ঢাকা ০৭:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

রাজনীতিক মশিউর রহমান যাদু মিয়া

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২৭:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫ ৮২ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া

জন্মালে মরতে হবে এটাই স্বাভাবিক এবং চিরসত্য। তবে এই মরণের মাঝে কিছু মরণ থাই পাহাড়ের চেয়ে ভারী বোধ হয়। জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মৃত্যু সে কথাটি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে সাহায্য করেছে অনেককেই। মানুষ মাত্রই দোষে এবং গুণে সমৃদ্ধ। কোন মানুষই বিতর্কের উর্দ্ধে থাকতে পারে না, থাকেও না। যাদু মিয়ার সম্পর্কেও বিতর্ক দীর্ঘসময়ের।

আমাদের রাষ্ট্রে এবং সমাজে রাজনৈতিক প্রশ্নের জটসমূহ যখন জটিল থেকে জটিল আকার ধারন করতে থাকে, যাদু মিয়া সম্পর্কিত বিতর্কও নতুন নতুন মাত্রা অর্জন করতে থাকে। রাজনীতিতে একটি অংশ তাঁকে একেবারে খারিজ করতে পারলে বেঁচে যান মনে হয়। আর অন্য অংশটি খুব বেশী স্মরণের প্রয়োজনও বোধ করে না, এই জন্য যে তাকে স্মরণ করলে কৃত্রিমভাবে তৈরী অনেক মহানায়ককে পিছনের টেবিলে বসা…

প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তি রাজনীতিবিদ সাবেক মন্ত্রী মশিউর রহমান যাদু মিয়ার ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল ১২ মার্চ বুধবার। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।

বহুমাত্রিক প্রতিভার এই মানুষ ১৯২৪ সালের ৯ জুলাই তৎকালীন রংপুর জেলা আজকের নীলফামারী জেলার ডিমলার খগাখড়িবাড়ীর সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ওসমান গনি ও মা আবিউননেছা।১৯৭৯ সালের ১২ মার্চ জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে যাদু মিয়া ইন্তেকাল করেন।৪০-শেষের দিকে তিনি ইয়াং ম্যান অ্যাসোসিয়েশন অব পাকিস্তানের পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান ছিলেন।তিনি ৫০ দশকের শেষ দিকে রংপুর জেলা বোর্ডের কনিষ্ঠতম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

৬০-এর দশকের শেষের দিকে মশিউর রহমান যাদু মিয়া ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ও আইয়ুব বিরোধী ১১ দফা আন্দোলনে তিনি জাতীয় পরিষদের ভেতরে ও বাইরে সোচ্চার দাবি উপস্থাপন করেন এবং আন্দোলনের পে মওলানা ভাসানীর আহ্বানে জাতীয় পরিষদের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

১৯৬৯ সালে লায়েলপুরে কৃষক সম্মেলনে ইয়াহিয়া খানকে গাদ্দার বলার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়।১৯৭৭ সালে প্রগতিশীল, দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী শক্তির সমন্বয়ে প্রথমে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট ও পরে জাতীয়তাবাদী দল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন।

মওলানা ভাসানীর মৃত্যুর পর ন্যাপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন।তিনি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় সিনিয়র মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় তিনি ন্যাপ’র চেয়ারম্যান হিসাবে দলের প্রতীক ‘ধাণের শীষ’ জিয়াউর রহমান তথা বিএনপিকে প্রদান করেন। যদিও সেই বিএনপি আজ আর সেই প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতীক দানকারীকে মনে করে না।

কর্মসূচি :
বাংলাদেশ ন্যাপ’র বিভিন্ন জেলা কমিটি মরহুম যাদু মিয়া স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করেছে।

এদিকে মসিউর রহমান যাদু মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক বাণীতে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, জাতীয়তাবাদী, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মহান নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকীতে তার অমলিন স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসন বিরোধী সংগ্রামে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর দক্ষিণ হস্ত হিসেবে যাদু মিয়ার অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।

নেতৃদ্বয় বলেন, মশিউর রহমান যাদু মিয়াকে বাদ দিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ইতিহাস রচনা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি মেধাবী ও দুরদর্শী রাজনীতিক হিসেবেই পরিচিত। আজীবন তিনি সংগ্রাম করেছেন গণমানুষের মুক্তির জন্য।প্রতিবাদে প্রতিরোধে ও সংগ্রামে তিনি কখনো পিছপা হননি।

তারা বলেন, বৈষম্যহীণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যাদু মিয়া সংগ্রাম করেছেন। তার সেই সংগ্রামের পথ ধরেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।যাদের কারণে বাংলাদেশ, শাসকগোষ্টি ইতিহাস থেকে তাদের মুছে ফেলতে চেয়েছে বিভিন্ন সময়ে। মওলানা ভাসানী-যাদু মিয়াদের স্মরণ করতে হবে আগামী বাংলাদেশকে রক্ষার জন্যই, জনগণের ভোটাধিকার পরতিষ্ঠার জন্য। তাদের প্রদর্শিত পথে দেশের পতাকা-মানচিত্র, গণতন্ত্র রক্ষায় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

রাজনীতিক মশিউর রহমান যাদু মিয়া

আপডেট সময় : ১২:২৭:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া

জন্মালে মরতে হবে এটাই স্বাভাবিক এবং চিরসত্য। তবে এই মরণের মাঝে কিছু মরণ থাই পাহাড়ের চেয়ে ভারী বোধ হয়। জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মৃত্যু সে কথাটি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে সাহায্য করেছে অনেককেই। মানুষ মাত্রই দোষে এবং গুণে সমৃদ্ধ। কোন মানুষই বিতর্কের উর্দ্ধে থাকতে পারে না, থাকেও না। যাদু মিয়ার সম্পর্কেও বিতর্ক দীর্ঘসময়ের।

আমাদের রাষ্ট্রে এবং সমাজে রাজনৈতিক প্রশ্নের জটসমূহ যখন জটিল থেকে জটিল আকার ধারন করতে থাকে, যাদু মিয়া সম্পর্কিত বিতর্কও নতুন নতুন মাত্রা অর্জন করতে থাকে। রাজনীতিতে একটি অংশ তাঁকে একেবারে খারিজ করতে পারলে বেঁচে যান মনে হয়। আর অন্য অংশটি খুব বেশী স্মরণের প্রয়োজনও বোধ করে না, এই জন্য যে তাকে স্মরণ করলে কৃত্রিমভাবে তৈরী অনেক মহানায়ককে পিছনের টেবিলে বসা…

প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তি রাজনীতিবিদ সাবেক মন্ত্রী মশিউর রহমান যাদু মিয়ার ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল ১২ মার্চ বুধবার। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।

বহুমাত্রিক প্রতিভার এই মানুষ ১৯২৪ সালের ৯ জুলাই তৎকালীন রংপুর জেলা আজকের নীলফামারী জেলার ডিমলার খগাখড়িবাড়ীর সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ওসমান গনি ও মা আবিউননেছা।১৯৭৯ সালের ১২ মার্চ জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে যাদু মিয়া ইন্তেকাল করেন।৪০-শেষের দিকে তিনি ইয়াং ম্যান অ্যাসোসিয়েশন অব পাকিস্তানের পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান ছিলেন।তিনি ৫০ দশকের শেষ দিকে রংপুর জেলা বোর্ডের কনিষ্ঠতম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

৬০-এর দশকের শেষের দিকে মশিউর রহমান যাদু মিয়া ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ও আইয়ুব বিরোধী ১১ দফা আন্দোলনে তিনি জাতীয় পরিষদের ভেতরে ও বাইরে সোচ্চার দাবি উপস্থাপন করেন এবং আন্দোলনের পে মওলানা ভাসানীর আহ্বানে জাতীয় পরিষদের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

১৯৬৯ সালে লায়েলপুরে কৃষক সম্মেলনে ইয়াহিয়া খানকে গাদ্দার বলার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়।১৯৭৭ সালে প্রগতিশীল, দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী শক্তির সমন্বয়ে প্রথমে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট ও পরে জাতীয়তাবাদী দল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন।

মওলানা ভাসানীর মৃত্যুর পর ন্যাপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন।তিনি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদায় সিনিয়র মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় তিনি ন্যাপ’র চেয়ারম্যান হিসাবে দলের প্রতীক ‘ধাণের শীষ’ জিয়াউর রহমান তথা বিএনপিকে প্রদান করেন। যদিও সেই বিএনপি আজ আর সেই প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতীক দানকারীকে মনে করে না।

কর্মসূচি :
বাংলাদেশ ন্যাপ’র বিভিন্ন জেলা কমিটি মরহুম যাদু মিয়া স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করেছে।

এদিকে মসিউর রহমান যাদু মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক বাণীতে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, জাতীয়তাবাদী, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মহান নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকীতে তার অমলিন স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসন বিরোধী সংগ্রামে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর দক্ষিণ হস্ত হিসেবে যাদু মিয়ার অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।

নেতৃদ্বয় বলেন, মশিউর রহমান যাদু মিয়াকে বাদ দিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ইতিহাস রচনা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি মেধাবী ও দুরদর্শী রাজনীতিক হিসেবেই পরিচিত। আজীবন তিনি সংগ্রাম করেছেন গণমানুষের মুক্তির জন্য।প্রতিবাদে প্রতিরোধে ও সংগ্রামে তিনি কখনো পিছপা হননি।

তারা বলেন, বৈষম্যহীণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যাদু মিয়া সংগ্রাম করেছেন। তার সেই সংগ্রামের পথ ধরেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।যাদের কারণে বাংলাদেশ, শাসকগোষ্টি ইতিহাস থেকে তাদের মুছে ফেলতে চেয়েছে বিভিন্ন সময়ে। মওলানা ভাসানী-যাদু মিয়াদের স্মরণ করতে হবে আগামী বাংলাদেশকে রক্ষার জন্যই, জনগণের ভোটাধিকার পরতিষ্ঠার জন্য। তাদের প্রদর্শিত পথে দেশের পতাকা-মানচিত্র, গণতন্ত্র রক্ষায় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।