উন্নয়নশীল বাংলাদেশের পাশে থাকতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৫:২৯:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২০ ৪৭৬ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস রিপোর্ট
বাংলাদেশের জাতির পিতা গণমানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশের। বীরের জাতি বাঙালি মাথা নত করে নয়, শিরদাড়া উচু করে বাঁচবে। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে বলেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। স্বাধীন কোন দেশে এতটা স্বল্প সময়ে এমন অভাবনীয় উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। আধুনিক সভ্যতার প্রতীক যোগাযোগ, খাদ্য উৎপাদনে রেকর্ড, উন্মত্ত পদ্মায় স্বপ্নে পদ্মাসেতু আজ বাস্তবরূপলাভ করেছে। আন্তর্জাতিকভাবে কানেক্টিভিটিতেও অগ্রসরমান ভূমিকায় বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায় হচ্ছে বলেই উন্নত বিশ্বের দেশগুলো বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তারা বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশিদার হতে চাইছে। ঢাকায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র’ শীর্ষক সেমিনারে যোগ দিয়ে এসব কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি এও বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছে। পৃথিবীর অনেক দেশই যুগ যুগ ধরে তাদের জাতির পিতাকে সামনে রেখে কাজ করে চলেছে। এটা একটা পবিত্র কাজ বলেও উল্লেখ করেন খালিদ মাহমুদ। আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এমনটিই হয়েছে। আমরা জাতির পিতাকে সামনে রেখেই কাজ করে চলেছি। বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে বলেই আজ যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন সবাই বাংলাদেশের পাশে থাকতে চাইছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ সেই জায়গাটাত পৌছে গিয়েছে বলেই এমনটি হচ্ছে। উন্নয়নের আলোকবর্তিকা জ্বালিয়ে বাঙালিকে যিনি পথ দেখাচ্ছেন, তার নাম শেখ হাসিনা। বাঙালির ভাগ্যপরিবর্তের জাদুরকাঠি হাতে নিয়ে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) গতকাল এই সেমিনারের আয়োজন করে। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবার বিশ্বে বহুমাত্রিক প্রতিভাধর একটি পরিবার। পৃথিবীর বহুরাষ্ট্রনায়কের কিছু না কিছু মজার স্মৃতি থাকে। তেমনি বঙ্গবন্ধু একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করার স্মৃতিও রয়েছে। তার জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামাল একজন সংস্কৃতি কর্মী ছিলেন। বঙ্গবন্ধু পরিবারের মতো বহুমাত্রিক প্রতিভাধর পরিবার পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই। বাংলাদেশকে ধরে রাখতে হলে বঙ্গবন্ধুকে ধরে রাখতে হবে। যার কোনো বিকল্প নাই। আমরা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে ধারন করেছি বলেই বাংলাদেশ দারিদ্র্যের সীমা পেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পৌছে গেছে। আমাদের মনে রাখতে হবে শেখ হাসিনা হারার নেতা নন, তিনি সকল দুর্যোগ এবং কঠিন পরিস্থিতিকে হার মানিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার নেতা। বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা দুনিয়ার অনেক মানুষ স্বীকার করে গর্ব করে। তারা আমাদের অনুসরণ করে। কিন্তু দু:খ হয়, যখন আমাদের দেশের কিছু মানুষ উন্নয়নকে ভিন্ন ভাবে দেখতে চান। খালিদ মাহমুদ বলেন, ৭৫’র জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার করে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকেই কেবল হত্যা করা হয়নি, বাঙালির অস্তিত্বকে সরাসরি আঘাত করা হয়েছিলো। বাঙালির অস্তিত্ব, শিল্প-সংস্কৃতিসহ দেশকে ভঙ্গুর দশা থেকে কি করে মাথা উচু করে দাঁড়াতে হয়, তার মন্ত্র শিখিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের নাম উচ্চারণের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নামটিও চলে আসে। এটিই হচ্ছে একটি জাতির চেতনা। আর এই চেতনায় যিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন, তার নাম শেখ হাসিনা। ফলে বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। শুধু চলচ্চিত্র অঙ্গণে নয়, বাংলাদেশের ধুলিকণার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু জড়িয়ে থাকবেন-যতদিন বাংলাদেশ থাকবে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সত্তরের নির্বাচনে বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুকেই তাদের ভাগ্যদেবতা মেনে নিয়ে নেতা বানিয়েছেন। সেই ম্যান্ডেট নিয়েই বজ্রকন্ঠে দুনিয়া কাঁপানো উচ্চারণ করেছিলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, তবুও এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ’। সেই মহান নেতা বঙ্গবন্ধু বাঙলার মানুষকে শোষকদের কবল থেকে রক্ষা করেছিলেন। যারা একদিন বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলতে দ্বিধা করেনি, আজ তারাই বাংলাদেশের পাশে থাকতে চাইছে। এটা আমাদের অর্জন। এই অর্জন বাঙালির। যা এসেছে শেখ হাসিনার হাত ধরেই। দেশে সুস্থধরার চলচ্চিত্র প্রচলনও হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই। কিন্তু বাঙালি জাতির দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। সেই নারকীয় হত্যাকান্ড থেকে শিশু এবং গর্ভবতী মায়েরাও রক্ষা পাননি। সেই হত্যাকাণ্ডে একজন অভিনেতাকে হত্যা করা হয়েছে। একজন সাংস্কৃতিক কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। একজন খেলোয়াড়কে হত্যা করা হয়েছে। একজন গৃহবধুকে হত্যা করা হয়েছে। এ রকম পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে ঘটেনি। এ হত্যাকাণ্ড মূলত একটি ব্যক্তি বা পরিবারকে হত্যা করা নয়। এটা মূলত বাংলাদেশকেই হত্যা করার অপচেষ্টা করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন খালিদ মাহমুদ। পঁচাত্তরে পরে প্রথম নকল ছবি দোস্ত-দুশমন নির্মাণ করা হয়। কীভাবে দুস্ত দুশমন হয়ে যায়, আমরা দেখেছি-পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর। এ ধারাবাহিকতায় আমরা দেখেছি ছবির নাম হয়েছে, বার গুণ্ডা তের পাণ্ডা। আসলে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টেই হত্যা করা হয়েছিল। বিএনপি সময়ে সিনেমায় অশ্লীলতা ও সেসময়ের সেন্সরবোর্ডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এসবের চেয়েও বড় অপরাধ হয়েছে, যখন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। তার চেয়ে বড় অপরাধ হচ্ছে যখন চলচ্চিত্রে বঙ্গবন্ধুকে খাঁটো করে দেখানো হয়েছিলো।