dollar crisis : ২০টি ব্যাংকে এলসি খোলার ডলার সংকট

- আপডেট সময় : ০৮:৫০:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০২২ ১৭১ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
দেশের অন্তত ২০টি ব্যাংকের কাছে ঋণপত্র (এলসি) দায় মেটানোর মতো ডলার নেই। অনেক ব্যাংক খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি খোলাও বন্ধ রেখেছে। আমদানি দায় পরিশোধ করতে গিয়েই ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকগুলো। প্রবাস (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি আয় থেকে আসা ডলার দিয়েও নিজেদের আমদানি দায় এবং গ্রাহকদের বিদেশি ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২৫ অক্টোবরের তথ্যে এই চিত্র ওঠে এসেছে।
যে কয়েকটি ব্যাংকের কোষাগারে এখনও ডলার রয়েছে, সেগুলোও কমে আসছে। ডলার সংকটের কারণে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে আন্ত:ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রাবাজার।
অগ্রণী ব্যাংকের অনুমোদিত ডলার সংরক্ষণের ক্ষমতা ৫২ মিলিয়ন বা পাঁচ কোটি ২০ লাখ ডলার। আমদানি দায় পরিশোধের পরও এ পরিমাণ ডলার নিজেদের হিসাবে সংরক্ষণ করতে পারে ব্যাংকটি। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকটির কাছে বর্তমানে দায় মেটানোর মতো কোনো ডলারই নেই। উল্টো ঘাটতি ছাড়িয়ে ২৫৬ মিলিয়ন ডলার। যা কিনা মেটানো হয়েছে গ্রাহকদের হিসাবে থাকা ডলার ভাঙিয়ে। সংকটের কারণে যথাসময়ে ঋণপত্রের (এলসি) দায়ও পরিশোধ করতে পারছে না অগ্রণী ব্যাংক।
অগ্রণী ব্যাংকের আগস্ট মাসে ব্যাংকের আমদানি ব্যবসার পরিমাণ ছিল ৪৪ হাজার ৬৭৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ১৫৯.৫৫ শতাংশ। অন্যদিকে রপ্তানি ব্যবসার পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৮২৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৬৭.৫৭ শতাংশ। তা ছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কমার্শিয়াল এবং সাইট এলসিসহ ‘এড কনফার্ম’ এলসি খোলা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয় এক বৈঠকে।

দেশের মোট রেমিট্যান্সপ্রবাহের প্রায় ৩০ শতাংশই আসে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। আবার রপ্তানি আয়ের দিক থেকেও ব্যাংকটির অবস্থান সবার শীর্ষে। তার পরও আমদানি দায় পরিশোধ নিয়ে বিপদে রয়েছে ব্যাংকটি। সম্প্রতি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, মাশরেক, এডিসিবি, অ্যাক্সিস ব্যাংকের বেশ কিছু এলসি দায় নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করতে পারেনি ইসলামী ব্যাংক। কোনো কোনো এলসি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ৩০ দিন পর্যন্ত বিলম্ব হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও ব্যাংকটির হিসাবে এখনো প্রায় ৮৮ মিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত রয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংক এরই মধ্যে অনেক এলসি দায় পরিশোধে বিলম্ব করেছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ছাড়াও ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ কমার্জ ব্যাংকের এলসি দায় পরিশোধে বিলম্ব করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংকসহ দেশের এক ডজন ব্যাংকের বিরুদ্ধে এলসি দায় বিলম্বে পরিশোধের অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ডলার ঘাটতিতে রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকের ঘাটতির পরিমাণ ২৫৬ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া এক্সিম ব্যাংক ৮৮ মিলিয়ন, ঢাকা ব্যাংক ৬৮, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৬৪, ইউসিবিএল ৪৯, দ্য সিটি ব্যাংক ৪৭, পূবালী ব্যাংক ৪৫, প্রাইম ব্যাংক ৪২ ও সাউথইস্ট ব্যাংক ৪১ মিলিয়ন ডলার ঘাটতিতে রয়েছে। ইস্টার্ন ব্যাংকের ঘাটতির পরিমাণ ৩৫ মিলিয়ন ডলার। মার্কেন্টাইল ব্যাংক ৩৪, ওয়ান ব্যাংক ৩২, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ২৭, ন্যাশনাল ব্যাংক ২৪, ব্যাংক এশিয়া ১৪ ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ১১ মিলিয়ন ডলার ঘাটতিতে রয়েছে। আট মিলিয়ন ডলার করে ঘাটতিতে রয়েছে ট্রাস্ট, ব্র্যাক ও এনসিসি ব্যাংক। বিদেশি খাতের কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনেও চার মিলিয়ন ডলার ঘাটতি রয়েছে।