ঢাকা ১০:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পদত্যাগ করছেন না ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা 
  • আপডেট সময় : ১০:০২:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ ৭৬ বার পড়া হয়েছে

পদত্যাগ করছেন না ড. ইউনূস

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ড. ইউনূস পদত্যাগ করলে প্রবাসীরা রেমিটেন্স
পাঠানো বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি

ইউনূস পদত্যাগ করছেন না এমন খবরে
দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি

ইউনূস পদত্যাগ করুন, কোনো রাজনৈতিক দলই তা চায় না

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বির্হিবিশ্বেরও গুঞ্জন আছড়ে পড়ে। সর্বজনগ্রহণযোগ্য এই নোবেল জয়ীর পদত্যাগ ঘিরে দেশতো বটেই প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ড. ইউনূস পদত্যাগ করলে, তারা রেমিটেন্স পাঠানো বন্ধ করে দেবার হুমকিও দিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশিয়া তথা উন্নত বিশ্বের কোথাও দেশের প্রধান উপদেষ্টা (প্রধানমন্ত্রী সমপর্যায়) পদত্যাগের গুজবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন নজিবিহীন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। ইউনূস তার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করবেন-এমন খবরে সাধারণ মানুষ মুখবধির হয়ে যায়। ৫৪ বছরের বাংলাদেশে এমন গ্রহণযোগ্য কোন ব্যক্তি রয়েছে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ পোষণ করেন অনেকে।

ড. ইউনূস গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় পদত্যাগের ভাবনার কথা জানান, এ সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা বলেন। প্রায়ই সড়ক আটকে আন্দোলন, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হওয়া, রাষ্ট্রীয় কাজে নানা পক্ষের অসহযোগিতাসহ দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেন। ইউনূসের পদত্যাগের ভাবনার কথা জানাজানি হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।

শনিবার শেরেবাংলা নগরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনির্ধারিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছুটির দিনে সকল উপদেষ্টা এই বৈঠকে যোগদেন। বৈঠক শেষে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষামান সাংবাদিকদের ‘সুখবর দেন’ পরিকল্পনা উপদেষ্ঠা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বলেন, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছে না। এই খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময়।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ড. ইউনূস পদত্যাগ করছে না, বরং কোথায় কোথায় সমস্যার ডালপালা গজাচ্ছে, তা নির্ধারণে আমরা মনোনিবেশ করছি। এদিন বাংলামোটরে শিক্ষার্থীদের নতুন দল এনসিপির সংবাদ সম্মেলনে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ড. ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন ওঠায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দ্রুত যমুনায় যান তিনি। নির্বাচনের জন্য যেভাবে চাপ আসছে, তাতে একটি নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন হতে পারে বলে সন্দেহ পোষণ করেন ড. ইউনূস। এর দায়ভার তিনি নিতে চান না। নাহিদের সঙ্গে আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা এ কথাগুলো বলেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সাবেক তথ্য উপদেষ্ট। বলেছেন, আমি অধ্যাপক ইউনূসকে বলেছি, তাকে দায়িত্বে থাকতে হবে। কারণ, জনগণের কাছে তার প্রতিশ্রুতির জায়গা আছে। তিনি রাজনৈতিকভাবে বিষয়টা সমাধান করুন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসাবে বিএনপি নেতা ইশারাকের শপথ ঘিরে সম্প্রতি রাজপথ দখল নিয়ে যেভাবে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়েছে বিএনপি, তাতে জনজীবনে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটে। নগর ভবনে তালা, আদালত, এনবিআর ও যমুনার সামনে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল, সেই পরিপ্রেক্ষিতে ড. ইউনূস মনে করছেন যে, যদি তাকে জিম্মি করা হয় অথবা চাপ প্রয়োগ করে কোনো দাবি আদায় করা হয়, তিনি তাতে সন্তুষ্ট নন। দ্বিতীয়ত, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের মৌলিক কিছু পরিবর্তনের জন্যই তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন বলে মনে করেন। সেই মৌলিক কাজগুলো, যেমন বিচার-সংস্কার, এগুলো যদি তিনি করতে না পারেন, তাহলে তিনি থেকে কী লাভ? তিনি যে প্রতিশ্রুতির জায়গা থেকে এসেছিলেন, সেটি তিনি রক্ষা করতে পারছেন না এমন পরিস্থিতিতে।

এঅবস্থায় দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে হত্যাশা দেখা দেয়, ইউনূস পদত্যাগ করছেন না, এই ঘোষণায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফেরে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে থাকছেন। তিনি পদত্যাগ করবেন তা বলেননি। অন্য উপদেষ্টারাও থাকছেন। আমাদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আমরা সেই দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। কয়েক দিন ধরে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে শনিবার দুপুরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। বৈঠক শেষে পরিকল্পনা উপেদষ্টা সাংবাদিকদের এমন সুখবর দেন।

এর আগে বেলা দুইটা নাগাদ বৈঠক থেকে বের হয়ে আসেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। জরুরি কাজ থাকার কথা বলেন, বের হয়ে আসার কথা জানান। বৈঠকে নির্বাচন, সংস্কার এবং জুলাই ঘোষণা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলে সে সময় জানান পরিবেশ উপদেষ্ট। এর আগে এনইসি সম্মেলনকক্ষে বেলা ১১টায় একনেক সভা শুরু হয়। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে একনেক সভা শেষ হয়। বৈঠকে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। জানা যায়, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপদেষ্টাদের বাইরে আর কাউকে রাখা হয়নি। একনেক বৈঠক শেষে একে একে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিকল্পনাসচিবসহ সব সরকারি কর্মকর্তা এনইসি কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে।

গত বুধবার ঢাকা সেনানিবাসে অফিসার্স অ্যাড্রেস অনুষ্ঠানে দেওয়া সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কিছু বক্তব্য জনসমক্ষে প্রকাশ পায়। তাতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান, তার মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠাসহ জাতীয় নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য ছিল। ক্ষোভ ও হতাশা থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস পদত্যাগ করতে চাইছেন, এমন খবর তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সারা দেশে। এ নিয়ে বিএনপিসহ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আলাপ-আলোচনা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগ করুন, কোনো দলই সেটা চায় না। তবে দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় চায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

পদত্যাগ করছেন না ড. ইউনূস

আপডেট সময় : ১০:০২:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

ড. ইউনূস পদত্যাগ করলে প্রবাসীরা রেমিটেন্স
পাঠানো বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি

ইউনূস পদত্যাগ করছেন না এমন খবরে
দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি

ইউনূস পদত্যাগ করুন, কোনো রাজনৈতিক দলই তা চায় না

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বির্হিবিশ্বেরও গুঞ্জন আছড়ে পড়ে। সর্বজনগ্রহণযোগ্য এই নোবেল জয়ীর পদত্যাগ ঘিরে দেশতো বটেই প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ড. ইউনূস পদত্যাগ করলে, তারা রেমিটেন্স পাঠানো বন্ধ করে দেবার হুমকিও দিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশিয়া তথা উন্নত বিশ্বের কোথাও দেশের প্রধান উপদেষ্টা (প্রধানমন্ত্রী সমপর্যায়) পদত্যাগের গুজবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন নজিবিহীন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। ইউনূস তার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করবেন-এমন খবরে সাধারণ মানুষ মুখবধির হয়ে যায়। ৫৪ বছরের বাংলাদেশে এমন গ্রহণযোগ্য কোন ব্যক্তি রয়েছে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ পোষণ করেন অনেকে।

ড. ইউনূস গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় পদত্যাগের ভাবনার কথা জানান, এ সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা বলেন। প্রায়ই সড়ক আটকে আন্দোলন, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হওয়া, রাষ্ট্রীয় কাজে নানা পক্ষের অসহযোগিতাসহ দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেন। ইউনূসের পদত্যাগের ভাবনার কথা জানাজানি হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।

শনিবার শেরেবাংলা নগরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনির্ধারিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছুটির দিনে সকল উপদেষ্টা এই বৈঠকে যোগদেন। বৈঠক শেষে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষামান সাংবাদিকদের ‘সুখবর দেন’ পরিকল্পনা উপদেষ্ঠা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বলেন, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছে না। এই খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময়।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ড. ইউনূস পদত্যাগ করছে না, বরং কোথায় কোথায় সমস্যার ডালপালা গজাচ্ছে, তা নির্ধারণে আমরা মনোনিবেশ করছি। এদিন বাংলামোটরে শিক্ষার্থীদের নতুন দল এনসিপির সংবাদ সম্মেলনে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ড. ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন ওঠায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দ্রুত যমুনায় যান তিনি। নির্বাচনের জন্য যেভাবে চাপ আসছে, তাতে একটি নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন হতে পারে বলে সন্দেহ পোষণ করেন ড. ইউনূস। এর দায়ভার তিনি নিতে চান না। নাহিদের সঙ্গে আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা এ কথাগুলো বলেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সাবেক তথ্য উপদেষ্ট। বলেছেন, আমি অধ্যাপক ইউনূসকে বলেছি, তাকে দায়িত্বে থাকতে হবে। কারণ, জনগণের কাছে তার প্রতিশ্রুতির জায়গা আছে। তিনি রাজনৈতিকভাবে বিষয়টা সমাধান করুন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসাবে বিএনপি নেতা ইশারাকের শপথ ঘিরে সম্প্রতি রাজপথ দখল নিয়ে যেভাবে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়েছে বিএনপি, তাতে জনজীবনে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটে। নগর ভবনে তালা, আদালত, এনবিআর ও যমুনার সামনে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল, সেই পরিপ্রেক্ষিতে ড. ইউনূস মনে করছেন যে, যদি তাকে জিম্মি করা হয় অথবা চাপ প্রয়োগ করে কোনো দাবি আদায় করা হয়, তিনি তাতে সন্তুষ্ট নন। দ্বিতীয়ত, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের মৌলিক কিছু পরিবর্তনের জন্যই তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন বলে মনে করেন। সেই মৌলিক কাজগুলো, যেমন বিচার-সংস্কার, এগুলো যদি তিনি করতে না পারেন, তাহলে তিনি থেকে কী লাভ? তিনি যে প্রতিশ্রুতির জায়গা থেকে এসেছিলেন, সেটি তিনি রক্ষা করতে পারছেন না এমন পরিস্থিতিতে।

এঅবস্থায় দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে হত্যাশা দেখা দেয়, ইউনূস পদত্যাগ করছেন না, এই ঘোষণায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফেরে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে থাকছেন। তিনি পদত্যাগ করবেন তা বলেননি। অন্য উপদেষ্টারাও থাকছেন। আমাদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আমরা সেই দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। কয়েক দিন ধরে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে শনিবার দুপুরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। বৈঠক শেষে পরিকল্পনা উপেদষ্টা সাংবাদিকদের এমন সুখবর দেন।

এর আগে বেলা দুইটা নাগাদ বৈঠক থেকে বের হয়ে আসেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। জরুরি কাজ থাকার কথা বলেন, বের হয়ে আসার কথা জানান। বৈঠকে নির্বাচন, সংস্কার এবং জুলাই ঘোষণা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলে সে সময় জানান পরিবেশ উপদেষ্ট। এর আগে এনইসি সম্মেলনকক্ষে বেলা ১১টায় একনেক সভা শুরু হয়। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে একনেক সভা শেষ হয়। বৈঠকে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। জানা যায়, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপদেষ্টাদের বাইরে আর কাউকে রাখা হয়নি। একনেক বৈঠক শেষে একে একে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিকল্পনাসচিবসহ সব সরকারি কর্মকর্তা এনইসি কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে।

গত বুধবার ঢাকা সেনানিবাসে অফিসার্স অ্যাড্রেস অনুষ্ঠানে দেওয়া সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কিছু বক্তব্য জনসমক্ষে প্রকাশ পায়। তাতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান, তার মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠাসহ জাতীয় নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য ছিল। ক্ষোভ ও হতাশা থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস পদত্যাগ করতে চাইছেন, এমন খবর তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সারা দেশে। এ নিয়ে বিএনপিসহ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আলাপ-আলোচনা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগ করুন, কোনো দলই সেটা চায় না। তবে দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় চায়।