বরেন্দ্র অঞ্চলে ৭০০ ফুট নিচেও জলের স্তর মিলছে না
- আপডেট সময় : ০৯:৪৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩ ১৪৮ বার পড়া হয়েছে
‘বিশ্ব জল দিবস’ রাষ্ট্রপুঞ্জে তিনদিনের সম্মেলন
রাজশাহীর পৌরসভা ও স্থানীয় প্রশাসনের আধিকতারীকরা বলেছেন, তারা নিরুপায়। কারণ ৭০০ ফুট পর্যন্ত বোরিং করেও জলের স্তর পাওয়া যাচ্ছে না। একারণে সমস্যার সমাধান হয়নি। ভবিষ্যতে এই সংকট আরও বাড়বে
ডেস্ক রিপোর্ট
গ্রীষ্মকাল। জলসংকট ঘিরে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব জল দিবস’। রাষ্ট্রপুঞ্জসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি পালন হলেও জলসংকট সমাধানের তেমন কোন উৎস মিলছে না। সর্বত্র বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে মানুষের জলের অধিকার।
উজানের জলের প্রবাহ কমে যাওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততার মাত্রা বেড়েছে। শুধুমাত্র উপকূলীয় অঞ্চলের নদীর জল পানের অযোগ্য ছিল, কিন্তু বর্তমানে বহু এলাকার ভূ-গর্ভস্থ জল পান করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব এলাকার মানুষ বৃষ্টি ও পুকুরের জলের ওপর নির্ভরশীল। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে দেশে সুপেয় জলের চরম সংকটের পথেই এগুবে।
বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলে জলের সংকট দীর্ঘদিনের। এই অঞ্চলে দিন দিন ভূগর্ভস্থ জলের স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাওয়ায় জলের সংকট জটিল। শুষ্ক মৌসুমে চরম বিপাকে মানুষজন। তানোরের মুন্ডুমালা পৌরসভার মাহালিপাড়া গ্রামে এখনও সুপেয় জলের উৎস তৈরি করতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। এ অবস্থায় গত তিন বছর ধরে গ্রামেরন মানুষ জলসংকটে রয়েছে।
রাজশাহীর তানোর পৌরসভা ও স্থানীয় প্রশাসনের আধিকতারীকরা বলেছেন, তারা নিরুপায়। কারণ ৭০০ ফুট পর্যন্ত বোরিং করেও জলের স্তর পাওয়া যাচ্ছে না। একারণে সমস্যার সমাধান হয়নি। ভবিষ্যতে এই সংকট আরও বাড়বে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাহালিপাড়া গ্রামটিতে তিন শতাধিক পরিবারের বসবাস। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজন বসবাস করেন। জলের স্তর না পাওয়ার অজুহাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। যা এই এলাকার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত করছে।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদরদপ্তরে উদ্বোধন হচ্ছে ‘২০২৩ ওয়াটার কনফারেন্স’। স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ে উদ্বোধন হবে বৈশ্বিক আয়োজনের। সমাপনী অনুষ্ঠান হবে ২৪ মার্চ। সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল অংশ নিচ্ছে। পাশাপাশি একাধিক সাইড-ইভেন্টে অংশ নেবেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
টানা ৪৬ বছর পর অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলন থেকেই আসবে শক্তিশালী ওয়াটার অ্যাকশন এজেন্ডা, থাকবে স্টেকহোল্ডারদের প্রতিশ্রুতি। এর আগে ১৯৭৭ সালে আর্জেন্টিনার মার ডেল প্লাতায় হয়েছিল সর্বশেষ পানি সম্মেলন।
আয়োজকেরা জানান, সম্মেলনের প্রাথমিক লক্ষ্য বৈশ্বিক জল সংকট নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং পানি সম্পর্কিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে আন্তর্জাতিকভাবে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে একটি শক্তিশালী ‘ওয়াটার অ্যাকশন এজেন্ডা’ তৈরি করা, যা জাতিসংঘের সদস্য দেশ ও স্টেকহোল্ডারদের প্রতিশ্রুতিকে উপস্থাপন করবে।
সম্মেলন প্রসঙ্গে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, ‘জাতিসংঘে অনুষ্ঠেয় জল সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে ‘ওয়াটার অ্যাকশন এজেন্ডা’ আসবে, যার মধ্য দিয়ে এসডিজি-৬ অর্জনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আসতে পারে। বাংলাদেশ থেকেও প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।