লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক, এক ক্রান্তিকালের অবসান

- আপডেট সময় : ০৬:৪৬:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫ ১২১ বার পড়া হয়েছে

লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক অনুষ্ঠিত: ছবি সংগ্রহ
অবশেষে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক অবশেষে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠককে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতারা নয়া দিগন্ত উন্মোচন হবে বলেও মন্তব্য করেছেন।
লন্ডনে শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংরাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিলো দুই নেতার বৈঠক তার অবসান ঘটিয়েছেন।
বৈঠক সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২৬-এর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে তথা রমজান শুরু আগেই নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। এই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হবে। লন্ডনের ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক এক ক্রান্তিকালের অবসান ঘটিয়েছে বলে মনে করা হয়। কারণ, ইউনূস-তারেক বৈঠক ঘিরে গোটা জাতি সপ্তাজুড়ে তাকিয়ে ছিলো লন্ডনের দিকে।
স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা) ডরচেস্টার হোটেলে পূর্ব নির্ধারিত শুরু হয়ে দেড় ঘন্টার বৈঠকটি শেষ হয় সকাল সাড়ে ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টা)। বৈঠকের পর যৌথ ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানানো হয়।
২৪-এর জুলাই ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ৫ই আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতন ঘটে। এ সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। তার পর দেশে এক রাজনৈতিক শূণ্যতা তৈরি হয়।
৮ই আগষ্ট নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, আপনারা যতদিন থাকতে বলবেন, ততদিন থাকবো।

এক পর্যায়ে নির্বাচন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব বাড়তে থাকে। গত ৭ই জুন বাংলাদেশে ঈদুল আযাহা পালিত হয়। সেদিন বিএনপির কয়েকজন নেতা দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদেও শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান।
এসময় বেগম জিয়া সরকারের সঙ্গে বৈরিতা করে নয়, বরং কৌশল অবলম্বন করে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে আলোপ-আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে যাবার নির্দেশ দেন দলীয় নেতাদের। এর পর থেকেই বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতারা ইউনূস-তারেক বৈঠককে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বলে মন্তব্য করেন।
লন্ডনে বৈঠক শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটা নাগাদ যৌথ ব্রিফিংয়ে আসেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ।
বৈঠক শেষে একটি যৌথ বিবৃতিও জারি করা হয়। তাতে জানানো হয়, অত্যন্ত সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন, এই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার এ অবস্থানকে স্বাগত জানান এবং দলের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানান। ড. ইউনূসও তারেক রহমানকে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানান।