ঋণ শোধ করতে গিয়ে আমাদের মত দেশগুলোর মাথাপিছু ঋণ দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার টাকারও উপরে।

১১ই জুন থেকে আগামী ১৪ জুন যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবছরের জি-৭ সম্মেলন। সম্মেলনে অংশ নেবেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও ড্রাগি, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, জাপান পৃথিবীর সবথেকে ধনী দেশগুলোর অন্যতম। ১৯৯২ সালের জলবায়ু-সনদ অনুসারে জাপান শুধু নিজের দেশে নয় বরং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশেরও গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে নীতিগতভাবে বাধ্য।

কিন্তু জাপান সরকার ও সরকারের প্রতিষ্ঠান জাইকা কয়লা-বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করে আমাদেরকে যেমন বিপদে ফেলছে তেমনি মানবজাতির সমান ক্ষতি করছে। এতে লাভ হচ্ছে জাইকার, কিন্তু ক্ষতি হচ্ছে বাংলাদেশের ও পৃথিবীর।