ঢাকা ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বসলো প্রথম চুল্লি

ভয়েস রিপোর্ট, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৪:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অক্টোবর ২০২১ ১৪২ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : ছবি সংগৃহীত

শেখ হাসিনার হাত ধরে আলোকিত বাংলাদেশ, শান্তির জন্য পারমানবিক শক্তি ব্যবহার করছি, দক্ষিণাঞ্চলে আরও একটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের স্থান খোঁজা হচ্ছে’ পারমাণবিক শক্তির দেশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুললো বাংলাদেশ,

রূপপুরের এই পারমাণবিক চুল্লি নির্মিত হয়েছে রাশিয়ায়। ভিভিআর-১২০০ মডেলের এই রিয়্যাক্টরে পরমাণু জ্বালানি পুড়িয়ে মূল শক্তি উৎপাদন হবে এবং ১২শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। কর্তৃপক্ষের আশা পরিকল্পনা অনুযায়ী, রূপপুরের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করতে পারবে’।

রবিবার সকাল ১১টা। রূপপুর প্রান্তে উপস্থিত বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ। বিশাল প্যান্ডেল। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরো বাংলাদেশের চোখ তখন রূপপুরে। টিভিতে লাইভ অনুষ্ঠান চলছে। রূপপুর তখন হাসছে। অনেকে আবেগ তাড়িত। কুপি-হারিকেনের বাংলাদেশ শেখ হাসিনার হাত ধরে মহাকাশ থেকে সমুদ্রের তলা জয় করে রূপপুর জয়ের আনন্দধারাকে

বর্ণনার না করে বলা যায়, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিন এটি। বসতে যাচ্ছে, বহুল প্রতীক্ষিত পারমাণবিক চুল্লি অর্থাৎ নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভ্যাসেল। বিজ্ঞানিরা যাকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের হৃৎপিণ্ড বলে থাকেন।

হাস্যোজ্জ্বল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম চুল্লি বসানোর কাজের শুভ উদ্বোধন করে বলেন, বঙ্গবন্ধু এই রূপপুরকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাংলাদেশ অ্যাটমিক অ্যানার্জি কমিশন গঠনসহ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন উদ্যোগের

কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাও অনেক উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ’৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর এই উদ্যোগটাই থেমে যায়। যদি জাতির পিতা বেঁচে থাকতেন তাহলে এটা আমরা আরও অনেক আগে করতে পারতাম।

এসময় শেখ হাসিনা আরও বলেন, পরমানু শক্তির একটা অংশ হিসেবে বাংলাদেশ স্থান করে নিয়েছে। ‘পারমানবিক শক্তি আমাদের শান্তির জন্য ব্যবহার করছি’। এখানে উৎপাদিত বিদ্যুত গ্রাম পর্যায়ে মানুষের কাছে যাবে। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হবে। রূপপুরের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর কথা রয়েছে।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর বা কমিশনিং প্রক্রিয়ায় এই চুল্লী স্থাপন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। পরমাণু বিজ্ঞানীরা রিএ্যাক্টর প্রেসার ভেসেলকে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হার্ট বা হৃৎপিণ্ড বলে থাকেন। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে প্রাথমিকভাবে ১ লক্ষ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশে একক প্রকল্প হিসেবে এটি সবচেয়ে বড় কোনো অবকাঠামো প্রকল্প। যেখানে মহামারির মধ্যেও প্রকল্প বাস্তবায়নে ২৫ হাজার শ্রমিক দিনরাত কাজ করেছেন। কাজ সম্পন্নর পর রূপপুর কেন্দ্রের দু’টো ইউনিট থেকে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। শেখ

হাসিনা বলেন, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ আমরা ‘পরমানু শক্তির অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে একটা স্থান করে নিতে পারলাম’।

রূপপুর কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভ্যাসেলটি রাশিয়া থেকে জলপথে ১৪ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশে পৌঁছে। সেটি স্থাপনের জন্য এক বছর প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়। রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভ্যাসেল পারমাণবিক

বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেখানে মূল জ্বালানি থাকে। এখান থেকেই বিদ্যুৎ সাপ্লাই হয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিতে সহযোগিতা দিচ্ছে রাশিয়ার আনবিক শক্তি কর্পোরেশন রোসাটম। তারাই প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহ করবে এবং ইউরেনিয়াম জ্বালানি ব্যবহারের পর বর্জ্য ফেরত নিয়ে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। এসব জায়গা শিল্পায়ন হবে। যত বেশি শিল্পায়ন হবে তত বেশি বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাবে। এবং সেটাকে মাথায় রেখেই বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সঞ্চালন এর পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published.

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বসলো প্রথম চুল্লি

আপডেট সময় : ০৪:৩৪:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অক্টোবর ২০২১

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : ছবি সংগৃহীত

শেখ হাসিনার হাত ধরে আলোকিত বাংলাদেশ, শান্তির জন্য পারমানবিক শক্তি ব্যবহার করছি, দক্ষিণাঞ্চলে আরও একটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের স্থান খোঁজা হচ্ছে’ পারমাণবিক শক্তির দেশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুললো বাংলাদেশ,

রূপপুরের এই পারমাণবিক চুল্লি নির্মিত হয়েছে রাশিয়ায়। ভিভিআর-১২০০ মডেলের এই রিয়্যাক্টরে পরমাণু জ্বালানি পুড়িয়ে মূল শক্তি উৎপাদন হবে এবং ১২শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। কর্তৃপক্ষের আশা পরিকল্পনা অনুযায়ী, রূপপুরের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করতে পারবে’।

রবিবার সকাল ১১টা। রূপপুর প্রান্তে উপস্থিত বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ। বিশাল প্যান্ডেল। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরো বাংলাদেশের চোখ তখন রূপপুরে। টিভিতে লাইভ অনুষ্ঠান চলছে। রূপপুর তখন হাসছে। অনেকে আবেগ তাড়িত। কুপি-হারিকেনের বাংলাদেশ শেখ হাসিনার হাত ধরে মহাকাশ থেকে সমুদ্রের তলা জয় করে রূপপুর জয়ের আনন্দধারাকে

বর্ণনার না করে বলা যায়, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিন এটি। বসতে যাচ্ছে, বহুল প্রতীক্ষিত পারমাণবিক চুল্লি অর্থাৎ নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভ্যাসেল। বিজ্ঞানিরা যাকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের হৃৎপিণ্ড বলে থাকেন।

হাস্যোজ্জ্বল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম চুল্লি বসানোর কাজের শুভ উদ্বোধন করে বলেন, বঙ্গবন্ধু এই রূপপুরকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাংলাদেশ অ্যাটমিক অ্যানার্জি কমিশন গঠনসহ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন উদ্যোগের

কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাও অনেক উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ’৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর এই উদ্যোগটাই থেমে যায়। যদি জাতির পিতা বেঁচে থাকতেন তাহলে এটা আমরা আরও অনেক আগে করতে পারতাম।

এসময় শেখ হাসিনা আরও বলেন, পরমানু শক্তির একটা অংশ হিসেবে বাংলাদেশ স্থান করে নিয়েছে। ‘পারমানবিক শক্তি আমাদের শান্তির জন্য ব্যবহার করছি’। এখানে উৎপাদিত বিদ্যুত গ্রাম পর্যায়ে মানুষের কাছে যাবে। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হবে। রূপপুরের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর কথা রয়েছে।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর বা কমিশনিং প্রক্রিয়ায় এই চুল্লী স্থাপন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। পরমাণু বিজ্ঞানীরা রিএ্যাক্টর প্রেসার ভেসেলকে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হার্ট বা হৃৎপিণ্ড বলে থাকেন। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে প্রাথমিকভাবে ১ লক্ষ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশে একক প্রকল্প হিসেবে এটি সবচেয়ে বড় কোনো অবকাঠামো প্রকল্প। যেখানে মহামারির মধ্যেও প্রকল্প বাস্তবায়নে ২৫ হাজার শ্রমিক দিনরাত কাজ করেছেন। কাজ সম্পন্নর পর রূপপুর কেন্দ্রের দু’টো ইউনিট থেকে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। শেখ

হাসিনা বলেন, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ আমরা ‘পরমানু শক্তির অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে একটা স্থান করে নিতে পারলাম’।

রূপপুর কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভ্যাসেলটি রাশিয়া থেকে জলপথে ১৪ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশে পৌঁছে। সেটি স্থাপনের জন্য এক বছর প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়। রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভ্যাসেল পারমাণবিক

বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেখানে মূল জ্বালানি থাকে। এখান থেকেই বিদ্যুৎ সাপ্লাই হয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিতে সহযোগিতা দিচ্ছে রাশিয়ার আনবিক শক্তি কর্পোরেশন রোসাটম। তারাই প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহ করবে এবং ইউরেনিয়াম জ্বালানি ব্যবহারের পর বর্জ্য ফেরত নিয়ে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। এসব জায়গা শিল্পায়ন হবে। যত বেশি শিল্পায়ন হবে তত বেশি বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাবে। এবং সেটাকে মাথায় রেখেই বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সঞ্চালন এর পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি।