ঢাকা ১২:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়াই করে যাবে বিএজেপি: রফিকুল আমীন নিবন্ধন পেতে রোববার ইসিতে আবেদন করবে বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি যোগব্যায়াম দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আত্মীয়তার স্থায়ী বন্ধন ইরানের সমর্থনে তেহরান-বাগদাদ-বৈরুতের রাজপথে মানবঢল ইরানে হামলা: ইসরায়েলকে দিয়ে নোংরা কাজ করাচ্ছেন ট্রাম্প ইরান ইস্যুতে হস্তক্ষেপ ভয়াবহ পরিণতি, যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি রাশিয়ার মব ভায়োলেন্স বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি সেনাবাহিনীর  শর্মিষ্ঠা বিশ্বাস কবিতা: বর্ষা ঢুকেছে দেশে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চলানো নিয়ে ট্রাম্পের জরুরি বৈঠক ইউনূস-তারেক লন্ডন বৈঠক, রাজনীতে সুবাতাস

Sheikh Hasina : চলতি বছরের শেষ নাগাদ চালু হচ্ছে ‘পদ্মা সেতু’

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:২২:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ এপ্রিল ২০২২ ৩৬৬ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   : ছবি সংগৃহিত

‘৩১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে হেঁটেছেন। সড়কপথে গণভবন থেকে সরাসরি পদ্মাপাড়ে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী এবং ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে পদ্মা সেতুর ৭ নম্বর পিলার থেকে ১৮ নম্বর পিলার পর্যন্ত হেঁটে যান, সেতু এলাকা পরিদর্শন শেষে গণভবনের উদ্দেশে রওনা দেন’

আমিনুল হক, ঢাকা

আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ঘোষণা, এ বছরের শেষ নাগাদই চালু হতে যাচ্ছে ‘পদ্মা সেতু’। জাতীয় সংসদের আজ এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বছরের শেষ নাগাদ যান চলাচলের জন্য পদ্মাসেতু উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। বুধবার জাতীয় সংসদে শহীদুজ্জমান সরকার (নওগাঁ-২) প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী।

পদ্মা সেতু পরিদর্শনে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও  শেখ রেহানা  : ছবি সংগৃহিত

পদ্মা সেতু নিয়ে বাংলাদেশের আমজনতার যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। এই সেতুটি শুধু বাংলাদেশের উন্নয়নের মাইল ফল নয়। এটির সুবিধাভোগী হবেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষও। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ জনপদকেই যুক্ত করবে না, এটি চালুর মধ্য দিয়ে সময়-সাশ্রয়ী চলাচলের সক্ষমতা বাড়বে। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি।

পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান-এর ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ বাংলার গর্ব পদ্মাসেতু আকাশে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অহংকারের স্থাপনা।

সময়টা ২০০৬-০৭ সাল। পদ্মা নদীতে স্বপ্নে সেতু নির্মাণ করা হবে। এই মেগা প্রকল্প প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত থাকা কয়েকজন লোকের দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে সরে গিয়ে বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করে। এসময় অন্য দাতারাও বিশ্বব্যাংককে অনুসরণ করেন।

পদ্মা সেতু  : ছবি সংগৃহিত

এমন পরিস্থিতিতে তখনতকার যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রিসভা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। আর সচিব মোশারেফ হোসেন ভূইয়াকে জেলে পর্যন্ত যেতে হয়েছিল। পরবর্তীতে ভিত্তিহীন অভিযোগ কোন রকমের প্রমাণ মেলেনি। তাই কানাডিয়ান আদালত মামলাটি বাতিল করে দেন।

শুরুতেই কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিয়ে। এ অবস্থায় গোটা পৃথিবী অবাক করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরও অনেকেই এনিয়ে নানা রকমের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু সব সমালোচনার মুখে ছাই ঢেলে এবং পদ্মার চোখ রাঙানিকে কোন রকমের পরোয়া না করে ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু’ আজ বাস্তবেই মাথা উচু করে দাড়িয়ে। যার বুক চিড়ে যানচলাচলের অপেক্ষায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও  শেখ রেহানা  পদ্মা সেতু পরিদর্শন করেন : ছবি সংগৃহিত

পদ্মা সেতুতে থাকছে সড়ক ও রেল সেতু। পদ্মা সেতু ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকছে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ।

অঊঈঙগ এর নকশায় পদ্মা নদীর ওপর বহুমুখী আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প ‘পদ্মা বহুমুখী সেতুর’ নির্মাণ কাজ ২০১১ সালে শুরু হয়ে ২০১৩ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুরুতে সেতুতে রেললাইন যুক্ত করা হয়নি। শেখ হাসিনা সরকার রেলপথ যুক্ত করেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদ্মা সেতুতে কার্পেটিংয়ের কাজে শ্রমিকের ব্যস্ততা :  ছবি সংগৃহিত

পদ্মা সেতু প্রকল্পের উভয় প্রান্তে এপ্রোচ রোড ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূল সেতুর ভৌত অগ্রগতি অগ্রগতি ৯৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। বর্তমানে সেতুতে কার্পেটিং, ভায়াডাক্ট কাপের্টিং, ওয়াটারপ্রুফ মেমব্রেন, মুল সেতু ও ভায়াডাক্টের মুভমেন্ট জয়েন্ট, ল্যাম্পপোস্ট, অ্যালুমিনিয়াম রেলিং, গ্যাসের পাইপলাইন, ৪০০ কেভিএ বিদ্যুত এবং রেললাইন নির্মাণের কাজ চলমান। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

Sheikh Hasina : চলতি বছরের শেষ নাগাদ চালু হচ্ছে ‘পদ্মা সেতু’

আপডেট সময় : ০৭:২২:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ এপ্রিল ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   : ছবি সংগৃহিত

‘৩১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে হেঁটেছেন। সড়কপথে গণভবন থেকে সরাসরি পদ্মাপাড়ে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী এবং ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে পদ্মা সেতুর ৭ নম্বর পিলার থেকে ১৮ নম্বর পিলার পর্যন্ত হেঁটে যান, সেতু এলাকা পরিদর্শন শেষে গণভবনের উদ্দেশে রওনা দেন’

আমিনুল হক, ঢাকা

আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ঘোষণা, এ বছরের শেষ নাগাদই চালু হতে যাচ্ছে ‘পদ্মা সেতু’। জাতীয় সংসদের আজ এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বছরের শেষ নাগাদ যান চলাচলের জন্য পদ্মাসেতু উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। বুধবার জাতীয় সংসদে শহীদুজ্জমান সরকার (নওগাঁ-২) প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী।

পদ্মা সেতু পরিদর্শনে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও  শেখ রেহানা  : ছবি সংগৃহিত

পদ্মা সেতু নিয়ে বাংলাদেশের আমজনতার যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। এই সেতুটি শুধু বাংলাদেশের উন্নয়নের মাইল ফল নয়। এটির সুবিধাভোগী হবেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষও। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ জনপদকেই যুক্ত করবে না, এটি চালুর মধ্য দিয়ে সময়-সাশ্রয়ী চলাচলের সক্ষমতা বাড়বে। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি।

পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান-এর ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ বাংলার গর্ব পদ্মাসেতু আকাশে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অহংকারের স্থাপনা।

সময়টা ২০০৬-০৭ সাল। পদ্মা নদীতে স্বপ্নে সেতু নির্মাণ করা হবে। এই মেগা প্রকল্প প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত থাকা কয়েকজন লোকের দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে সরে গিয়ে বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করে। এসময় অন্য দাতারাও বিশ্বব্যাংককে অনুসরণ করেন।

পদ্মা সেতু  : ছবি সংগৃহিত

এমন পরিস্থিতিতে তখনতকার যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রিসভা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। আর সচিব মোশারেফ হোসেন ভূইয়াকে জেলে পর্যন্ত যেতে হয়েছিল। পরবর্তীতে ভিত্তিহীন অভিযোগ কোন রকমের প্রমাণ মেলেনি। তাই কানাডিয়ান আদালত মামলাটি বাতিল করে দেন।

শুরুতেই কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিয়ে। এ অবস্থায় গোটা পৃথিবী অবাক করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরও অনেকেই এনিয়ে নানা রকমের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু সব সমালোচনার মুখে ছাই ঢেলে এবং পদ্মার চোখ রাঙানিকে কোন রকমের পরোয়া না করে ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু’ আজ বাস্তবেই মাথা উচু করে দাড়িয়ে। যার বুক চিড়ে যানচলাচলের অপেক্ষায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও  শেখ রেহানা  পদ্মা সেতু পরিদর্শন করেন : ছবি সংগৃহিত

পদ্মা সেতুতে থাকছে সড়ক ও রেল সেতু। পদ্মা সেতু ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকছে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ।

অঊঈঙগ এর নকশায় পদ্মা নদীর ওপর বহুমুখী আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প ‘পদ্মা বহুমুখী সেতুর’ নির্মাণ কাজ ২০১১ সালে শুরু হয়ে ২০১৩ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুরুতে সেতুতে রেললাইন যুক্ত করা হয়নি। শেখ হাসিনা সরকার রেলপথ যুক্ত করেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদ্মা সেতুতে কার্পেটিংয়ের কাজে শ্রমিকের ব্যস্ততা :  ছবি সংগৃহিত

পদ্মা সেতু প্রকল্পের উভয় প্রান্তে এপ্রোচ রোড ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূল সেতুর ভৌত অগ্রগতি অগ্রগতি ৯৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। বর্তমানে সেতুতে কার্পেটিং, ভায়াডাক্ট কাপের্টিং, ওয়াটারপ্রুফ মেমব্রেন, মুল সেতু ও ভায়াডাক্টের মুভমেন্ট জয়েন্ট, ল্যাম্পপোস্ট, অ্যালুমিনিয়াম রেলিং, গ্যাসের পাইপলাইন, ৪০০ কেভিএ বিদ্যুত এবং রেললাইন নির্মাণের কাজ চলমান। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ চলছে।