ঢাকা ০৯:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পাকিস্তানকে প্রকাশ্যে ক্ষমা এবং ৪.৩২ বিলিয়ন ডলার নিষ্পত্তির তাগিদ ঢাকার ঢাকায় আমনা বালুচের সফল বৈঠক, এ মাসে আসছে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২৬’র রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন চান জামায়াত আমির বিলুপ্তির প্রায় দেশী প্রজাতির মাছ রক্ষা করে উৎপাদনোর তাগিদ অপরিকল্পিত কীটনাশকের ব্যবহারে ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য আয়োজনে মাতলো ডিআরইউ আগস্টে বাংলাদেশ সফরে আসছে ভারতের ক্রিকেট দল জুলাই আন্দোলনে মরদেহ পোড়ানো ৩ পুলিশকে কারাগারে পাঠালো ট্রাইব্যুনাল বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষের অঙ্গীকার : ড. ইউনূস গুলির নির্দেশদাতা সেই দুই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনই সংকটের একমাত্র সমাধান: গুতেরেস

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:০০:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ ৪৫ বার পড়া হয়েছে

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেন। ছবি: পিআইডি

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কেবল মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তা কমানো হলে, তা নিয়ন্ত্রণহীন দুর্যোগে পরিণত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। 

আন্তোনিও গুতেরেস এবং ড. ইউনূস শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেন। ছবি: পিআইডি

কেবল মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তা কমানো হলে, তা নিয়ন্ত্রণহীন দুর্যোগে পরিণত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

মিয়ানমারেই সমাধান পেতে হবে আমাদের। এখানে থাকা সব শরণার্থীর স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্ষান্ত হব না।

শুক্রবার কক্সবাজারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে লাখো রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার আয়োজনে যোগ দিয়ে এ সতর্কবার্তা দেন তিনি।

রোহিঙ্গাদের জন্য যে বরাদ্দ ২০২৪ সালে ছিল, তা ২০২৫ সালে এসে ৪০ শতাংশ কমে যাওয়ার পরিসংখ্যান তুলে ধরেন জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, এটা হবে নিয়ন্ত্রণহীন দুর্যোগ, যেটাকে আমরা নিতে পারব না। মানুষ দুর্ভোগ পোহাবে, এমনকি মারা যাবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেন। ছবি: পিআইডি

সুতরাং আমি ততক্ষণ পর্যন্ত কথা বলা থামাব না, ততক্ষণ না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটা বুঝবে যে, বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তার বাধ্যবাধকতা তাদের রয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আয়োজনে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এই ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেন চার দিনের সফরে বাংলাদেশে আসা জাতিসংঘ মহাসচিব।

জাতিসংঘের পর্তুগিজ মহাসচিবের ইংরেজিতে দেওয়া বক্তৃতা রোহিঙ্গা ভাষায় অনুবাদ করে শোনান একজন দোভাষী।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ যে এখন শোচনীয়, সে কথা তুলে ধরে গুতেরেস বলেন, আমাকে স্বীকার করতেই হবে, আমরা গভীর মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে। আর্থিক সহায়তা কমানোর ঘোষণায় আমরা নাটকীয় ঝুঁকি মোকাবেলা করছি; সেটা রোহিঙ্গাদের খাবারের রেশন কমানোর ঝুঁকি।

তিনি বলেন, এখানকার মানুষ এমনিতেই অনেক বেশি যন্ত্রণা ভোগ করে ফেলেছে। এর মধ্যে আরেকটা সমস্যাকে আমরা নিতে পারব না। খাবারের রেশনের সমস্যা সমাধানে যা যা করা দরকার, সব আমরা করব।

বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা কালচালার মনিটরিং সেন্টার পরিদর্শন করেন।ছবি: পিআইডি

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, এখানকার পুরো শরণার্থী জনগোষ্ঠী মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল। আমি আবারো বলছি, নিদারুণ প্রয়োজনের মুখে থাকা মানুষের সহায়তা কমানোর প্রভাব কী রকম হতে পারে, তার গ্রাউন্ড জিরো হতে যাচ্ছে কক্সবাজার।

শরণার্থী শিবিরের দুর্ভোগের জীবন পেরিয়ে রোহিঙ্গারাও যে নিজভূমে ফিরতে চায়, তা তুলে ধরে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ঘরে ফিরতে চায়; মিয়ামনার তাদের মাতৃভূমি। নিরাপদে, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদার সঙ্গে তাদের ফেরানোই হচ্ছে এই সংকটের প্রাথমিক সমাধান।

মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরির উপর জোর দিয়ে আন্তানিও গুতেরেস বলেন, মিয়ানমারের সবপক্ষের প্রতি আমার বার্তা স্পষ্ট- সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করুন, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে সব বেসামরিক মানুষের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিন এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও সংঘাত কমান, যাতে গণতন্ত্রের পথ তৈরি হয় এবং রোহিঙ্গাদের সবাই যে ফিরে যেতে চাচ্ছে, তার পথ তৈরি হয়।

তবে রাখাইন রাজ্যসহ মিয়ানমারের অবস্থা শোচনীয়। যতক্ষণ না সংঘাত ও নিপীড়ন বন্ধ না হবে, বাংলাদেশে যারা অবস্থান করছে, তাদের সহায়তা অবশ্যই আমাদেরকে করতে হবে।

গুতেরেস বলেন, আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা না কমায়। তাদের অবশ্যই উদ্যোগী হতে হবে এবং আপনাদের কল্যাণের নিশ্চয়তা দিতে হবে।

লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার আয়োজনে কেন যোগ দিয়েছেন, তার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, আপনাদের সঙ্গে রোজা রাখা এবং ইফতার আপনাদের ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধার প্রমাণ। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশার ওপর বৈশ্বিকভাবে আলোকপাত করতে আমি এখানে এসেছি।

এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা সংগৃহীত

এখানকার ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী গর্বিত। তারা দুর্ভোগকে মানিয়ে নিতে পারে এবং তাদের প্রয়োজন বৈশ্বিক সহযোগিতা। দশকের পর দশক ধরে নির্যাতন-নিপীড়নের মধ্যে আরাকানে হত্যাযজ্ঞের পর ৮ বছর আগে তারা বড় আকারে দেশ ছেড়েছে।

মিয়ানমারে মুসলিম-বিদ্বেষী মনোভাবের কারণে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের মুখে সাম্প্রতিক সময়ে আরও রোহিঙ্গা আসার কথাও জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এসেছে সেসব কারণে, যেগুলো সব জায়গার মানুষই চায়- সুরক্ষা, মর্যাদা এবং তাদের নিজেদের ও পরিবারের নিরাপত্তা।

আজ আমি আপনাদের সঙ্গে দেখা করেছি, কথা বলেছি। আপনাদের সাহস থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছি এবং সংকল্প দেখে হয়েছি বিমোহিতও অনেকে মিয়ানমারে থাকার সময়ের দুঃসহ ঘটনা এবং এদিকে তাদের যাত্রাপথের বর্ণনা দিয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজারে পৌঁছান। সেখান থেকে পরে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে যান তারা।

জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। মুহাম্মদ ইউনূস পরে আন্তোনিও গুতেরেসকে সঙ্গে নিয়ে উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনই সংকটের একমাত্র সমাধান: গুতেরেস

আপডেট সময় : ১১:০০:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

কেবল মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তা কমানো হলে, তা নিয়ন্ত্রণহীন দুর্যোগে পরিণত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। 

আন্তোনিও গুতেরেস এবং ড. ইউনূস শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেন। ছবি: পিআইডি

কেবল মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তা কমানো হলে, তা নিয়ন্ত্রণহীন দুর্যোগে পরিণত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

মিয়ানমারেই সমাধান পেতে হবে আমাদের। এখানে থাকা সব শরণার্থীর স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্ষান্ত হব না।

শুক্রবার কক্সবাজারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে লাখো রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার আয়োজনে যোগ দিয়ে এ সতর্কবার্তা দেন তিনি।

রোহিঙ্গাদের জন্য যে বরাদ্দ ২০২৪ সালে ছিল, তা ২০২৫ সালে এসে ৪০ শতাংশ কমে যাওয়ার পরিসংখ্যান তুলে ধরেন জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, এটা হবে নিয়ন্ত্রণহীন দুর্যোগ, যেটাকে আমরা নিতে পারব না। মানুষ দুর্ভোগ পোহাবে, এমনকি মারা যাবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেন। ছবি: পিআইডি

সুতরাং আমি ততক্ষণ পর্যন্ত কথা বলা থামাব না, ততক্ষণ না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটা বুঝবে যে, বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তার বাধ্যবাধকতা তাদের রয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আয়োজনে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এই ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেন চার দিনের সফরে বাংলাদেশে আসা জাতিসংঘ মহাসচিব।

জাতিসংঘের পর্তুগিজ মহাসচিবের ইংরেজিতে দেওয়া বক্তৃতা রোহিঙ্গা ভাষায় অনুবাদ করে শোনান একজন দোভাষী।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ যে এখন শোচনীয়, সে কথা তুলে ধরে গুতেরেস বলেন, আমাকে স্বীকার করতেই হবে, আমরা গভীর মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে। আর্থিক সহায়তা কমানোর ঘোষণায় আমরা নাটকীয় ঝুঁকি মোকাবেলা করছি; সেটা রোহিঙ্গাদের খাবারের রেশন কমানোর ঝুঁকি।

তিনি বলেন, এখানকার মানুষ এমনিতেই অনেক বেশি যন্ত্রণা ভোগ করে ফেলেছে। এর মধ্যে আরেকটা সমস্যাকে আমরা নিতে পারব না। খাবারের রেশনের সমস্যা সমাধানে যা যা করা দরকার, সব আমরা করব।

বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা কালচালার মনিটরিং সেন্টার পরিদর্শন করেন।ছবি: পিআইডি

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, এখানকার পুরো শরণার্থী জনগোষ্ঠী মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল। আমি আবারো বলছি, নিদারুণ প্রয়োজনের মুখে থাকা মানুষের সহায়তা কমানোর প্রভাব কী রকম হতে পারে, তার গ্রাউন্ড জিরো হতে যাচ্ছে কক্সবাজার।

শরণার্থী শিবিরের দুর্ভোগের জীবন পেরিয়ে রোহিঙ্গারাও যে নিজভূমে ফিরতে চায়, তা তুলে ধরে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ঘরে ফিরতে চায়; মিয়ামনার তাদের মাতৃভূমি। নিরাপদে, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদার সঙ্গে তাদের ফেরানোই হচ্ছে এই সংকটের প্রাথমিক সমাধান।

মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরির উপর জোর দিয়ে আন্তানিও গুতেরেস বলেন, মিয়ানমারের সবপক্ষের প্রতি আমার বার্তা স্পষ্ট- সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করুন, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে সব বেসামরিক মানুষের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিন এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও সংঘাত কমান, যাতে গণতন্ত্রের পথ তৈরি হয় এবং রোহিঙ্গাদের সবাই যে ফিরে যেতে চাচ্ছে, তার পথ তৈরি হয়।

তবে রাখাইন রাজ্যসহ মিয়ানমারের অবস্থা শোচনীয়। যতক্ষণ না সংঘাত ও নিপীড়ন বন্ধ না হবে, বাংলাদেশে যারা অবস্থান করছে, তাদের সহায়তা অবশ্যই আমাদেরকে করতে হবে।

গুতেরেস বলেন, আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা না কমায়। তাদের অবশ্যই উদ্যোগী হতে হবে এবং আপনাদের কল্যাণের নিশ্চয়তা দিতে হবে।

লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার আয়োজনে কেন যোগ দিয়েছেন, তার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, আপনাদের সঙ্গে রোজা রাখা এবং ইফতার আপনাদের ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধার প্রমাণ। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশার ওপর বৈশ্বিকভাবে আলোকপাত করতে আমি এখানে এসেছি।

এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টা সংগৃহীত

এখানকার ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী গর্বিত। তারা দুর্ভোগকে মানিয়ে নিতে পারে এবং তাদের প্রয়োজন বৈশ্বিক সহযোগিতা। দশকের পর দশক ধরে নির্যাতন-নিপীড়নের মধ্যে আরাকানে হত্যাযজ্ঞের পর ৮ বছর আগে তারা বড় আকারে দেশ ছেড়েছে।

মিয়ানমারে মুসলিম-বিদ্বেষী মনোভাবের কারণে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের মুখে সাম্প্রতিক সময়ে আরও রোহিঙ্গা আসার কথাও জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এসেছে সেসব কারণে, যেগুলো সব জায়গার মানুষই চায়- সুরক্ষা, মর্যাদা এবং তাদের নিজেদের ও পরিবারের নিরাপত্তা।

আজ আমি আপনাদের সঙ্গে দেখা করেছি, কথা বলেছি। আপনাদের সাহস থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছি এবং সংকল্প দেখে হয়েছি বিমোহিতও অনেকে মিয়ানমারে থাকার সময়ের দুঃসহ ঘটনা এবং এদিকে তাদের যাত্রাপথের বর্ণনা দিয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজারে পৌঁছান। সেখান থেকে পরে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে যান তারা।

জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। মুহাম্মদ ইউনূস পরে আন্তোনিও গুতেরেসকে সঙ্গে নিয়ে উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেন।