বাঙালি জাতিকে জাগিয়ে তোলার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

- আপডেট সময় : ০৭:০৪:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০২৩ ৬৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা
১৯৭১ সালের ৭ মার্চের এ ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন। তার এ ভাষণ ছিল জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার চূড়ান্ত নির্দেশনা।
এদিন ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।
সেদিনের ১৮ মিনিটের ভাষণে মুক্তিযুদ্ধের জন্য জাতিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো। আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি…, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাক।
পাকিস্তানের শাসন-শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত পর্বে বঙ্গবন্ধু এ ভাষণ দেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) সমবেত জনসমুদ্রে জাতির উদ্দেশে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার এই ভাষণ জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছিল সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে। ২০১৭ সালে ইউনেস্কো এই ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
৭ই মার্চের ভাষণের ১৮দিন পর ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা লিপ্ত হয় নির্বিচার গণহত্যায়। মূলত বাংলাদেশের এই গণহত্যাই পৃথিবীর অন্যতম গণহত্যা বলে গবেষকদের দাবি।
সেদিনের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, ১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি। ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান মার্শাল ল জারি করে দশ বৎসর পর্যন্ত আমাদের গোলাম করে রেখেছে।
১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে ৭ই জুনে আমার ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ১৯৬৯-এর আন্দোলনে আইয়ুব খানের পতন হওয়ার পর যখন ইয়াহিয়া খান সাহেব সরকার নিলেন, তিনি বললেন, দেশে শাসনতন্ত্র দেবেন, গণতন্ত্র দেবেন। আমরা মেনে নিলাম।
উত্তাল ৭ই মার্চ তৎকালীন পূর্ববঙ্গের আনাচে কানাচে থেকে গণমানুষের মিছিল এসে ঝড়ো হয়েছিল আজকের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সেই জনসমুদ্রেই গণনায়ক ঘোষণা দিয়েছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।