হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে জোয়ারের পানিতে ঘুরছে চিত্রা হরিণ

- আপডেট সময় : ০৯:১৪:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ ৭৯ বার পড়া হয়েছে

নোয়াখালীর হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে জোয়ারের পানিতে ঘুরছে চিত্রা হরিণ। বৃহস্পতিবার দ্বীপের নামার বাজাওে নিঝুম দ্বীপের বাসিন্দা মো. জামসেদের সৌজন্যে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল উপকূল খেপুপাড়ার পাশ দিয়ে স্থলপথ অতিক্রম করছে। এর প্রভাবে প্রবল বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। উপকূল অঞ্চল ও এর দূরবর্তী দ্বীপগুলো ৪-৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী সকল নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে থাকা মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলের আসার নির্দেশনা দেওয়া হরেয়ছে।
অমাবস্যা ও গভীর নিম্নচাপের ফলে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
এ অবস্থায় নোয়াখালীতে বুধবার বিকাল তিনটা থেকে বৃহস্পতিবার বেলা তিনটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। গভীর নিম্নচাপের কারণে সেখানে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
প্রবল বর্ষণের বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলার নেয়াখালী হরিণের চারণভূমি হিসাবে খ্যাত হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপের হরিণ বন ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসে।
জলমগ্ন রাস্তায় নিশ্চিন্ত চিত্রা হরিণ ঘোরাফেরা করছে। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকে জানতে চাইছেন, হরিণটি কীভাবে এল? জোয়ার বাড়তে থাকলে কী হবে প্রাণীটির এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে দ্বীপের এক বাসিন্দা ভিডিও ধারণের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় তলিয়ে গেছে নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার এলাকার রাস্তাঘাট। সেখানে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে হরিণটিকে।

বন বিভাগের লোকজন হরিণটির দেখাশোনা করেন। দ্বীপের নামার বাজার এলাকায় বন বিভাগের কার্যালয়ের নিচেই থাকে এটি। বেড়াতে আসা পর্যটকেরা হরিণটির সঙ্গে ছবিও তোলেন।
জোয়ারের পানিতে হরিণ ঘুরে বেড়ানো প্রসঙ্গে নিঝুম দ্বীপ বন বিটের কর্মকর্তা মো. সোহাগ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, হরিণটি এ রকম জোয়ারের পানিতে ঘুরে বেড়াতে অভ্যস্ত। পানি খুব বেশি বেড়ে গেলে সে নিজেই উঁচু জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। আবার পানি কমে গেলে নেমে আসে। তাই হরিণটিকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার দরকার পড়ে না।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বুধবার রাত থেকেই নোয়াখালী জেলায় বৃষ্টি হচ্ছে। সঙ্গে বইছে প্রবল ঝোড়ো বাতাস। স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় ফুট উচ্চতার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে জেলার হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপসহ বেশ কিছু এলাকা।
নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের নৌ যোগাযোগ দুই দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাটে আটকা পড়েছেন শতাধিক মানুষ। এমনই একজন আটকে পড়া হাতিয়ার বুড়িরচর এলাকার বাসিন্দা মো. খায়ের উদ্দিন বলেন, বুধবার জেলা শহর থেকে ঘাটে এসেছিলেন হাতিয়া যাওয়ার উদ্দেশে।
এসে দেখেন চেয়ারম্যানঘাট থেকে কোনো স্পিডবোট কিংবা ট্রলার ছাড়ছে না। আগের দিন থেকে সি ট্রাকও চলাচল বন্ধ। এ পরিস্থিতিতে কাছাকাছি এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত্রিযাপন করে ফের ঘাটে এসে দেখেন এ অবস্থা।