শেখ পরিবারসহ ১১ শিল্পগোষ্ঠীর বর্হিবিশ্বে বিপুল সম্পদের খোঁজ

- আপডেট সময় : ০২:৪৫:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ৩৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের আটটি ব্যাংক থেকে হাজার হাজার লোপাট এবং বর্হিবিশ্বের ৬টি দেশে পাচার করেছে এস আলম শিল্পগোষ্ঠী। এই গ্রুপটি ছিলো ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার আর্শিবাদপুষ্ট। অপর শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। এই গ্রুপটিরও বর্হিবিশ্বের ৮ দেশে সম্পদ রয়েছে।
২৪ এর ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়ে গত বছর ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যায়। ৮ আগস্ট বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়, যার প্রধান উপদেষ্টা হন নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অর্থনৈতিকখাতসহ বিভিন্ন খাতের আর্থিক অনিয়ম এবং অর্থ পাচারের মতো গুরুতর অনিয়ম তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকার ১১টি কমিটি গঠন করে। এসব কমিটি তদন্ত করতে গিয়ে শেখ হাসিনা ও তার পরিবার এবং ১০টি শিল্পগোষ্ঠীর ব্যাংকঋণে অনিয়ম, কর ফাঁকি, অর্থ পাচারসহ নানা অনিয়ম খুঁজে পায়।
তদন্তে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম ও পাচার করা অর্থের খোঁজ মিলেছে এস আলম গ্রুপের। এসব ঘটনায় ইতিমধ্যে একাধিক মামলা হয়েছে। বিদেশে পাচার করা অর্থ উদ্ধারে বিশেষ অধ্যাদেশ তৈরির কাজ চলছে। অর্থ উদ্ধারে কোন ধরনের বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নির্ধারণের কাজ চলছে। এতে সহায়তা দিচ্ছেন বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগে গঠিত পাচার করা অর্থ উদ্ধার বিশেষজ্ঞরা।
গািঠত তদন্ত কমিটিগুলো জোরেশোরে কাজ শুরু করেছে। যার মধ্যে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বয়ে যৌথ তদন্ত দল। সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বাংলাদেশ ব্যাংকে বিশেষ নিরাপত্তাবিশিষ্ট কক্ষে চলছে তদন্তের নথিপত্র প্রস্তুতের কাজ।
শেখ হাসিনার পরিবারের বাইরে যে ১০ শিল্পগোষ্ঠী নিয়ে তদন্ত চলছে, সেগুলো হচ্ছে, এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, জেমকন গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ ও আরামিট গ্রুপ। এসব গ্রুপের পাশাপাশি গ্রুপের প্রধান ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত আর্থিক বিষয়ও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। তাঁদের অনেকেই বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন।
১১টি পরিবার ও গ্রুপের অনিয়মের তদন্ত নিয়ে প্রতি মাসে সভা করছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১৬ এপ্রিল আবারও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ-সংক্রান্ত এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে রোববার পাচারের অর্থ ফেরতসংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর প্রধান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
গভর্নর গত শুক্রবার চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সব মিলিয়ে আমার ধারণা, আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে বড় শিল্প গ্রুপ ও তাদের পরিবারও রয়েছে। বেক্সিমকোর পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো।
৬ মাসের মধ্যে বিদেশে পাচার করা সম্পদের বড় একটি অংশ জব্দ করা সম্ভব বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর। এ জন্য আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলছি। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থাকে চিঠি দিচ্ছি। বিদেশি আইনি সংস্থা বা ফার্মের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে, এ কাজে তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে।