ঢাকা ০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ই-সিগারেট নিষিদ্ধের দাবি জানালো ২২ সংগঠন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৫:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ৩২১ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশেষজ্ঞদের মতে ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর নয়, বরং খুবই ক্ষতিকর একটি পণ্য

ই-সিগারেট/ভেপিং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি: নিষিদ্ধ জরুরি শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা ছবি: সংগৃহীত

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় দেশে ই-সিগারেট বন্ধের দাবিতে সোচ্চার তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত ২২টি সংগঠন। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই তোলা হয়।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ই-সিগারেট/ভেপিং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি: নিষিদ্ধ জরুরি শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে আহ্বান জানায় সংগঠনগুলো।

সংগঠনের তরফে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনের সংশোধনী প্রস্তাবে ই-সিগারেটের প্রচার, প্রসার, আমদানি, রফতানি, পরিবেশন, বিপণন নিষিদ্ধের প্রস্তাব দেয়ার পরও কয়েকটি বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানি বিভিন্ন উপায়ে ক্ষতিকর এ পণ্যের প্রচারে নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করছে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম সংকটের কারণ হতে পারে।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ভোক্তাদের আধুনিক জীবনধারার কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, নতুন কিছু আর্ন্তজাতিক মানের পণ্যের আমদানি করার অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়েছে বিদেশি সিগারেট কোম্পানি বিএটি।

তাদের এ ধরনের চেষ্টা দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। গণমানুষের কথা চিন্তা করে অতিদ্রুত ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, ‘কম ক্ষতিকর’ পরিভাষা ব্যবহার করে তামাক কোম্পানিগুলো তরুণ-যুবক এবং ধূমপায়ীদের ই-সিগারেটে আকৃষ্ট করছে। ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর নয়, বরং খুবই ক্ষতিকর একটি পণ্য।

ই-সিগারেটের ব্যবহার ও বাজার সম্প্রসারণের জন্য কোম্পানিগুলো ভ্যাপিং উৎসবের আয়োজন করছে, যা যুবসমাজকে নতুনভাবে অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী এর স্বপক্ষে বিভিন্ন মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান এই ক্যানসার বিষেশজ্ঞ।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এপিডেমোলজি বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়ায় ই-সিগারেট বন্ধের সুপারিশ করেছে।

দেশের প্রায় ১৫০ জনের বেশি সংসদ সদস্য ই-সিগারেট বন্ধের সুপারিশ করেছে এবং সরকার তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত ই-সিগারেটের প্রচার ও প্রসার খুব বেশি বৃদ্ধি পায়নি। এ অবস্থায় এখনই ই-সিগারেটের লাগাম টেনে না ধরলে পরবর্তীতে আইন করেও একে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো এরইমধ্যে ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর এবং এটি ধূমপান ছাড়তে সহায়ক হিসেবে তাদের মিথ্যা প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে।

ঢাকা আহসানিয়া মিশনের পরিচালক (হেলথ এন্ড ওয়াস) ইকবাল মাসুদ বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য (ব্যবহার) নিয়ন্ত্রণ আইন- ২০০৫ অনুসারে তামাক কোম্পানির সিএসআর এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্রচার নিষিদ্ধ।

কিন্তু সিগারেট কোম্পানি গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংস্থাকে ব্যবহার করে শুধু আইনভঙ্গই করছে না, ই-সিগারেট প্রমোশনের চেষ্টা করছে।

গবেষণার বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, একটি বিদেশি সিগারেট কোম্পানি বিএটি ই-সিগারেট প্রসারের লক্ষ্যে গোপনে কাজ করছে এবং ঢাকায় তাদের সহযোগিতায় পরিচালিত প্রায় ৩০ টিরও বেশি ই-সিগারেট দোকান পাওয়া গিয়েছে।

প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ বলেন, দেশের মানুষকে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত করে সরকারের ওপর চিকিৎসার দায় বাড়িয়ে সিগারেট কোম্পানিগুলো মুনাফার পাহাড় গড়ছে। প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার দেশের বাইরে নানাভাবে পাচার করছে এ সিগারেট কোম্পানি।

এ লাভে তারা তুষ্ট নয়, এদেশের মানুষকে আরও বেশি সিগারেটে আক্রান্ত করে, আরো মুনাফার পাহাড় গড়তে ই-সিগারেট/ভেপিং বাজার সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে।

মানস-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. অরুপ রতন চৌধূরী বলেন, সরকারের তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এসডিজি অর্জনের অঙ্গীকার, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সংবিধানিক দায়বদ্ধতা, আদালতের নির্দেশনার পরও সিগারেট কোম্পানিগুলো এ দেশে আইন লঙ্ঘন করে ব্যবসা করছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন টিসিআরসির প্রোগ্রাম অফিসার ফারহানা জামান লিজা, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, ডাসের উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ই-সিগারেট নিষিদ্ধের দাবি জানালো ২২ সংগঠন

আপডেট সময় : ১১:৫৫:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

বিশেষজ্ঞদের মতে ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর নয়, বরং খুবই ক্ষতিকর একটি পণ্য

ই-সিগারেট/ভেপিং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি: নিষিদ্ধ জরুরি শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা ছবি: সংগৃহীত

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় দেশে ই-সিগারেট বন্ধের দাবিতে সোচ্চার তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত ২২টি সংগঠন। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই তোলা হয়।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ই-সিগারেট/ভেপিং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি: নিষিদ্ধ জরুরি শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে আহ্বান জানায় সংগঠনগুলো।

সংগঠনের তরফে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনের সংশোধনী প্রস্তাবে ই-সিগারেটের প্রচার, প্রসার, আমদানি, রফতানি, পরিবেশন, বিপণন নিষিদ্ধের প্রস্তাব দেয়ার পরও কয়েকটি বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানি বিভিন্ন উপায়ে ক্ষতিকর এ পণ্যের প্রচারে নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করছে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম সংকটের কারণ হতে পারে।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ভোক্তাদের আধুনিক জীবনধারার কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, নতুন কিছু আর্ন্তজাতিক মানের পণ্যের আমদানি করার অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়েছে বিদেশি সিগারেট কোম্পানি বিএটি।

তাদের এ ধরনের চেষ্টা দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। গণমানুষের কথা চিন্তা করে অতিদ্রুত ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, ‘কম ক্ষতিকর’ পরিভাষা ব্যবহার করে তামাক কোম্পানিগুলো তরুণ-যুবক এবং ধূমপায়ীদের ই-সিগারেটে আকৃষ্ট করছে। ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর নয়, বরং খুবই ক্ষতিকর একটি পণ্য।

ই-সিগারেটের ব্যবহার ও বাজার সম্প্রসারণের জন্য কোম্পানিগুলো ভ্যাপিং উৎসবের আয়োজন করছে, যা যুবসমাজকে নতুনভাবে অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী এর স্বপক্ষে বিভিন্ন মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান এই ক্যানসার বিষেশজ্ঞ।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এপিডেমোলজি বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়ায় ই-সিগারেট বন্ধের সুপারিশ করেছে।

দেশের প্রায় ১৫০ জনের বেশি সংসদ সদস্য ই-সিগারেট বন্ধের সুপারিশ করেছে এবং সরকার তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত ই-সিগারেটের প্রচার ও প্রসার খুব বেশি বৃদ্ধি পায়নি। এ অবস্থায় এখনই ই-সিগারেটের লাগাম টেনে না ধরলে পরবর্তীতে আইন করেও একে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো এরইমধ্যে ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর এবং এটি ধূমপান ছাড়তে সহায়ক হিসেবে তাদের মিথ্যা প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে।

ঢাকা আহসানিয়া মিশনের পরিচালক (হেলথ এন্ড ওয়াস) ইকবাল মাসুদ বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য (ব্যবহার) নিয়ন্ত্রণ আইন- ২০০৫ অনুসারে তামাক কোম্পানির সিএসআর এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্রচার নিষিদ্ধ।

কিন্তু সিগারেট কোম্পানি গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংস্থাকে ব্যবহার করে শুধু আইনভঙ্গই করছে না, ই-সিগারেট প্রমোশনের চেষ্টা করছে।

গবেষণার বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, একটি বিদেশি সিগারেট কোম্পানি বিএটি ই-সিগারেট প্রসারের লক্ষ্যে গোপনে কাজ করছে এবং ঢাকায় তাদের সহযোগিতায় পরিচালিত প্রায় ৩০ টিরও বেশি ই-সিগারেট দোকান পাওয়া গিয়েছে।

প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ বলেন, দেশের মানুষকে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত করে সরকারের ওপর চিকিৎসার দায় বাড়িয়ে সিগারেট কোম্পানিগুলো মুনাফার পাহাড় গড়ছে। প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার দেশের বাইরে নানাভাবে পাচার করছে এ সিগারেট কোম্পানি।

এ লাভে তারা তুষ্ট নয়, এদেশের মানুষকে আরও বেশি সিগারেটে আক্রান্ত করে, আরো মুনাফার পাহাড় গড়তে ই-সিগারেট/ভেপিং বাজার সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে।

মানস-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. অরুপ রতন চৌধূরী বলেন, সরকারের তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এসডিজি অর্জনের অঙ্গীকার, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সংবিধানিক দায়বদ্ধতা, আদালতের নির্দেশনার পরও সিগারেট কোম্পানিগুলো এ দেশে আইন লঙ্ঘন করে ব্যবসা করছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন টিসিআরসির প্রোগ্রাম অফিসার ফারহানা জামান লিজা, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, ডাসের উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।