সম্প্রীতির মেলবন্ধন : অমর একুশে বইমেলা ও কবিতা উৎসব
- আপডেট সময় : ০৮:৫২:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ২৩৩ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা
মেলার শুরুটা বৃহস্পতিবার অপরাহ্নে। তখনও মেলা মাঠে বিভিন্ন স্টলের কাজ চলছিল। এরই মধ্যে সন্ধ্যাবাতির আগে হয়ে যায় হল্কা বৃষ্টি। সন্ধ্যার পরও তার রেশ কটেনি। দর্শকরাও মাঘের বৃষ্টিতে ঘরকুনো। কিন্তু শুক্রবার ছুটির দিনে ঝলমলে সকালে মেলা প্রাঙ্গণ জমজমাট হতে থাকে। সাজগোজ শেষে সপরিবারে মেলায় পৌছাতে থাকে বইপ্রেমীদের দল। দুপুর নাগাদ মুখরিত মেলা প্রাঙ্গণ। স্টলে স্টলে ভীড় বাড়তে থাকে। অতিমারির পর চব্বিশের মেলার রূপ ভিন্ন।
এবারে মেলার প্রতিটি স্টল নান্দনিক। প্যাভিলিয়ন মনোমুগ্ধকর। ঢাকায় শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক অমর একুেিশ বই মেলা। পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরী চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় ৩৬তম কবিতা উৎসব। যেখানে অংশ নেন ভারত, নেপাল, ইরানসহ বিভিন্ন দেশের কবিরা। বাংলাদেশের কবিতা উৎসবে আয়োজনে জড়িয়ে ছিলেন। ত্রিপুরার কবি ও লেখক রাতুল দেববর্মন, তাপস দেবনাথ ও আকবর আহমেদ অংশ নেন। রাতুল বাবু ভাষায় বাংলাদেশের অতিথিয়তায় মুগ্ধ।
কবিতা উৎসব মানুষে মানুষে যোগাযোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কবিতা আমাদের সম্প্রীতির পথে হাঁটতে শেখায়। প্রতিবারের মতো এবারে ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায়জুড়ে আয়োজনে চলছে মাসব্যাপী অমর অকুশে বই মেলা। মেলায় স্টল রয়েছে হাজারের বেশি। লিটল মেগ থাকছে পাঁচশতাধিক। মেলা ঘিরে সকল বয়সী মানুষের পদচারণা বলে দিচ্ছে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ভাষার প্রতি তাদের দরদ। হাজারের ওপরে স্টল ও প্যাভিলিয়ন সজ্জিত বই মেলা অন্যান্য বছরের চেয়ে আরও নান্দনিক।
বৃহস্পতিবার মেলার পর্দা ওঠলেও বিকালে হাল্কা বৃষ্টি হওয়ায় দর্শকের তেমন একটা আগমন লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু শুক্রবার ছুটির দিনে দর্শক সমাগমণে মেলা সরগরম হয়ে ওঠে। এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। বইমেলা, জাতীয় কবিতা উৎসব, নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, আলোচনা সভা ছাড়াও থাকছে বাংলা একাডেমির মূল মঞ্চে মাস ব্যাপী নানা আয়োজন। ‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা’ স্লোগানে জাতীয় কবিতা উৎসবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, নেপাল, ইরানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কবিরা অংশ নেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে, এমন বই মেলায় স্থান পাবে না এবং যে কোন বিতর্কিত বইয়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতিমারির পর এবারের বইমেলা অতন্ত জাকজমকপূর্ণ হবে। লেখক-পাঠক ও সংস্কৃতি ব্যক্তিত্বদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে বলে জানালেন দেশের স্বনামধন্য সময় প্রকাশনের কর্ণধার ফরিদ আহমেদ। মেলা নিয়ে বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন প্রকাশক অমর হাওলাদার। বলেন, প্রতি বছরই বেশ কিছু নতুন বই প্রকাশ করে থাকেন তিনি।
পাঠকের অনুরোধে বিক্রি করা বইয়ে অটোগ্রাফ দিতে ব্যস্ত স্নিগ্ধা বাউল জানালেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও তার বই প্রকাশিত হয়েছে। অমর একুশে বই মেলার জন্য বছরজুড়ে অপেক্ষায় থাকেন।