২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় শহীদ সেনা দিবস

- আপডেট সময় : ০৯:২৪:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৫০ বার পড়া হয়েছে
পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ডের মর্মান্তিক দিনটি স্মরণ রাখতে ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়।
পরিপত্রে বলা হয়, সরকার প্রতিবছর ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং দিবসটিকে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস (সরকারি ছুটি ছাড়া) হিসেবে পালন করা হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবরের ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণের সিদ্ধান্ত নেয়।
পরিপত্রে এই সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে প্রতিপালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় পিলখানায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) দরবার হলে শুরু হয় দরবার। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিডিআর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ বক্তব্য দিতে শুরু করেন।
বক্তব্যের একপর্যায়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিডিআরের কিছু বিদ্রোহী সদস্য অতর্কিত হামলা চালায় দরবার হলে। নানা নাটকীয়তায় পিলখানার চার দেয়ালের ভেতরের নৃশংস এই হত্যাযজ্ঞ বুঝতে সময় লেগে যায় আরও দুইদিন।

পরদিন রাতে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে প্রায় ৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের অবসান ঘটলে পিলখানার নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ। ২৭ ফেব্রুয়ারি পিলখানার ভেতরে সন্ধান মেলে একাধিক গণকবরের। সেখানে পাওয়া যায় বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, তার স্ত্রীসহ সেনা কর্মকর্তাদের মরদেহ। উদ্ধার করা হয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রেনেডসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র।
সেদিনের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের পর ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিডিআরের সাবেক ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
বিদ্রোহের আগের দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে তিন দিনব্যাপী রাইফেলস সপ্তাহের উদ্বোধন করেন গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়া ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। সে সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা ছিল রাইফেলস সপ্তাহের তিন দিনের বর্ণিল আয়োজন। কিন্তু তার আগেই ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর জওয়ানদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে রচিত হয় ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায়।
আদালতে প্রত্যক্ষদর্শী অফিসার ও সৈনিকদের জবানবন্দিতে সেদিনের ভয়াবহ চিত্রের বর্ণনা পাওয়া যায়। ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, জওয়ানদের একটি দল সকাল ৯টার কিছু আগে অস্ত্রাগারে গিয়ে সেখানে দায়িত্বরত এক মেজরকে জিম্মি করে অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করে। সেখানে দায়িত্বরত কোনো বিডিআর সদস্য তাতে বাধা দেননি।