ঢাকা ০৮:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুস ফ্যাক্টরির আগুনে পুড়ে মৃত ৩ বহু আহত

ভয়েস রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ১১:৫৯:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুলাই ২০২১ ২৪৬ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছবি সংগ্রহ

‘১৭ ঘন্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন, ফায়ার সার্ভিসের তরফে বলা হচ্ছে কারখানাটিতে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগছে’

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় একটি জুস ফ্যাক্টরীতে লাগা আগুন ১৭ ঘন্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগার কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন লাগার সময় কারখানার ভেতরে বহু শ্রমিক-কর্মচারী আটকা পড়ে। অনেকে জীবন বাচাতে নীচে লাফিয়ে পড়ে আহত হন। কারখানার ভেতরে কতজন আটকা পড়েছে সেই তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।

এখনও পর্যন্ত আগুনে পুড়ে মিনা আক্তার (৪০), স্বপ্না রানী (৩৩) এবং মোরছালিন (২৮) তিনজন মারা গিয়েছেন। বহুজন আহত হয়েছেন।

 

জানা গিয়েছে, ৬ষ্ঠ তলা ভবনের চার তলায় বিস্কুটের কারখানায় সকাল থেকে কাজ করছিলেন ৪৭ নারী শ্রমিক। বিকেলে আগুন লাগার পর ভেতর থেকে শ্রমিকদের কাজ করতে তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় কেউ বের হতে পারেনি বলে অভিযোগ স্বজনদের। নিখোঁজদের স্বজনরা জানান, সন্ধ্যার পর থেকে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেনা।

নিখোঁজ রয়েছেন অনেক শ্রমিক। কারখানার পাশে স্বজনদের আহাজারিতে সেখানের বাতাস ভারী হয়ে ওঠেছে। তাছাড়া বহু শ্রমিক আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ঢাকা থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে শিল্পাঞ্চল রূপগঞ্জ। এখানের হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজ কোম্পানির কারখানায় আগুন লাগে বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচাটা নাগাদ। কারখানাটির ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় আগুন জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৭ ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজে করে চলেছে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, ১৭ ঘন্টা চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রের খবর, তৃতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে ৬তলা ভবনজুড়ে। তখন ভবনের বিভিন্ন তলায় কর্মচারী ও কর্মকর্তারা আটকা পড়েন। কেউ কেউ প্রাণ বাঁচাতে লাফিয়ে নিচে পড়ে আহত হয়। বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগছে।

পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা উদ্দীপন বলেন, আগুন লাগার ৩০ মিনিটের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করেন। কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করছে। তিনি জানান, ফ্যাক্টরির ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনের তৃতীয় তলা থেকে গ্যাস লাইন লিকেজ কিংবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা ভবনের সকল ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে কাঞ্চন, পূর্বাচল, ডেমরা, আড়াইহাজার এবং আদমজী ফায়ার সার্ভিসের ১৭ ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এ সময় মহাসড়কের উভয়পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া আগুনে নিহতের ঘটনায় আতংকিত হয়ে শ্রমিকরা দ্বিকবিদিক ছুটোছুটি করতে গিয়েও অনেকে আহত হন।

আগুন লাগার বিষয়ে সেজান জুস ফ্যাক্টরির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কারখানার গ্যাস লাইন লিকেজ কিংবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে। ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা যায়নি। কারাখানায় কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের সবাই বেড়িয়ে আসতে পারছে কিনা সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি এই কর্মকর্তা।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৭ টি ইঞ্জিন কাজ করে। আগুনে আটকে পড়া ভবনের ছাদ থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১২ জন শ্রমিককে উদ্ধার করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

জুস ফ্যাক্টরির আগুনে পুড়ে মৃত ৩ বহু আহত

আপডেট সময় : ১১:৫৯:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুলাই ২০২১

ছবি সংগ্রহ

‘১৭ ঘন্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন, ফায়ার সার্ভিসের তরফে বলা হচ্ছে কারখানাটিতে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগছে’

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় একটি জুস ফ্যাক্টরীতে লাগা আগুন ১৭ ঘন্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগার কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস। আগুন লাগার সময় কারখানার ভেতরে বহু শ্রমিক-কর্মচারী আটকা পড়ে। অনেকে জীবন বাচাতে নীচে লাফিয়ে পড়ে আহত হন। কারখানার ভেতরে কতজন আটকা পড়েছে সেই তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।

এখনও পর্যন্ত আগুনে পুড়ে মিনা আক্তার (৪০), স্বপ্না রানী (৩৩) এবং মোরছালিন (২৮) তিনজন মারা গিয়েছেন। বহুজন আহত হয়েছেন।

 

জানা গিয়েছে, ৬ষ্ঠ তলা ভবনের চার তলায় বিস্কুটের কারখানায় সকাল থেকে কাজ করছিলেন ৪৭ নারী শ্রমিক। বিকেলে আগুন লাগার পর ভেতর থেকে শ্রমিকদের কাজ করতে তালা ঝুলিয়ে দেয়ায় কেউ বের হতে পারেনি বলে অভিযোগ স্বজনদের। নিখোঁজদের স্বজনরা জানান, সন্ধ্যার পর থেকে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেনা।

নিখোঁজ রয়েছেন অনেক শ্রমিক। কারখানার পাশে স্বজনদের আহাজারিতে সেখানের বাতাস ভারী হয়ে ওঠেছে। তাছাড়া বহু শ্রমিক আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ঢাকা থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে শিল্পাঞ্চল রূপগঞ্জ। এখানের হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজ কোম্পানির কারখানায় আগুন লাগে বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচাটা নাগাদ। কারখানাটির ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় আগুন জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৭ ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজে করে চলেছে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, ১৭ ঘন্টা চেষ্টা করেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রের খবর, তৃতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে ৬তলা ভবনজুড়ে। তখন ভবনের বিভিন্ন তলায় কর্মচারী ও কর্মকর্তারা আটকা পড়েন। কেউ কেউ প্রাণ বাঁচাতে লাফিয়ে নিচে পড়ে আহত হয়। বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগছে।

পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা উদ্দীপন বলেন, আগুন লাগার ৩০ মিনিটের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করেন। কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করছে। তিনি জানান, ফ্যাক্টরির ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনের তৃতীয় তলা থেকে গ্যাস লাইন লিকেজ কিংবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা ভবনের সকল ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে কাঞ্চন, পূর্বাচল, ডেমরা, আড়াইহাজার এবং আদমজী ফায়ার সার্ভিসের ১৭ ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এ সময় মহাসড়কের উভয়পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া আগুনে নিহতের ঘটনায় আতংকিত হয়ে শ্রমিকরা দ্বিকবিদিক ছুটোছুটি করতে গিয়েও অনেকে আহত হন।

আগুন লাগার বিষয়ে সেজান জুস ফ্যাক্টরির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কারখানার গ্যাস লাইন লিকেজ কিংবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে। ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা যায়নি। কারাখানায় কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের সবাই বেড়িয়ে আসতে পারছে কিনা সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি এই কর্মকর্তা।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৭ টি ইঞ্জিন কাজ করে। আগুনে আটকে পড়া ভবনের ছাদ থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১২ জন শ্রমিককে উদ্ধার করেছে।