বর্ণাঢ্য জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালনের উদ্যোগ
- আপডেট সময় : ০৩:৩৯:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০ ৫০৫ বার পড়া হয়েছে
বিশেষ প্রতিনিধি
মাছে ভাতে বাঙালি এমন একটি প্রাচীন প্রবাল রয়েছে। মাছ এখন আর বাঙালিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। একটুকরো মাছ খেতে চায় না দুনিয়ার মানুষ কম মিলবে। আর এই তল্লাটের বাঙালির মাছ খাওয়ার প্রচলনটা উত্তারাধীকার সূত্রেই পাওয়া। মাছ পছন্দ করেন না এমন বাঙালি কেন, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষও কম মিলবে। বাংলার খাল-বিল, পুকুরসহ বিভিন্ন জলাশয়ে এক সময়ে মাছের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত ছিল, একটা সময়ে এসে তা অনেকটা হারিয়ে যায়। উন্নয়নের হাত ধরে শিল্প বর্জসহ নানা রকমের অবকাঠামো উন্নয়ন, লোক সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে প্রাকৃতিক মাছের সংকট দেখা দেয়। তবে, কিছুটা সময় লাগলেও উদ্যোগ থাকলে যে কোন কিছুরই ঘাটতি থাকেনা তার প্রমাণ করে দিয়েছেন, বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি একের পর এক উদ্যোগ নিয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্য দৃশ্যমান করেছেন। মৎস্য উৎপাদনে পৃথিবীর দ্বিতীয় স্থানে ওঠে এসেছে বাংলাদেশ।
মৎস্য সম্পদের ভান্ডারখ্যাত বাংলাদেশকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেবার চেষ্টা করা হচ্ছে। মৎস্য ও প্রাণী সম্পদের চাহিদা পূরণে চেষ্টার কোন অভাব নেই বর্তমান সরকারের। যার ধারাবাহিকতায় দেশের মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন এবং জনগণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি ও উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি নিয়ে ফি বারের মতো এ বছরও ‘মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি করি, সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ি’ এই শ্লোগানকে ধারণ করে ২১ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত দেশব্যাপী উদযাপন হতে যাচ্ছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২০। ২২ জুলাই সকাল সাড়ে দশটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের শুভ উদ্বোধন করবেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সপ্তম ও সমাপনী দিনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মৎস্য অধিদপ্তর ও বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় শেষে সপ্তাহ কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মৎস্য সপ্তাহ পালন উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলা কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। মাঠ পর্যায়ের কর্মসূচি বাস্তবায়নে গঠন করা হয়েছে জেলা, পার্বত্য জেলা ও উপজেলা কমিটি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির প্রথম দিন ব্যানার, ফেস্টুনসহ ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কদ্বীপ সজ্জিত করা হবে। একইদিনে ঢাকাসহ সকল বিভাগীয় শহরে বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যাল ও দর্শনীয় স্থানে অবস্থিত ডিজিটাল ডিসপ্লেতে মৎস্য খাতে বাংলাদেশ সরকারের অবদান এবং অর্জন স্ক্রল ও টিভিসি আকারে প্রচার করা হবে। দ্বিতীয় দিনে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। কর্মসূচির তৃতীয় দিনে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বঙ্গভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করবেন। একইদিনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পুকুর ও লেকে, ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশন ও ইডেন কলেজ পুকুরে এবং সাভারস্থ বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হবে।
এদিন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট বিনামূল্যে ছোট মাছ ও বিপন্ন মাছ সংরক্ষণে হ্যাচারি মালিক ও উদ্যোক্তাদের মাঝে জার্ম-প্লাজম বিতরণ করবে। পঞ্চম দিনে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জাতীয় সংসদ ভবনের লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করবেন। একইদিনে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে মৎস্য খাতে বর্তমান সরকারের বিশেষ বিশেষ সাফল্যের তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। কর্মসূচির ষষ্ঠদিনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস যথাক্রমে উত্তরার সাংগাম লেকে ও ধানমন্ডি লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করবেন।
এছাড়া জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের জেলা-উপজেলা কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মাইকিং, ব্যানার, ফেস্টুনের মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা, মৎস্য খাতে বর্তমান সরকারের অগ্রগতি ও সাফল্য বিষয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, মাছে ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রয়োগ বিরোধী অভিযান, মৎস্য আইন বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, মৎস্য চাষীদের মৎস্য চাষ বিষয়ে নিবিড় পরামর্শ প্রদান, চাষীদের মাঝে মৎস্যচাষের উপকরণ বিতরণসহ নানা কর্মসূচি।