স্বস্তির ফসল ঘরে তুলে নজির গড়ল রেলওয়ে

- আপডেট সময় : ০৭:২৮:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩ ১৭৯ বার পড়া হয়েছে
ঈদের ছুটির ৫ দিনে আয় প্রায় ৭ কোটি টাকা
রেল ব্যবস্থাকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যেতে জোরকদমে কাজ চলছে।
চলতি বছরে কয়েকটি মেগাপ্রকল্প উদ্বোধন হবে। রেলওয়ের সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি রেল পরিচালনায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। নতুন নতুন ইঞ্জিন, কোচ সংযুক্ত হচ্ছে, নতুন ডাবল লাইন করা হচ্ছে।
যাত্রীসেবা বৃদ্ধির জন্য নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
ঈদ মৌসুম ঘিরে পরিচিত দৃশ্য ছিল ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ের মহাবিড়ম্বনা। পত্রিকার পাতায় মোটা হেডলাইন, টিভিতে দুর্ভোগের চিত্র। চিন্তার ভাজ পড়তো রেলপথ মন্ত্রকসহ সংশিষ্ট সকলের কপালে।
কিন্তু এবারে সেই দৃশ্য উদাও। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গিকারকে সঙ্গী করে টিকিট যার ভ্রমণ তার ‘স্লোগান’কে সামনে রেখে ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার।
এজন্য ঈদের এক মাস আগে থেকেেইক্যাম্পেইন শুরু করে রেলমন্ত্রক। সময়োপযোগী কর্মকাণ্ডের অংশ হিসাবে নানামুখী কর্মসূচি সফলতার সিঁড়ি উৎড়াতে সহায়তা করে।

ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনসহ দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক স্টেশনে ‘জাতীয় পরিচয়পত্র’ রেজিষ্ট্রেশনে সেবা ডেস্ক চালু করে রেলমন্ত্রক। যাত্রীরাও তাতে স্বাচ্ছন্দে রেজিষ্ট্রেশন করে নেন। অনেকে বলেছেন, এটি আরও আগেই করা দরকার ছিল। অন্তত টিকিটের জন্য তাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হতো না। রেলের যাত্রীসেবার এই পদ্ধতি চালু করায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
কারণ, রেলসেবা হচ্ছে সাধারণ মানুষের পছন্দের প্রথম কাতারে। এটি কেবল বাংলাদেশ নয়, গোটা পৃথিবীতেই রেল হচ্ছে পরিবহন পরিষেবার অন্যতম। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে অবহেলায় ছিল রেল। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলকে সাধারণ মানুষের সেবায় পুরোপুরি কাজে লাগানোর জন্যই আলাদা ‘রেলমন্ত্রক’ গঠন করেন। মূলত তার পর থেকেই গতি পায় রেল।
এবারের ঈদ যাত্রায় ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনের বহু চেনা চিত্র ছিল না। বাড়ির পথে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা প্রহর গুণতে হয়নি। কামড়াগুলোতেও অযাচিত যাত্রীর ভিড় দেখা মেলেনি। ট্রেন যাত্রীর এই হাসিমুখ আগে কখনও দেখেনি কর্তৃপক্ষ।
ঈদুল ফিতরের এই সফলতায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। বলেছেন, শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির যুগান্তকারী পদক্ষেপ যাত্রী ভোগান্তি ও শিডিউল বিপর্যয় ঘটেনি। এবারের ঈদ যাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। এজন্য রেলপথ মন্ত্রক সংশিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান রেলপথ মন্ত্রী।
রবিবার রেলভবনে ঈদপরবর্তী রেল ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত মূল্যায়ন সভায় সভাপতি হিসেবে যোগ দিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন রেলপথমন্ত্রী। আলোচনায় অংশগ্রহণকারী সকলেই এবারের টিকিট বিক্রয়ের পদ্ধতিকে সফলতার মাইল ফলক হিসাবে দেখছেন। আগামী ঈদেও একইভাবে শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির প্রস্তাব উত্থাপন করেন তারা।
রেলপথ মন্ত্রী বলেন, রেল ব্যবস্থাকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যায়ক্রমে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যেতে জোরকদমে কাজ চলছে। চলতি বছরে রেলওয়ের কয়েকটি মেগাপ্রকল্প উদ্বোধন হবে। রেলওয়ের সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি রেল পরিচালনায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। নতুন নতুন ইঞ্জিন, কোচ সংযুক্ত হচ্ছে, নতুন ডাবল লাইন করা হচ্ছে। যাত্রীসেবা বৃদ্ধির জন্য নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন।
সভায় অতিরিক্ত মহাপরিচালক অপারেশন ঈদের যাত্রী পরিবহন ও আয়ের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এ বছর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা থেকে পাঁচ দিনে (১৭ থেকে ২১ এপ্রিল) যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৯৭৩ জন এবং আয় হয়েছে ৬ কোটি ৭১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৯ টাকা।
২০২২ সালের ঈদুল ফিতরে ঈদ যাত্রায় ঢাকা থেকে পাঁচ দিনে যাত্রী পরিবহন হয়েছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৬৩ জন এবং আয় হয়েছিল ৫ কোটি ১৯ লাখ ৬১ হাজার ৪৭৮ টাকা। একই বছর ঈদুল আজহায় ঈদ যাত্রায় ঢাকা থেকে যাত্রী পরিবহন হয়েছিল ১ লাখ ৯৫ হাজার ৫১৯ জন এবং আয় হয়েছিল ৫ কোটি ৬১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৪৭ টাকা।