নিবন্ধন ছাড়াই পোশাক কারাখানায় টিকা কার্যক্রম শুরু

- আপডেট সময় : ১০:১৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুলাই ২০২১ ২১৪ বার পড়া হয়েছে
ফাইল ছবি
‘রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া টিকা কার্যক্রম চলবে সোমবার পর্যন্ত। প্রাথমিক পর্যায়ে ১০ হাজার পোশাক শ্রমিকদের টিকা দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সকল পোশাক শ্রমিকদের টিকার আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্যবিভাগ’
বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের সংখ্যা প্রায় ৪৫ লাখ। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে চালু হয়েছে ‘অ্যাকর্ড’, ‘অ্যালায়েন্স’ এবং ‘টেক্সটাইলস পার্টনারশিপ’ মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।

পোশাক শ্রমিকদের সুরক্ষায় আরও একধাপ এগিয়ে এলো হাসিনা সরকার। সরকারের তরফে ঘোষণা কোন রকমের নিবন্ধন ছাড়াই টিকা মিলবে পোশাক শ্রমিকদের। স্বাস্থ্য বিভাগের এই উদ্যোগে পোশাকশ্রমিকদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। তারা উৎফুল্ল। নিজেদের সুরক্ষায় সরকারের এই উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ গোটা পোশাকশ্রমিকরা। সেই সঙ্গে উদ্যোগক্তাদের মাঝেও স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
ঢাকা থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার উত্তরে গার্মেন্ট অধ্যূষিত এলাকা গাজীপুর জেলা। এখানের সিভিল সার্জন ডা. খায়রুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পোশাক শ্রমিকদের নিবন্ধন ছাড়াই টিকা দেবেন তারা। সরকারি সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে রবিবার থেকেই এ কার্যক্রম শুরু হয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের নির্দেশমতে শুরুতে গাজিপুর জেলার ‘তুসুকা
ডেনিম, তুসুকা ট্রাউজার, স্প্যারো অ্যাপারেলস ও রোজভ্যালি গার্মেন্টস লিমিটেড’ এই চারটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের টিকার আওতায় আনা হচ্ছে। এখানের ১০ হাজার শ্রমিককে দেওয়া হবে মডার্নার টিকা।
গাজিপুর সিভিল সার্জন ডা. খায়রুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানান, টিকা দিতে কারখানাগুলো থেকে তালিকা চাওয়া হয়। এরই মধ্যে ২৫ লাখ শ্রমিকের তালিকা পাওয়া গিয়েছে। তাদেরকে
নিবন্ধন ছাড়াই টিকা দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সকল শ্রমিকদের টিকার আওতায় আনা হবে। টিকা গ্রহণের সময় অবশ্যই শ্রমিকদেরকে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন সিভিল সার্জন।
গাজীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই সুপার আমজাদ হোসেন জানিয়েছেন, টিকার জন্য এসব কারখানা থেকে শ্রমিকদের নাম, বয়স, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বরের তথ্য
তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। রবিবার সকাল থেকেই নির্ধারিত চারটি কারখানায় গিয়ে তালিকা মিলিয়ে শ্রমিকদের টিকা কার্যক্রম শুরু হবে।
গাজিপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) যিনি জেলার করোনা নিয়ন্ত্রণ কমিটির আহ্বায়কও এস এম তরিকুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্মতিক্রমে রবিবার থেকেই
গাজীপুরের পোশাক কারখানার শ্রমিকদের টিকা কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। ঈদের আগে দু’দিন রবিবার ও সোমবার (১৮-১৯ জুলাই) এই দু’দিন কার্যক্রম চলবে। পরবর্তীতে অন্যান্য কারখানার শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।
গাজীপুর সিটি মেয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস এম তরিকুল ইসলাম এবং মহানগর পুলিশ কমিশনার রবিবার সকালে উপস্থিত থেকে কোনাবাড়ি এলাকার তুসুকা ডেনিম কারখানায় এ কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন।
‘ম্যাপড ইন বাংলাদেশের ২০২০ সালের তথ্য মতে ৩ হাজার ২২৩টি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যে বিজিএমইএর সদস্য ১ হাজার ৮৮৬টি। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকরা দীর্ঘদিন
ধরেই বলে আসছেন এ খাতে শ্রমিক সংখ্যা ৪০ থেকে ৪৫ লাখ। এর মধ্যে নারী শ্রমিক ৮০ শতাংশ। এমন দাবির সঙ্গে বর্তমানে বাস্তবতার মিল দেখা যাচ্ছে না। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার
ফর এন্ট্রাপ্রেনিওরশিপ ডেভেলপমেন্ট মাঠ পর্যায়ে তথ্য নিয়ে দেখেছে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পে নারী শ্রমিকের হার ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে এসেছে। আর পুরুষ শ্রমিকের হার প্রায় ৪২ শতাংশ’।