৯জুন থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের

- আপডেট সময় : ০৮:৫৩:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুন ২০২১ ২২০ বার পড়া হয়েছে
ছবি সংগৃহিত
সীমান্ত লাগোয়া এলাকাটিতে ইদানিং করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া দুশ্চিন্তায় রয়েছেন প্রশাসন ও ব্যবসায়ী মহল। এর প্রেক্ষিতে বন্দরে ভারতীয় ট্রাক চালকদের করোনা টিকার নেগেটিভ কার্ড, দিনে ৫০ ট্রাক পণ্য আমদানি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে আমদানি-রপ্তানি চালুর সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি চিঠি দিয়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জানানো হয়। কিন্তু এমন শর্ত মানতে নারাজ ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। তারা চান স্বাভাবিক সময়ের মতোই তাদের ট্রাক চালকদের যাতায়ত করতে দিতে হবে। তাহলে বুধবার থেকে পণ্য রপ্তানি রন্ধ করে দেবেন তারা।

হিলি স্থল বন্দরের ভারত-বাংলাদেশের যেন গলাজড়িয়ে বসবাসের মতোই। উভয় দিকে রয়েছে দিনাজপুর। ভারতে পশ্চিমবঙ্গে যুক্ত হবে কেবল দক্ষিণ শব্দটি। বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার সীমান্ত লাগোয় একটি গ্রাম। ১৯৮৬ সালে হিলি স্থল বন্দর প্রতিষ্ঠা পায়। ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগের সময় গ্রামটি মাঝ দিয়ে দ্বিখন্ডিত হয়। এর পূর্ব অংশ বাংলাদেশ ও পশ্চিম অংশ ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর।
রেল স্টেশন ও বাজার পড়েছে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আর বসবাসের বাড়ীঘর পড়েছে ভারতে। বর্তমানে এই সীমান্ত দিয়ে দুই দেশের মানুষ যাতায়াতের পাশাপাশি চালু রয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। হিলি হচ্ছে ব্যস্ততম স্থল বন্দরের একটি। বিভিন্ন পণ্য ছাড়াও বন্দর দিয়ে প্রতিদিন শ’ শ’ পাথর বোঝাই ট্রাক বাংলাদেশে আসে।
সীমান্ত লাগোয়া এলাকাটিতে ইদানিং করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া দুশ্চিন্তায় রয়েছেন প্রশাসন ও ব্যবসায়ী মহল। এর প্রেক্ষিতে বন্দরে ভারতীয় ট্রাক চালকদের করোনা টিকার নেগেটিভ কার্ড, দিনে ৫০ ট্রাক পণ্য আমদানি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে আমদানি-রপ্তানি চালুর সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি চিঠি দিয়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জানানো হয়। কিন্তু এমন শর্ত মানতে নারাজ ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। তারা চান স্বাভাবিক সময়ের মতোই তাদের ট্রাক চালকদের যাতায়ত করতে দিতে হবে। তাহলে বুধবার থেকে পণ্য রপ্তানি রন্ধ করে দেবেন তারা।
বাংলাদেশের একক সিদ্ধান্তে অপমানবোধ করেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। তারা উল্টো স্বাভাবিক সময়ের মতোই ট্রাক চালকদের বাংলাদেশে প্রবেশ, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আমদানি/রফতানি কার্যক্রম চালানো, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের এবং অন্যান্য স্থলবন্দরের মত হিলি বন্দরেও গাড়ি স্বাভাবিক চলাচলের সুযোগ দেওয়া না হলে, আগামী বুধবার থেকে হিলি বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি বন্ধের কথা জানিয়ে দেন।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন সোমবার সংবাদমাধ্যমকে জানান, হিলি এলাকায় দিন দিন করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সংক্রমণ রোধে সরকারের নির্দেশনা মেনে সীমিত পরিসরে আমদানি কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্তের বিষয়টি ভারতীয় ব্যবসায়ীদের চিঠি পাঠিয়ে অবহিত করা হয়।
কিন্তু শর্ত মানতে নারাজ তারা। চারটি শর্তজুড়ে দিয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এসব শর্ত বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা যদি মেনে না নেন, তাহলে বুধবার থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য রফতানি পণ্য রফতানি বন্ধ রাখবেন তারা।
এ বিষয়ে হাকিমপুুর পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দিনাজপুরের হিলি একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। আমরা ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে বার বার তাগাদা দিচ্ছি। কিন্তু তারা মানতে নারাজ। তিনি জানান, আমরা আতঙ্কিত। কেননা বৈধ পাসপোর্ট যাত্রীরা হিলি ইমিগ্রেশন দিয়ে ৭২ ঘণ্টার করোনার নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে প্রবেশের পরেও এন্টিজেন টেস্টে তাদের করোনা পজিটিভ রেজাল্ট মিলছে! করোনার নেগেটিভ সনদ নিয়ে ভারতীয় ট্রাক চালকরা বাংলাদেশে প্রবেশের মধ্য দিয়ে করোনা সংক্রমণ ছড়াবে না তার নিশ্চয়তা কি?