ঢাকা ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভ্যাট প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা, নতুবা রাস্তায় নামবেন

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৫১:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫ ৯০ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ভ্যাট প্রত্যাহারের জন ৭ দিনের সময় বেধে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এই সময়ের ভ্যাট-কর প্রত্যাহারে উদ্যোগ নেওয়া না হলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ঢাকায় বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা এ হুঁশিয়ারি দেন। সাংবাদিক বৈঠকে ব্যবসায়ীরা প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতের ব্যবসায়ীরা। এদিন তারা গ্যাসের বাড়তি দাম বাড়ানোর প্রস্তাবনাকে ভোক্তা স্বার্থবিরোধী উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ওপর ভ্যাট ও করের বোঝা চাপানো হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের প্রান্তিক কৃষক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। যে হারে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য বিস্কুট, কেক, জুসসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। আর ভোক্তারা ক্রয়ক্ষমতা হারালে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের অধিকাংশ কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী বলেন, আমরা প্রান্তিক কৃষকের বিভিন্ন কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করে জুস, ড্রিংকস, আচার, সস তৈরি করি। টম্যাটো, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প ইত্যাদি পণ্যের ওপর মূসক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।

বাপার সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক, এসিআই অ্যাগ্রো বিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী, এসএমসি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ নাসির, বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া, আকিজ ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের পরিচালক সৈয়দ জহুরুল আলম, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম, কিশোয়ান ও বনফুলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল ইসলামসহ কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতের বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালক ও শীর্ষ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন প্রান্তিক চাষিরা। এখন যদি ভ্যাট ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যায় তবে অনেকেই এসব পণ্য ক্রয়ের সক্ষমতা হারাবেন। এর প্রভাবে কারখানা বন্ধ হলে বহু শ্রমিকের জীবনে অনিশ্চয়তা নেমে আসবে। সংবাদ সম্মেলনে বাপার সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, সরকার থেকে বলা হচ্ছে, ভ্যাট ও কর বাড়ানোয় খুব একটা প্রভাব পড়বে না। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।

দেশের মানুষের সংস্কৃতি যদি দেখি, চায়ের দোকান থেকে অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ সকালে এক কাপ চা, একটি বিস্কুট কিংবা কেক খেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছেন। এখন যদি বিস্কুট ও কেকের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর সঙ্গে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পায় তবে ৫ টাকার একটি বিস্কুট আর তৈরি করা সম্ভব হবে না। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষটি সহজে ক্ষুধা নিবারণের পথটি হারাবেন। বাপার সভাপতি বলেন, সরকারকে বোঝানো হয়েছে যে ট্যাক্স বাড়লেই যে রেভিনিউ বাড়বে, আসলে তা ঠিক নয়।

খাদ্যপণ্যে ভ্যাট-কর বাড়লে ক্রয়-বিক্রয় কমবে। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ, আমাদের শিল্পকে বাঁচান। এই সরকার অসংখ্য মানুষের আশা ভরসার সরকার। ভ্যাট-কর যদি প্রত্যাহার না করেন, আমরা রাস্তায় নামব। আমরা উৎপাদন বন্ধ করে দেব। যদি ভ্যাট-কর বেড়েই যায়, এমনিতেই আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ভ্যাট প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা, নতুবা রাস্তায় নামবেন

আপডেট সময় : ০৭:৫১:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

 

ভ্যাট প্রত্যাহারের জন ৭ দিনের সময় বেধে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এই সময়ের ভ্যাট-কর প্রত্যাহারে উদ্যোগ নেওয়া না হলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ঢাকায় বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা এ হুঁশিয়ারি দেন। সাংবাদিক বৈঠকে ব্যবসায়ীরা প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতের ব্যবসায়ীরা। এদিন তারা গ্যাসের বাড়তি দাম বাড়ানোর প্রস্তাবনাকে ভোক্তা স্বার্থবিরোধী উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ওপর ভ্যাট ও করের বোঝা চাপানো হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের প্রান্তিক কৃষক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। যে হারে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য বিস্কুট, কেক, জুসসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। আর ভোক্তারা ক্রয়ক্ষমতা হারালে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের অধিকাংশ কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী বলেন, আমরা প্রান্তিক কৃষকের বিভিন্ন কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করে জুস, ড্রিংকস, আচার, সস তৈরি করি। টম্যাটো, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প ইত্যাদি পণ্যের ওপর মূসক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।

বাপার সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক, এসিআই অ্যাগ্রো বিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী, এসএমসি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ নাসির, বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া, আকিজ ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের পরিচালক সৈয়দ জহুরুল আলম, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম, কিশোয়ান ও বনফুলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল ইসলামসহ কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতের বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালক ও শীর্ষ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন প্রান্তিক চাষিরা। এখন যদি ভ্যাট ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যায় তবে অনেকেই এসব পণ্য ক্রয়ের সক্ষমতা হারাবেন। এর প্রভাবে কারখানা বন্ধ হলে বহু শ্রমিকের জীবনে অনিশ্চয়তা নেমে আসবে। সংবাদ সম্মেলনে বাপার সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, সরকার থেকে বলা হচ্ছে, ভ্যাট ও কর বাড়ানোয় খুব একটা প্রভাব পড়বে না। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।

দেশের মানুষের সংস্কৃতি যদি দেখি, চায়ের দোকান থেকে অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ সকালে এক কাপ চা, একটি বিস্কুট কিংবা কেক খেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছেন। এখন যদি বিস্কুট ও কেকের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর সঙ্গে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পায় তবে ৫ টাকার একটি বিস্কুট আর তৈরি করা সম্ভব হবে না। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষটি সহজে ক্ষুধা নিবারণের পথটি হারাবেন। বাপার সভাপতি বলেন, সরকারকে বোঝানো হয়েছে যে ট্যাক্স বাড়লেই যে রেভিনিউ বাড়বে, আসলে তা ঠিক নয়।

খাদ্যপণ্যে ভ্যাট-কর বাড়লে ক্রয়-বিক্রয় কমবে। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ, আমাদের শিল্পকে বাঁচান। এই সরকার অসংখ্য মানুষের আশা ভরসার সরকার। ভ্যাট-কর যদি প্রত্যাহার না করেন, আমরা রাস্তায় নামব। আমরা উৎপাদন বন্ধ করে দেব। যদি ভ্যাট-কর বেড়েই যায়, এমনিতেই আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।