নূর হোসেন দিবস স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক
- আপডেট সময় : ০৮:৪৪:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪ ৫৬ বার পড়া হয়েছে
নব্বইয়ের গণ আন্দোলনে বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লিখে রাজপথে নেমে নূর হোসেন শহীদ হলেও সেই আন্দোলনের মূল দফাগুলো কোনো সরকারই বাস্তবায়িত করেনি ছবি: সংগৃহীত
স্বৈরাচার বিরোধী গণ আন্দোলন তখন তুঙ্গে। তৎকালীন এরশাদ সরকারের পতনের অপেক্ষায় সর্বস্তরের জনতা। সকাল-সন্ধ্যা রাজপথ কাঁপানো মিছিল-সমাবেশে উত্তপ্ত সারাদেশ।
সেই ঢাকার গুলিস্তান এলাকায় একটি বিক্ষোভ মিছিলের অগ্রভাগে ‘বুকে-পিঠে স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লেখা স্লোগান দিচ্ছেন টসবগে এক যুবক। নাম তার নূর হোসেন শহীদ।
সময়টা ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর। আজ শহীদ নূর হোসেন দিবস। গণতন্ত্রের জন্য নূর হোসেনের প্রাণ দেওয়ার তিন যুগ পরও গণতন্ত্রকামী মানুষকে রাস্তায় নামতে হয়েছে। সহস্র প্রাণের বিনিময়ে আরেক স্বৈরশাসনের অবসান ঘটাতে হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে শহীদ আবু সাঈদদের গণতন্ত্রের জন্য জীবনদানই কি শেষ? আবারও কি স্বৈরাচার ফিরে আসবে? এখন সর্বত্রই এই আলোচনা বিরাজমান।
ঢাকার নারিন্দায় এক অটোরিকশাচালকের ঘরে জন্ম নেওয়া নূর হোসেন ছিলেন সচেতন যুবক। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া শেষে নূর হোসেন গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ নেন।
জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে, ১৯৮৭ সালের এই দিনে নূর হোসেন বুকে ও পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান লিখে রাজপথে নেমে এসেছিলেন। ঢাকার জিরো পয়েন্ট অতিক্রম করার সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও গুলি ছুড়ে মিছিলটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখন নূর হোসেন ও আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।
নূর হোসেনের সেদিনের আত্মত্যাগ মানুষের মনকে নাড়া দিয়েছিল। বুকে-পিঠের স্লোগানসংবলিত তার শরীর হয়ে উঠেছিল আন্দোলনের প্রতীক। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আরও রক্তপাতের মধ্য দিয়ে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতন ঘটে।
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ নেয়। বিএনপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে। যে জায়গাটিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন নূর হোসেন, সেই জিরো পয়েন্ট এখন শহীদ নূর হোসেন চত্বর।
বিএনপি দিনটি পালন করে ঐতিহাসিক ১০ নভেম্বর দিবস হিসেবে। আর আওয়ামী লীগ দিনটি পালন করে আসছে নূর হোসেন দিবস হিসেবে।
১৯৮৭ থেকে ২০২৪ সাল সময়ের ব্যবধান ৩৭ বছর। গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে দুটি ছবি বেশ নাড়া দেয়। প্রথমটি ১৯৮৭ সালের বুকে ও পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান লিখে রাজপথে প্রাণ দেন নূর হোসেন।
সর্বশেষ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের। গত ১৬ জুলাই ফ্যাসিবাদী সরকারের পুলিশের সামনে বুক পেতে একের পর এক গুলি বুকে নিয়ে শহীদ হন আবু সাঈদ।