৪ মাসে মসজিদের দানবাক্সে ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা

- আপডেট সময় : ১০:০৯:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ ২৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ। পাগলা মসজিদ এবং ইসলামিক কমপ্লেক্সটি কিশোরগঞ্জ জেলার নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত। তিন তলা মসজিদটির একটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে। এই কমপ্লেক্সটি ১.৫৭ হেক্টর (৩.৮৮ একর) জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। ১০ মে ১৯৭৯ সাল থেকে জেলা ওয়াকফ মসজিদটি পরিচালনা করে আসছে।
জনশ্রুতি রয়েছে, এই অঞ্চলের হাইবতনগর জমিদার পরিবারের ঈসা খানের বংশধর দেওয়ান জিল কাদর খান ওরফে জিল কাদর পাগলা সাহেব নামে একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব নরসুন্দা নদীর তীরে নামাজ পড়তেন।
পরে, এই স্থানে একটি মসজিদ নির্মিত হয়। জিল কাদর পাগলার নামানুসারে মসজিদটি পাগলা মসজিদ নামে পরিচিতি পায়। অন্য একটি জনশ্রুতি অনুসারে, কিশোরগঞ্জের তৎকালীন হাইবতনগর জমিদার পরিবারের পাগলা বিবির নামানুসারে মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছিল।
এই পাগলা মসজিদে সাধারণ মানুষের দান প্রতিবারই রেকর্ড গড়ে। এবার চারমাস খোলার পর দেখা গেলো দানকৃত অর্থ এ যাবকালের সর্বচ্চ নজির।
বাক্সগুলোতে ২৮টি বস্তা টাকা পাওয়া গেছে।
টাকা গণনা শেষে ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও স্বর্ণ ও রূপাসহ বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও পাওয়া গেছে।
শনিবার সন্ধ্যার আগে গণনা শেষে দানের টাকার এ হিসাব পাওয়া যায়। এর আগে এদিন সকালে পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্স (সিন্দুক) খোলা হয়। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনার কাজ এবং সন্ধ্যার আগে টাকা গণনার কাজ শেষ হয়।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার
(এসপি) মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন লোকজনর উপস্থিত ছিলেন।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
টাকা গণনা কাজে পাগলা মসজিদ মাদরাসা, আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদরাসার ২৫০ জন ছাত্র, রূপালী ব্যাংকের ৭০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেন। এছাড়াও সার্বিক তদারকি ও নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, সেনা সদস্য, পুলিশ সদস্য ও আনসার সদস্যরা।
সাধারণত তিন মাস পর পর পাগলা মসজিদের দানবাক্স (সিন্দুক) খোলা হয়। এবার চার মাস ১২ দিন পর দানবাক্স (সিন্দুক) খোলা হয়েছে।
সর্বশেষ গত বছরের ৩০ নভেম্বর মসজিদের দান বাক্স খুলে গণনা করে ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও স্বর্ণ ও রূপাসহ বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও পাওয়া গেছে।
সবমিলিয়ে মসজিদ ফান্ডে ৮০ কোটি ৭০ লাখ টাকা রয়েছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে আনুমানিক চার একর জায়গায় ‘পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স’ অবস্থিত। প্রায় আড়াইশ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে ইতিহাস সূত্রে জানা যায়। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক কাহিনি প্রচলিত আছে, যা ভক্ত ও মুসল্লিদের আকর্ষণ করে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস রয়েছে, এখানে মানত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। আর এ কারণেই মূলত দূর-দূরান্তের মানুষও এখানে মানত করতে আসেন