ঢাকা ১২:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ANAMIKA : বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া  প্রতিমা শিল্পী অনামিকা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:১৬:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ অক্টোবর ২০২২ ১৮৩ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অনামিকা

 

অনিরুদ্ধ

দুই বছর পর জমজমাট শারদ উৎসবে গা ভাসিয়েছে মানুষ। পুরাতন ঢাকার তাতি বাজারে বাসিন্দা ানামিকা নন্দি জীবন সংগ্রামী প্রতিমা শিল্পী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া আনামিকা নন্দিই জানা মতে ঢাকার একমাত্র নারী ভাস্কর শিল্পী। বাবা সুশীল নন্দি আচমকা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াবন্ধ হয়ে মারা গেলে অনামিকাই সংসারের হাল ধরেন। মূর্তি গড়েন এবং লেখাপড়াও চালিয়ে যান। পুজোর রিপোর্ট করতে গিয়েই নারী শিল্পীর দেখা। আপন মনে কাজ করে চলেছেন। কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রথম কথা মত দেননি। অনুরোধের পর কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া প্রতিমা শিল্পী অনামিকা নন্দি।

প্রতিমা শিল্পী হিসাবে বাবা বেশ নামযশ ছিল। হাঠৎ বাবার মৃত হলে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে একমাসন্তান অনামিকার। সংসার ও লেখাপড়ার খচরা সব কিছুর দায়িত্ব তাকে নিতে হয়। অভিজ্ঞতা বলতে বাবার সঙ্গে মাঝে মধ্যে মূর্তি গড়ায় হাত লাগানো এবং আর্শিবাদই সম্ভব।

অনামিকা জানেন, বাবা যখন মারা যান তখন আমার পরীক্ষা চলছি। পরদিন পরীক্ষা। বলতে পারেন বাবার মরদেহ সৎকারে পাঠিয়ে পরীক্ষার টেবিলে বসতে হয়েছে আমাকে। এবার একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিলেন অনামিকা। তারপর বললেন, সুশীল নন্দি যে নামটি দরজায় দেখতে পাচ্ছেন, তিনি আমার বাবা। দরজায় লেখা এই নামটি আজ আমাদের স্মৃতি।

কাতর কণ্ঠে আনামিকা বললেন, গত মার্চ মাসে বাবা গত হয়েছেন। একমাত্র সন্তান হিসেবে সংসারের দায়িত্ব আমার। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রতিমা গড়ার কাজে হাত লাগিয়েছেন। এবারের পুজোর প্রতিমা গড়ার কাজ নিয়ে অনেকেই আসেন, কিন্তু লেখাপড়ার পাশাপাশি কুলিয়ে ওঠা মুশকিল পারব না বলে একটি প্রতিমা গড়ার কাজ নিয়েছি। নারীরা প্রতিমা গড়ার কাজে আসছেন না, এটা কি নিরাপত্তা বা সামাজিক বাধার কারণ? অনামিকা বলেন, নিরাপত্তা বা সামাজিক কোন বাধাই ইচ্ছের চেয়ে বেশি শক্তিশালী নয়।

হাজারো বাধার প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে বহু মানুষ কাজ করেছে চলেছেন। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে না পারলেতো আমাদের সফলতা আসবেনা। নারীরা বিমান চালাচ্ছেন, মহাকাশে যাচ্ছেন, রেল চালাচ্ছেন, সেখানে প্রতিমা গড়াতো ঠুনকো বিষয়। কাজ করতে গিয়ে সবার সহযোগিতা চাই এবং লেখাপড়ার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হবার ইচ্ছে রয়েছে অনামিকার নন্দির।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published.

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ANAMIKA : বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া  প্রতিমা শিল্পী অনামিকা

আপডেট সময় : ০৬:১৬:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ অক্টোবর ২০২২

অনামিকা

 

অনিরুদ্ধ

দুই বছর পর জমজমাট শারদ উৎসবে গা ভাসিয়েছে মানুষ। পুরাতন ঢাকার তাতি বাজারে বাসিন্দা ানামিকা নন্দি জীবন সংগ্রামী প্রতিমা শিল্পী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া আনামিকা নন্দিই জানা মতে ঢাকার একমাত্র নারী ভাস্কর শিল্পী। বাবা সুশীল নন্দি আচমকা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াবন্ধ হয়ে মারা গেলে অনামিকাই সংসারের হাল ধরেন। মূর্তি গড়েন এবং লেখাপড়াও চালিয়ে যান। পুজোর রিপোর্ট করতে গিয়েই নারী শিল্পীর দেখা। আপন মনে কাজ করে চলেছেন। কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রথম কথা মত দেননি। অনুরোধের পর কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া প্রতিমা শিল্পী অনামিকা নন্দি।

প্রতিমা শিল্পী হিসাবে বাবা বেশ নামযশ ছিল। হাঠৎ বাবার মৃত হলে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে একমাসন্তান অনামিকার। সংসার ও লেখাপড়ার খচরা সব কিছুর দায়িত্ব তাকে নিতে হয়। অভিজ্ঞতা বলতে বাবার সঙ্গে মাঝে মধ্যে মূর্তি গড়ায় হাত লাগানো এবং আর্শিবাদই সম্ভব।

অনামিকা জানেন, বাবা যখন মারা যান তখন আমার পরীক্ষা চলছি। পরদিন পরীক্ষা। বলতে পারেন বাবার মরদেহ সৎকারে পাঠিয়ে পরীক্ষার টেবিলে বসতে হয়েছে আমাকে। এবার একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিলেন অনামিকা। তারপর বললেন, সুশীল নন্দি যে নামটি দরজায় দেখতে পাচ্ছেন, তিনি আমার বাবা। দরজায় লেখা এই নামটি আজ আমাদের স্মৃতি।

কাতর কণ্ঠে আনামিকা বললেন, গত মার্চ মাসে বাবা গত হয়েছেন। একমাত্র সন্তান হিসেবে সংসারের দায়িত্ব আমার। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রতিমা গড়ার কাজে হাত লাগিয়েছেন। এবারের পুজোর প্রতিমা গড়ার কাজ নিয়ে অনেকেই আসেন, কিন্তু লেখাপড়ার পাশাপাশি কুলিয়ে ওঠা মুশকিল পারব না বলে একটি প্রতিমা গড়ার কাজ নিয়েছি। নারীরা প্রতিমা গড়ার কাজে আসছেন না, এটা কি নিরাপত্তা বা সামাজিক বাধার কারণ? অনামিকা বলেন, নিরাপত্তা বা সামাজিক কোন বাধাই ইচ্ছের চেয়ে বেশি শক্তিশালী নয়।

হাজারো বাধার প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে বহু মানুষ কাজ করেছে চলেছেন। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে না পারলেতো আমাদের সফলতা আসবেনা। নারীরা বিমান চালাচ্ছেন, মহাকাশে যাচ্ছেন, রেল চালাচ্ছেন, সেখানে প্রতিমা গড়াতো ঠুনকো বিষয়। কাজ করতে গিয়ে সবার সহযোগিতা চাই এবং লেখাপড়ার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হবার ইচ্ছে রয়েছে অনামিকার নন্দির।