ঢাকা ০৫:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাসিনা সরকারের করা হয়রানিমূলক ১০ হাজার মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৫০:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫ ৬৯ বার পড়া হয়েছে

হাসিনা সরকারের করা হয়রানিমূলক ১০ হাজার মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পতিত হাসিনা আমলে করা হয়রানীমূলক ১০ হাজারের অধিক মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার। এসব মামলা যাচাই-বাচাইয়ের জন্য জেলা পর্যায়ে ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দু’টি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্র বলছে, নাশকতা ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তথা ২৯ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত সকল হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখার কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এ পর্যন্ত সারা দেশে সাড়ে ১০ হাজার মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্ব স্ব জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে পত্র মারফত মামলার নম্বর উল্লেখ করে জেলা পাবলিক প্রসিকিউটরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে। জেলা ম্যাজিসেট্রটকে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৪৯৪ ধারার আওতায় এই মামলাগুলো প্রত্যাহার করে না চালানোর জন্য সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

জেলা পর্যায়ের কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকবেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সদস্যসচিব অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং সদস্য পুলিশ সুপার (মহানগর এলাকার জন্য পুলিশের একজন ডেপুটি কমিশনার) ও পাবলিক প্রসিকিউটর (মহানগর এলাকার মামলাগুলোর জন্য মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর)।

জেলা কমিটির কাছে যদি মনে হয় মামলাটি রাজনৈতিক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য করা হয়েছে, তাহলে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য কমিটি সরকারের কাছে সুপারিশ করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সেই সুপারিশ, মামলার এজাহার, অভিযোগপত্রসহ আবেদন পাওয়ার ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে নির্দিষ্ট ছক অনুযায়ী তথ্যাদিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। ব্যক্তি পর্যায়েও আবেদন করা যাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়য়ের সিনিয়র সচিব অথবা আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর বরাবরেও আবেদন নেওয়া হচ্ছে।

সেই আবেদনগুলো যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তালিকা তৈরি করবে। এরপর আইন উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে রেজুলেশন আকারে অনুমোদন হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফেরত পাঠানো হয়। জেলা পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জেলা কমিটির কাছ থেকে সুপারিশপ্রাপ্তির পর মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। প্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তত করবে এবং মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

তবে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর আওতাধীন মামলাগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো দ্য ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৪ এর ১০(৪) ধারার বিধানমতে কমিশনের লিখিত আদেশ ছাড়া প্রত্যাহার করা যায় না বিধায় এ ধরনের মামলা চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করতে হবে। এ ধরনের মামলার বিষয়ে করণীয় পরে নির্ধারণ করা হবে। মন্ত্রক পর্যায়ের কমিটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন জননিরাপত্তা বিভাগের আইন-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব। আর সদস্য হিসেবে থাকছেন জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, অতিরিক্ত সচিব (আইন ও শৃঙ্খলা) ও যুগ্ম সচিব (আইন) এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি (যুগ্ম সচিব পর্যায়ের নিচে নয়)।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

হাসিনা সরকারের করা হয়রানিমূলক ১০ হাজার মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে

আপডেট সময় : ০৭:৫০:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

পতিত হাসিনা আমলে করা হয়রানীমূলক ১০ হাজারের অধিক মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার। এসব মামলা যাচাই-বাচাইয়ের জন্য জেলা পর্যায়ে ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দু’টি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্র বলছে, নাশকতা ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তথা ২৯ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত সকল হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখার কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এ পর্যন্ত সারা দেশে সাড়ে ১০ হাজার মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্ব স্ব জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে পত্র মারফত মামলার নম্বর উল্লেখ করে জেলা পাবলিক প্রসিকিউটরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে। জেলা ম্যাজিসেট্রটকে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৪৯৪ ধারার আওতায় এই মামলাগুলো প্রত্যাহার করে না চালানোর জন্য সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

জেলা পর্যায়ের কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকবেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সদস্যসচিব অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং সদস্য পুলিশ সুপার (মহানগর এলাকার জন্য পুলিশের একজন ডেপুটি কমিশনার) ও পাবলিক প্রসিকিউটর (মহানগর এলাকার মামলাগুলোর জন্য মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর)।

জেলা কমিটির কাছে যদি মনে হয় মামলাটি রাজনৈতিক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য করা হয়েছে, তাহলে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য কমিটি সরকারের কাছে সুপারিশ করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সেই সুপারিশ, মামলার এজাহার, অভিযোগপত্রসহ আবেদন পাওয়ার ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে নির্দিষ্ট ছক অনুযায়ী তথ্যাদিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। ব্যক্তি পর্যায়েও আবেদন করা যাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়য়ের সিনিয়র সচিব অথবা আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর বরাবরেও আবেদন নেওয়া হচ্ছে।

সেই আবেদনগুলো যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তালিকা তৈরি করবে। এরপর আইন উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে রেজুলেশন আকারে অনুমোদন হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফেরত পাঠানো হয়। জেলা পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জেলা কমিটির কাছ থেকে সুপারিশপ্রাপ্তির পর মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। প্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তত করবে এবং মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

তবে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর আওতাধীন মামলাগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো দ্য ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৪ এর ১০(৪) ধারার বিধানমতে কমিশনের লিখিত আদেশ ছাড়া প্রত্যাহার করা যায় না বিধায় এ ধরনের মামলা চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করতে হবে। এ ধরনের মামলার বিষয়ে করণীয় পরে নির্ধারণ করা হবে। মন্ত্রক পর্যায়ের কমিটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন জননিরাপত্তা বিভাগের আইন-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব। আর সদস্য হিসেবে থাকছেন জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, অতিরিক্ত সচিব (আইন ও শৃঙ্খলা) ও যুগ্ম সচিব (আইন) এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি (যুগ্ম সচিব পর্যায়ের নিচে নয়)।