সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক ভিটা বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ
- আপডেট সময় : ০২:০৭:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মে ২০২১ ২২০ বার পড়া হয়েছে
‘সত্যজিৎ রায়ের স্মৃতি সংরক্ষণে পৈত্রিক ভিটা ‘মসুয়া গ্রামে’ জাদুঘর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মহান মানুষটিকে চির স্মরণীয় করে রাখার উদ্যোগ বাংলাদেশের’
ঋদ্ধিমান, ঢাকা
স্মৃতির ভান্ডার বলা যায় ময়মনসিংহকে। জঙ্গল বাড়ির ঈসা খা, মুক্তাগাছার মহারাজা, বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতী, সুকুমার রায়, ছেলে সত্যজিৎ রায়, জাতীয় কবি কাজী নজরুলের স্মৃতিধন্য বৃহত্তর ময়মনসিংহের বহু স্মৃতিতে মোড়ানো। সেই স্মৃতি রক্ষা করা অনিবার্য। বাংলা বাঙালির গৌরবের ধন সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষের আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে স্মৃতির অতলে ডুব দেন মোস্তাফা জব্বার।
বলেন, সত্যজিৎ রায় বাংলা চলচ্চিত্রেই নয়, দুনিয়ার সব চলচ্চিত্রের শ্রেষ্টজনদের একজন। তিনি ছিলেন অসাধারণ মেধাবী ও সৃজনশীল একজন মানুষ। গ্রাফিক্স-ডিজাইনসহ বাংলা টাইপোগ্রাফি বা হরফ মালা সৃষ্টির অসাধারণ কাজ করে গিয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার মসুয়া গ্রামে তার পৈত্রিক ভিটাটি সত্যজিৎ রায়ের স্মৃতি সংরক্ষণে একটি ‘স্মৃতি জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই মহান মানুষটিকে চির স্মরণীয় করে রাখতে সংস্কৃতিকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার ডাক দেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ অবিলম্বে এই কাজটি সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি প্রদান দেন।
বৃহ্ত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ঢাকায় ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার বৃহ্ত্তর ময়মনসিংহের কীর্তিমান প্রবাদপুরুষ সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মোস্তাফা জব্বার একাধারে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, সংগঠক এবং বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। নানা মুখি সাংস্কৃতিক আন্দোলনে বাংলাদেশ যে অনেক এগিয়ে তা গ্রহণযোত্যায় রয়েছে।
বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক, চিত্রকর বাংলার গর্বের ধন সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতদিনে আয়োজন করা আলোচনায় অংশ নিয়ে মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, সত্যজিত রায়ের পিতা সুকুমার রায়, পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশের (বৃহত্তর ময়মনসিংহ) বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার মসূয়া গ্রামে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, বহু স্মৃতি রয়েছে, যা সংরক্ষণ করা জরুরী। ইচ্ছা থাকলে ভাল কাজ সহজেই করা যায়। স্মৃতি রক্ষায় সাংস্কৃতিক ফোরামসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে নজরুলের স্মৃতিকে যেমন অম্লান করে রাখতে পেরেছি। তেমনি সত্যজিৎ রায় স্মৃতি বিজড়িত মসুয়াকে আমরা সকলে মিলে অমর করে রাখতে চাই।
সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকীর প্রথম বার্তা পাই ‘সুহৃদ সুস্মিতা মুখার্জি’র কাছ থেকে। বার্তায় লিখেন, ‘বিশ্বের অন্যতম সেরা চলচ্চিত পরিচালক ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়কে জন্মশতবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাবনত চিত্রে স্মরণ করি’, মহারাজা তোমায় সেলাম’। এমনিভাবে বিশেষ বিশেস মুহূর্তগুলো স্মরণ করিয়ে ঋণি করে রেখেছে সুস্মিতা। এর আগে কবি কবি শঙ্খঘোষেন প্রয়াত বার্তাটিও দিয়েছিলো সুস্মিতা। তার সাংস্কৃতিক, সামাজিক মূল্যবোধ প্রশংসার দাবি রাখে। এমন সহযোদ্ধা পাওয়া সৌভাগ্যের।
সুস্মিতার বার্তার পর সন্ধ্যায় আসলো মন্ত্রীর উদ্যোগের বার্তা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, গুণীদের স্মৃতি সংরক্ষণ করা সম্ভব না হলে, আমাদের গৌরবোজ্জ্বল অতীত খুঁজে পাব না। আমাদের পূর্বপুরুষদের স্মৃতি, তাদের ইতিহাস তুলে ধরতে না পারলে জাতি হিসেবে সামনে এগুলোতে পারব না। সত্যজিৎ রায় ছিলেন বাংলা ও বাঙালির গৌরবের ধন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ অবিলম্বে এই কাজটি সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর এসএম মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক সচিব আবদুস সামাদ, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ, চলচ্চিত্র শিল্পি সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মাহমুদ সাজ্জাদ, প্রমুখ বক্তৃতা করেন। বৃহ্ত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সেক্রেটারি রাশেদুল হাসান শেলী অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন।