ঢাকা ০৩:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেড় যুগ ধরে সাপের ছোঁবল নিয়ে শরীরে তৈরি হয়েছে অ্যান্টিভেনম

ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:১৪:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫ ৭২ বার পড়া হয়েছে

গবেষণাগারে টিম ফ্রিড ছবি: সংগৃহীত

ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টিম ফ্রিড নামের এক ব্যক্তি প্রায় দুই দশক ধরে ইনজেকশনের মাধ্যমে নিজের শরীরে একটু একটু করে সাপের বিষ ঢুকিয়েছেন। বিভিন্ন প্রজাতির বিষ প্রতিরোধ করতে পারে। টিম ফ্রিডের বেলায় বিজ্ঞানীদের মন্তব্য তার রক্তে তুলনাহীন এক অ্যান্টিভেনম তৈরি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা প্রাণীর ওপর পরীক্ষা করে দেখেছেন, টিমের রক্তে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি প্রাণঘাতী মাত্রায় প্রয়োগ করা বিভিন্ন প্রজাতির বিষ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

বর্তমান চিকিৎসা পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট প্রজাতির বিষাক্ত সাপ কামড়েছে অ্যান্টিভেনমের সঙ্গে তার মিল থাকতে হয়। কিন্তু ১৮ বছর ধরে ফ্রিড যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তা সব ধরনের সাপের কামড়ের প্রতিষেধক হিসেবে একটি সর্বজনীন অ্যান্টিভেনম খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হতে পারে।

বিশ্বে প্রতিবছর সাপের কামড়ে ১৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। যার তিন গুণ মানুষ সাপের কামড় খেয়ে অঙ্গচ্ছেদ করতে বাধ্য হন বা স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন।

ফ্রিড এই সময়ে মোট ২০০ বারের বেশি কামড় খেয়েছেন এবং ইনজেকশনের মাধ্যমে ৭০০ বারের বেশি শরীরে বিষ ঢুকিয়েছেন। তিনি শরীরে যেসব বিষ প্রয়োগ করেছেন তার মধ্যে কেউটে, মাম্বাসহ বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী কয়েকটি সাপের বিষ তালিকায় রয়েছে।

সাপ ধরার সময় নিজের সুরক্ষার জন্য শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে ফ্রিড প্রাথমিকভাবে এ কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি নিজের এসব কার্যকলাপ ভিডিও করে তা ইউটিউবে পোস্ট করতেন।

তবে এ কাজ করতে গিয়ে শুরুতেই তাঁর প্রাণ যেতে বসেছিল, এমনটিই জানান সাবেক এই ট্রাক মেকানিক। ফ্রিড বলেন, পরপর দুটি কেউটের কামড় খাওয়ার ফলে তিনি অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে গিয়েছিলেন।

বিবিসিকে তিনি আরও বলেন, আমি মরে যেতে চাইনি। আমি আমার একটি আঙুল খোয়াতে চাইনি। আমি আমার কাজ হারাতে চাইনি।

ফ্রিডের লক্ষ্য ছিল বিশ্বের জন্য (সাপের কামড়ের) আরও ভালো চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়ন করা। কোথা থেকে এ কাজের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, এটা আমার রোজকার অভ্যাস হয়ে ওঠে এবং আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করতে থাকি, চেষ্টা করতে থাকি সেসব মানুষের জন্য যারা আমার থেকে আট হাজার মাইল দূরে থাকে, যারা সাপের কামড়ে মারা যায়।

বর্তমানে ঘোড়ার মতো প্রাণীর দেহে সাপের বিষ একটু একটু করে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করিয়ে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হয়। ওইসব প্রাণীর শরীরে থাকা প্রাকৃতিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ওই বিষের বিরুদ্ধে লড়াই করে অ্যান্টিভেনম তৈরি করে। পরে ওই সব প্রাণীর শরীর থেকে অ্যান্টিবডি নিয়ে তা অ্যান্টিভেনম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

দেড় যুগ ধরে সাপের ছোঁবল নিয়ে শরীরে তৈরি হয়েছে অ্যান্টিভেনম

আপডেট সময় : ০৮:১৪:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

টিম ফ্রিড নামের এক ব্যক্তি প্রায় দুই দশক ধরে ইনজেকশনের মাধ্যমে নিজের শরীরে একটু একটু করে সাপের বিষ ঢুকিয়েছেন। বিভিন্ন প্রজাতির বিষ প্রতিরোধ করতে পারে। টিম ফ্রিডের বেলায় বিজ্ঞানীদের মন্তব্য তার রক্তে তুলনাহীন এক অ্যান্টিভেনম তৈরি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা প্রাণীর ওপর পরীক্ষা করে দেখেছেন, টিমের রক্তে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি প্রাণঘাতী মাত্রায় প্রয়োগ করা বিভিন্ন প্রজাতির বিষ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

বর্তমান চিকিৎসা পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট প্রজাতির বিষাক্ত সাপ কামড়েছে অ্যান্টিভেনমের সঙ্গে তার মিল থাকতে হয়। কিন্তু ১৮ বছর ধরে ফ্রিড যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তা সব ধরনের সাপের কামড়ের প্রতিষেধক হিসেবে একটি সর্বজনীন অ্যান্টিভেনম খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হতে পারে।

বিশ্বে প্রতিবছর সাপের কামড়ে ১৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। যার তিন গুণ মানুষ সাপের কামড় খেয়ে অঙ্গচ্ছেদ করতে বাধ্য হন বা স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন।

ফ্রিড এই সময়ে মোট ২০০ বারের বেশি কামড় খেয়েছেন এবং ইনজেকশনের মাধ্যমে ৭০০ বারের বেশি শরীরে বিষ ঢুকিয়েছেন। তিনি শরীরে যেসব বিষ প্রয়োগ করেছেন তার মধ্যে কেউটে, মাম্বাসহ বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী কয়েকটি সাপের বিষ তালিকায় রয়েছে।

সাপ ধরার সময় নিজের সুরক্ষার জন্য শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে ফ্রিড প্রাথমিকভাবে এ কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি নিজের এসব কার্যকলাপ ভিডিও করে তা ইউটিউবে পোস্ট করতেন।

তবে এ কাজ করতে গিয়ে শুরুতেই তাঁর প্রাণ যেতে বসেছিল, এমনটিই জানান সাবেক এই ট্রাক মেকানিক। ফ্রিড বলেন, পরপর দুটি কেউটের কামড় খাওয়ার ফলে তিনি অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে গিয়েছিলেন।

বিবিসিকে তিনি আরও বলেন, আমি মরে যেতে চাইনি। আমি আমার একটি আঙুল খোয়াতে চাইনি। আমি আমার কাজ হারাতে চাইনি।

ফ্রিডের লক্ষ্য ছিল বিশ্বের জন্য (সাপের কামড়ের) আরও ভালো চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়ন করা। কোথা থেকে এ কাজের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, এটা আমার রোজকার অভ্যাস হয়ে ওঠে এবং আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করতে থাকি, চেষ্টা করতে থাকি সেসব মানুষের জন্য যারা আমার থেকে আট হাজার মাইল দূরে থাকে, যারা সাপের কামড়ে মারা যায়।

বর্তমানে ঘোড়ার মতো প্রাণীর দেহে সাপের বিষ একটু একটু করে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করিয়ে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হয়। ওইসব প্রাণীর শরীরে থাকা প্রাকৃতিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ওই বিষের বিরুদ্ধে লড়াই করে অ্যান্টিভেনম তৈরি করে। পরে ওই সব প্রাণীর শরীর থেকে অ্যান্টিবডি নিয়ে তা অ্যান্টিভেনম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।