মহাকবির জন্মতিথি ঘিরে সাগরদাঁড়িতে রঙিন উৎসব

- আপডেট সময় : ০২:৪৬:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫ ৪৬ বার পড়া হয়েছে

নতুন রঙে সেজে ওঠেছে মহাকবির জন্মভিটা। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে, মধুমেলা। চলবে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত। কবির ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মেলার আয়োজক যশোর জেলা প্রশাসন।
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতিবিজড়িত যশোরের সাগরদাঁড়িতে মেলার উদ্বোধন করবেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
মধু মেলা ঘিরে সাগরদাঁড়িতে সাজ সাজ রব। মেলাপ্রাঙ্গণ সাজছে রঙিন সাজে। মধুমঞ্চ থেকে শুরু করে স্টল-সব কিছুতেই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বলা যায় গোটা সাগরদাঁড়িই সেজে ওঠেছে বর্ণিল সাজে। এরই মধ্যে আশপাশের এলাকার বাড়িগুলোতে পা পড়তে শুরু হয়েছে, দুরদূরান্তের আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু-বান্ধবদের।
আর বুধবার থেকেই সাগরদাঁড়িতে ভিড় বাড়ছে মধু ভক্তদের। এসব ভক্ত কবির স্মৃতিবিজড়িত কপোতাক্ষ নদের পাড়, জমিদার বাড়ির আম্রকানন, বিদায় ঘাট, মধুপল্লিতে আশ্রয় নিয়েছেন। মেলা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে এসব এলাকা মানুষের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠবে।
প্রশাসন অনুষ্ঠান সূচির মধ্যে মেলামঞ্চে প্রতিদিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এসব অনুষ্ঠানে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী ও রাজনীতিকরা অংশগ্রহণ নেন। মেলামঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও ব্যবস্থা রয়েছে।
মেলায় আগত শিশু-কিশোরসহ সাধারণ মানুষের চিত্তবিনোদনের জন্য এবারও থাকছে নানা আয়োজন। তার মধ্যে সার্কাস, নাগরদোলা, চরকি, যাদু ও মৃত্যুকূপ। তবে মেলা কেন্দ্র করে অতিরিক্ত মুনাফা লোটার আশায় মেলায় অশ্লীলতার যে অভিযোগ উঠেছিল এবার তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের কথা জানান আয়োজকরা।
মধুমেলায় স্টল বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ীরা পণ্যের পসরা সাজাতে শুরু করেছেন। এসব স্টলে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প পণ্য, খেলনা, গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় উপকরণ, পোশাকসহ নানা পণ্য স্থান পাচ্ছে। স্টল ঘিরে এরই মধ্যে উৎসুক মানুষের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে।
মধুমেলা উপভোগ করতে প্রতি বছর সাগরদাঁড়িসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে ঘরে ঘরে আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতি দেখা যায়। এবারও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। এলাকার অনেক বাড়িতে এখন বাইরের আত্মীয়রা অবস্থান নিয়েছেন। অনেক পরিবারে মেয়ে-জামাতা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। আবার বাইরের স্বজনদের দাওয়াত দিয়েও এই সময়টিতে নিয়ে আসেন কেউ কেউ।
মধুপল্লীর কাস্টডিয়ান হাসানুজ্জামান বলেন, মধুমেলা উপলক্ষে মধুপল্লী সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। দর্শনার্থীদের কবির ভাস্কর্য, প্রসূতিস্থল, কাছারিবাড়ি, স্মৃতি বিজড়িত আসবাবপত্র ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র দেখানোর ব্যাপারে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, সাগরদাঁড়িতে মধুমেলা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মধুমঞ্চে সপ্তাহব্যাপী কেশবপুর ও যশোরের সংস্কৃতি সংগঠনসমূহের সঙ্গে দেশবরেণ্য কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীরা অংশ নেবেন।
এবারও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকেল মধুসূদন পদক দেওয়া হবে। মেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসন ব্যাপক তৎপর থাকবে। দর্শনার্থীদের মধুমেলা উপভোগ করতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তার সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।