ঢাকা ১০:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করোনার মাহামারি আমেরিকানদের গড় আয়ু দেড় বছর কেড়ে নিয়েছে

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৫৮:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ জুলাই ২০২১ ১৭৯ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছবি সংগৃহিত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর একক কোন বছরে এটি সর্বোচ্চ আয়ু হ্রাস

আমেরিকানদের গড় আয়ু কমেছে দেড় বছর। ২০১৯ সালে গড় আয়ু ছিল ৭৮ বছর ১০ মাস। গতবছর অর্থাৎ ২০২০ সালে তা কমে ৭৭ বছর ৪ মাস হয়েছে। করোনার কেড়ে নিয়ে তাদের গড় আয়ু। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর একক কোন বছরে এটি সর্বোচ্চ আয়ু হ্রাস।

সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বুধবার এই উদ্বেগজনক এতথ্য করে আরও বলেছে, বহুদিন থেকে আমেরিকানদের গড় আয়ু বাড়ছিল। চিকিৎসা ব্যবস্থায় যুগান্তকারি উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির সুফল হিসেবে আমেরিকানদের গড় আয়ু বৃদ্ধির লাগাতার এই প্রবণতাকে বাধাগ্রস্ত করলো করোনা মহামারি।

সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর করোনাসহ নানা কারণে ৩৩ লাখ আমেরিকানের মৃত্যু হয়। এরমধ্যে ১১% ছিলেন করোনায় আক্রান্ত। সিডিসির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, স্মরণকালের আর কোন বছরেই এতবেশী আমেরিকানের প্রাণ হারাননি। এর ফলে সামগ্রিকভাবে ৭৪% আমেরিকানের আয়ু কমেছে।

মৃত্যুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী কৃষ্ণাঙ্গ এবং ল্যাটিনো আমেরিকান ছিলেন জানালো সিডিসি। শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের সবচেয়ে বেশি প্রাণ গেছে অত্যধিক মাদক সেবনে। গৃহদাঙ্গায় মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটেছে আফ্রিকান আমেরিকান পরিবারে। বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রকাশিত প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।


অপর দিকে এপিলের মাঝামাঝি সময়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত তিন আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গের কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিকাগোর এক গির্জার রেভারেন্ড মার্শাল হ্যাচের ৭৩ বছর বয়সী বড় বোন রোডা হ্যাচ আটদিন হাসপাতালে

থাকার পর মারা যান গত ৪ এপ্রিল। এর দুইদিন আগে রেভারেন্ড হ্যাচের সবচেয়ে কাছের বন্ধু ল্যারি হ্যাচও মারা যান কোভিড-১৯ এ।

তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। এছাড়া কয়েকদিনে রেভারেন্ড হ্যাচের খুব কাছের চারজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা যান। রেভারেন্ড হ্যাচে জানান, আফ্রিকান আমেরিকান

কৃষ্ণাঙ্গদের বসবাসের এলাকা হিসেবে পরিচিত ওয়েস্ট গারফিল্ড পার্কে তিনি বসবাস করেন। সেখানকার অনেকেই করোনায় আক্রান্ত।

আমেরিকায় ডেল্টার প্রকোপ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা পুনরায় চালুর কথা ভাবছেন স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা। যেসব এলাকার মানুষ টিকা নেননি বা নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন, সে সব এলাকায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে ডেল্টার সংক্রমণ।

সিডিসির তরফে বলা হয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এমন রোগীর ৯৭% টিকা নেয়নি। আর যারা মারা গিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৯৯% টিকাও গ্রহণ করেনি। এহেন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনীহা প্রকাশকারিরাও এখন টিকা নিতে গ্রহণে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

এটি অত্যন্ত আশার খবর যে সব মানুষের বোধোদয় ঘটেছে করোনার টিকা গ্রহণে-মন্তব্য সিডিসির। টিকা গ্রহণের জন্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান

জানিয়েছেন এবং বলেছেন, টিকা নিলে হাসপাতালে ভর্তি হবার প্রয়োজন নেই বলেও তিনি সার্বিক বিশ্লেষণের উদ্ধৃতি দিয়েছেন।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১২ জুলাই পর্যন্ত ১৫ কোটি ৯০ লাখ আমেরিকান পূর্ণ ডোজের টিকা নিয়েছেন। এরমধ্যে মাত্র ৫৪৯২ জন পুনরায় সংক্রমিত হয়েছেন এবং মারা গিয়েছেন ১০৬৩ জন। টিকা গ্রহণকারির মধ্যে মৃত্যুর এই হার ০.০০০৭%।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

করোনার মাহামারি আমেরিকানদের গড় আয়ু দেড় বছর কেড়ে নিয়েছে

আপডেট সময় : ০১:৫৮:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ জুলাই ২০২১

ছবি সংগৃহিত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর একক কোন বছরে এটি সর্বোচ্চ আয়ু হ্রাস

আমেরিকানদের গড় আয়ু কমেছে দেড় বছর। ২০১৯ সালে গড় আয়ু ছিল ৭৮ বছর ১০ মাস। গতবছর অর্থাৎ ২০২০ সালে তা কমে ৭৭ বছর ৪ মাস হয়েছে। করোনার কেড়ে নিয়ে তাদের গড় আয়ু। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর একক কোন বছরে এটি সর্বোচ্চ আয়ু হ্রাস।

সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বুধবার এই উদ্বেগজনক এতথ্য করে আরও বলেছে, বহুদিন থেকে আমেরিকানদের গড় আয়ু বাড়ছিল। চিকিৎসা ব্যবস্থায় যুগান্তকারি উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির সুফল হিসেবে আমেরিকানদের গড় আয়ু বৃদ্ধির লাগাতার এই প্রবণতাকে বাধাগ্রস্ত করলো করোনা মহামারি।

সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর করোনাসহ নানা কারণে ৩৩ লাখ আমেরিকানের মৃত্যু হয়। এরমধ্যে ১১% ছিলেন করোনায় আক্রান্ত। সিডিসির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, স্মরণকালের আর কোন বছরেই এতবেশী আমেরিকানের প্রাণ হারাননি। এর ফলে সামগ্রিকভাবে ৭৪% আমেরিকানের আয়ু কমেছে।

মৃত্যুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী কৃষ্ণাঙ্গ এবং ল্যাটিনো আমেরিকান ছিলেন জানালো সিডিসি। শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের সবচেয়ে বেশি প্রাণ গেছে অত্যধিক মাদক সেবনে। গৃহদাঙ্গায় মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটেছে আফ্রিকান আমেরিকান পরিবারে। বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রকাশিত প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।


অপর দিকে এপিলের মাঝামাঝি সময়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত তিন আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গের কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিকাগোর এক গির্জার রেভারেন্ড মার্শাল হ্যাচের ৭৩ বছর বয়সী বড় বোন রোডা হ্যাচ আটদিন হাসপাতালে

থাকার পর মারা যান গত ৪ এপ্রিল। এর দুইদিন আগে রেভারেন্ড হ্যাচের সবচেয়ে কাছের বন্ধু ল্যারি হ্যাচও মারা যান কোভিড-১৯ এ।

তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। এছাড়া কয়েকদিনে রেভারেন্ড হ্যাচের খুব কাছের চারজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা যান। রেভারেন্ড হ্যাচে জানান, আফ্রিকান আমেরিকান

কৃষ্ণাঙ্গদের বসবাসের এলাকা হিসেবে পরিচিত ওয়েস্ট গারফিল্ড পার্কে তিনি বসবাস করেন। সেখানকার অনেকেই করোনায় আক্রান্ত।

আমেরিকায় ডেল্টার প্রকোপ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা পুনরায় চালুর কথা ভাবছেন স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা। যেসব এলাকার মানুষ টিকা নেননি বা নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন, সে সব এলাকায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে ডেল্টার সংক্রমণ।

সিডিসির তরফে বলা হয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এমন রোগীর ৯৭% টিকা নেয়নি। আর যারা মারা গিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৯৯% টিকাও গ্রহণ করেনি। এহেন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনীহা প্রকাশকারিরাও এখন টিকা নিতে গ্রহণে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

এটি অত্যন্ত আশার খবর যে সব মানুষের বোধোদয় ঘটেছে করোনার টিকা গ্রহণে-মন্তব্য সিডিসির। টিকা গ্রহণের জন্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান

জানিয়েছেন এবং বলেছেন, টিকা নিলে হাসপাতালে ভর্তি হবার প্রয়োজন নেই বলেও তিনি সার্বিক বিশ্লেষণের উদ্ধৃতি দিয়েছেন।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১২ জুলাই পর্যন্ত ১৫ কোটি ৯০ লাখ আমেরিকান পূর্ণ ডোজের টিকা নিয়েছেন। এরমধ্যে মাত্র ৫৪৯২ জন পুনরায় সংক্রমিত হয়েছেন এবং মারা গিয়েছেন ১০৬৩ জন। টিকা গ্রহণকারির মধ্যে মৃত্যুর এই হার ০.০০০৭%।