ঢাকা ০৫:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদ্রাসা ছাত্রীর মাথা ন্যাড়ার অভিযোগ বড় হুজুরের বিরুদ্ধে

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৪৫:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫ ৭২ বার পড়া হয়েছে

মাদ্রাসা ছাত্রীর মাথা ন্যাড়ার অভিযোগ বড় হুজুরের বিরুদ্ধে

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মাদ্রাসা ছাত্রীর মাথা ন্যাড়ার করার অভিযোগের আঙ্গুল বড় হুজুরের বিরুদ্ধে। ১১ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা ছাত্রীর। বয়সের তাছলিমা খাতুনের চুল অনেক বড়। খোপা বাঁধলে প্রতিবেশীরা বলতেন, তাছলিমার মাথার চেয়ে খোপা বড়। তাছলিমার সেই চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে ঘটে এই ঘটনা। মঙ্গলবার দুপুরের খাবার দিতে গিয়ে তাছলিমার মাথা ন্যাড়া দেখতে পান বলে দাবি করেছেন তার মা আবেদান বেগম। সবশেষ বৃহস্পতিবার ঘটনাটি জানাজানি হয়।

তাছলিমা তাড়াশের কৃষ্ণাদিঘী গ্রামের তালিমুল নিসা মহিলা হাফিজিয়া মাদ্রাসার কেতাব বিভাগের ছাত্রী।

তাছলিমার অভিযোগ গত মঙ্গলবার দুপুরে মাদ্রাসার একজন নারী শিক্ষক তাছলিমাকে বলেন, তোমার মাথায় উকুন। বড় চুলের জন্য উকুন হয়েছে। এসো মাথা ন্যাড়া করে দেই। কিছুদিনের মধ্যে আবার চুল বড় হয়ে যাবে। প্রথমে কাঁচি দিয়ে চুল ছোট করেন। আর বড় হুজুর হাফেজ মাওলানা মো. আব্দুল মারুফ শ্যাম্পু কিনে এনে জোর করে ধরে দুই শিক্ষক তাছলিমাকে ন্যাড়া করে দেন।

তাছলিমার মা আবেদান বেগম বলেন, প্রতিদিন তিন বেলার খাবার পৌঁছে দেন। সেদিন খাবার দিতে গিয়ে মাথা ন্যাড়া দেখতে পান। তার মাথায় তখনও রক্ত ঝড়ছে। পরে আমিও চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।

তাছলিমার বাবা সমাজ আলী বলেন, ভ্যান চালানোর টাকায় আমাদের সংসার চলে। বৃদ্ধ মা, দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে পাঁচজনের পরিবার। অভাব-অনটন লেগেই থাকে সংসারে। তারপরও মেয়ের চুলের যত্নে কখনো অবহেলা করিনি।

দুই ধরনের তেল কিনে দিতাম মেয়ের চুলে দেওয়ার জন্য। আমাদের না জানিয়ে কেন মেয়েকে ন্যাড়া করা হলো? আমার অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করেয়েছি। মাদ্রাসা থেকে একবার খবরও নিলো না। উল্টো মাদ্রাসা থেকে আমার মেয়েকে বের করে দেওয়ার পায়তারা চলছে, এর বিচার চান তিনি।

অভিযোগ অস্বীকার করে মাদ্রাসার বড় হুজুর হাফেজ মাওলানা মো. আব্দুল মারুফ বলেন, তাছলিমার মাথা আমরা ন্যাড়া করে দেইনি। সে ও তার সহপাঠিরা মিলে এই কাজ করেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, এই ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। ভুক্তভোগী পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মাদ্রাসা ছাত্রীর মাথা ন্যাড়ার অভিযোগ বড় হুজুরের বিরুদ্ধে

আপডেট সময় : ১০:৪৫:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

মাদ্রাসা ছাত্রীর মাথা ন্যাড়ার করার অভিযোগের আঙ্গুল বড় হুজুরের বিরুদ্ধে। ১১ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা ছাত্রীর। বয়সের তাছলিমা খাতুনের চুল অনেক বড়। খোপা বাঁধলে প্রতিবেশীরা বলতেন, তাছলিমার মাথার চেয়ে খোপা বড়। তাছলিমার সেই চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে ঘটে এই ঘটনা। মঙ্গলবার দুপুরের খাবার দিতে গিয়ে তাছলিমার মাথা ন্যাড়া দেখতে পান বলে দাবি করেছেন তার মা আবেদান বেগম। সবশেষ বৃহস্পতিবার ঘটনাটি জানাজানি হয়।

তাছলিমা তাড়াশের কৃষ্ণাদিঘী গ্রামের তালিমুল নিসা মহিলা হাফিজিয়া মাদ্রাসার কেতাব বিভাগের ছাত্রী।

তাছলিমার অভিযোগ গত মঙ্গলবার দুপুরে মাদ্রাসার একজন নারী শিক্ষক তাছলিমাকে বলেন, তোমার মাথায় উকুন। বড় চুলের জন্য উকুন হয়েছে। এসো মাথা ন্যাড়া করে দেই। কিছুদিনের মধ্যে আবার চুল বড় হয়ে যাবে। প্রথমে কাঁচি দিয়ে চুল ছোট করেন। আর বড় হুজুর হাফেজ মাওলানা মো. আব্দুল মারুফ শ্যাম্পু কিনে এনে জোর করে ধরে দুই শিক্ষক তাছলিমাকে ন্যাড়া করে দেন।

তাছলিমার মা আবেদান বেগম বলেন, প্রতিদিন তিন বেলার খাবার পৌঁছে দেন। সেদিন খাবার দিতে গিয়ে মাথা ন্যাড়া দেখতে পান। তার মাথায় তখনও রক্ত ঝড়ছে। পরে আমিও চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।

তাছলিমার বাবা সমাজ আলী বলেন, ভ্যান চালানোর টাকায় আমাদের সংসার চলে। বৃদ্ধ মা, দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে পাঁচজনের পরিবার। অভাব-অনটন লেগেই থাকে সংসারে। তারপরও মেয়ের চুলের যত্নে কখনো অবহেলা করিনি।

দুই ধরনের তেল কিনে দিতাম মেয়ের চুলে দেওয়ার জন্য। আমাদের না জানিয়ে কেন মেয়েকে ন্যাড়া করা হলো? আমার অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করেয়েছি। মাদ্রাসা থেকে একবার খবরও নিলো না। উল্টো মাদ্রাসা থেকে আমার মেয়েকে বের করে দেওয়ার পায়তারা চলছে, এর বিচার চান তিনি।

অভিযোগ অস্বীকার করে মাদ্রাসার বড় হুজুর হাফেজ মাওলানা মো. আব্দুল মারুফ বলেন, তাছলিমার মাথা আমরা ন্যাড়া করে দেইনি। সে ও তার সহপাঠিরা মিলে এই কাজ করেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, এই ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। ভুক্তভোগী পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।