বাংলাদেশ-ভারত কন্টেইনার ট্রেন সার্ভিস এক নতুন দিগন্তের সূচনা

- আপডেট সময় : ০৪:২২:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জুলাই ২০২০ ৫০৯ বার পড়া হয়েছে

ভয়েস রিপোর্ট
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কনটেইনার ট্রেন সার্ভিস শুরুর চুক্তি হয়েছিলো ২০১৭ সালের এপ্রিল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে কন্টেইনার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশ কনটেইনার কোম্পানি লিমিটেডের একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। তারই আলোকে ২০১৮ ৩ এপ্রিল অর্থাৎ এক বছর পর প্রথম পরীক্ষামূলক একটি পণ্যবাহী ট্রেন কলকাতা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম স্টেশন (বিবিডাব্লিউ) তীর পর্যন্ত এসেছিলো। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য প্রায় ৭৫০ কোটি মার্কিট ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ ভারত থেকে আমদানি করে ৬৮০ কোটি ডলারের পণ্য। রপ্তানি করে ৭০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। অবশ্য এই হিসেবটি ২০১৮ সালের।
বিশাল এই আমদানি-রপ্তানির অধিকাংশ পণ্যই আসে সড়ক পথে। বেনাপোল-পেট্রাপোল ব্যবহার করে নানা জটিলতা শেষে পণ্য আনা নেওয়ায় সময় লেগে যায় প্রায় একমাস। এতে করে আমদানি-রপ্তানির ব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। এই সমস্যা সমাধানে ২০১৭ সালের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। রেলপথে পরিবহণ ব্যয় সড়ক পরিবহণের তুলনায় সাশ্রয়ী। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসের ১৩ তারিখে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ থেকে ৩৮৪ টন শুকনো মরিচ নিয়ে প্রথম পার্সেল ট্রেনটি বাংলাদেশে আসে। এবারে নিয়মিত পণ্যবাহী কনটেইনার সার্ভিস শুরু হলো। যার প্রেক্ষিতে ৫০টি কন্টেইনার বোঝাই ভারতীয় মালবাহী একটি ট্রেন রবিবার বাংলাদেশের অন্যতম স্থল বন্দর বেনাপোলে পৌছেছে।
কনটেইনার ট্রেনটি ভারতের কলকাতার মাঝেরহাটের কনটেইনার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের (কনকোর) টার্মিনাল থেকে রওনা হয় এবং এটি বেনাপোলে পৌছে। ভারতে কনটেইনার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের মনোনীত ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো এবং টার্মিনালসমুহের সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন স্টেশনকে সংযুক্ত করার জন্য স্থায়ী পরিষেবার কার্যক্রমের অংশ। চুক্তির পর এই প্রথম সরাসরি কনটেইনার সার্ভিস চালুর হয়েছে, এমন বার্তাই দিলো ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে।
বর্তমানে কোভিড -১৯ মহামারীতে দু’দেশের আমদানি-রপ্তানিতে চরম আঘাত আসে। এই সংকট উত্তরণ ঘটাতে রেলপথ ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের সময়োপযোগী পরামর্শ দেয় ভারত। বাংলাদেশ সেই আহ্বানকে স্বাগত জানান। তারপর থেকেই শুরু হলো করোনাকালীন রেলপথে পণ্য পরিবহন। গেল জুন মাসে ১০৩টি পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রেন বাংলাদেশে পণ্য সরবরাহ কাজে নিয়োজিত ছিলো। ফলে উভয় দেশের সরকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য কার্যকমের বিকল্প হিসেবে রেলপথকে ব্যবহারে ব্যবসায়ীরাও খুশি। কারণ, এটি হচ্ছে, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার অন্যতম পন্থা। শুধু তাই নয়, এতে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য অর্থাৎ আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। রেলপথের মাধ্যমে নতুন চালু হওয়া কনটেইনার ট্রেন সার্ভিসের মাধ্য দিয়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের এক বিশাল সুযোগ উন্মুক্ত হলো। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, উভয় দেশের সরকারের এই উদ্যোগ ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়িবে। ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রেনটি বেনাপোল রেলওয়ে ও কাস্টম কর্মকর্তারা গ্রহণ করেন।